ঘোষণার চেয়ে দ্বিগুণ পোশাক এল বন্দরে

43

চট্টগ্রাম বন্দরে ঘোষণার চেয়ে দ্বিগুণের বেশি পোশাক সামগ্রী এলো দুবাই থেকে। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ঢাকার চৌধুরী ট্রেডার্স এসব পোশাক নিয়ে আসে। চালান ছাড়করণে দায়িত্বে ছিল আগ্রাবাদ এলাকার ইউনি বাংলা লিমিটেড। কাস্টমসের এআইআর শাখার কর্মকর্তারা চালানে সন্দেহ থাকায় পণ্যটির শতভাগ কায়িক পরীক্ষায় এসব অনিয়মের সন্ধান পেয়েছেন। চালানে প্রায় ৭০ লাখ টাকা শুল্ক ফাঁকির চেষ্টা করেছিল আমদানিকারক ও সিএন্ডএফ।
কাস্টমস সূত্র জানায়, ৭ হাজার ৪১ কেজি ঘোষণায় আনা চালানে অতিরিক্ত পাওয়া যায় ৯ হাজার ৪৬৯ কেজি পণ্য। যা ঘোষণার তুলনায় ১৩৪ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে ঘোষণা বহির্ভূত মেন্স কুর্তা নামের ১৮৭ কেজির একটি প্যাকেটও পাওয়া যায়। বাকি পণ্য ঘোষণায় থাকলেও ওজনে দ্বিগুণের চেয়ে বেশি পাওয়া গেছে। চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের অডিট ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) শাখার কর্মকর্তারা ঘোষণা করা চালানে সন্দেহ থাকায় পণ্যটি শতভাগ কায়িক পরীক্ষায় এসব অনিয়মের সন্ধান পান।
বিষয়টি আরও তদন্ত শেষে সংশ্লিষ্ট আমদানিকারক ও সিএন্ডএফ এজেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে। এছাড়া ৩ হাজার ৪০৪ ডলার দিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ৭ হাজার ৪১ কেজি বালিশ কাভার, কামিজ, জামা-কাফতান এসব আমদানির করার কথা ছিল। আমদানিকারক ঘোষণা দেওয়া পণ্য আনলেও পরিমাণে অতিরিক্ত রয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। এতে বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৭০ লাখ টাকা শুল্ক ফাঁকি হয়েছে বলে ধারণা করছেন কাস্টমস কর্মকর্তারা।
এদিকে ২০১৯ সালের ১১ ফেব্রূয়ারি কাস্টমস হাউসে বিল অফ এন্ট্রি (সি নম্বর ২৭৯৩৫২) দাখিল করা হয়। আমদানিকারক ঢাকার মেসার্স চৌধুরী ট্রেডার্সের পক্ষে ওই চালান ছাড়ের জন্য বিল অফ এন্ট্রি দাখিল করে আগ্রাবাদ এলাকার সিএন্ডএফ এজেন্ট ইউনি বাংলা লিমিটেড। দুবাইয়ের তাসমিনা শাল ট্রেডিং লিমিটেড কোম্পানি থেকে এ পণ্য আমদানি করা হয়। চালানটি ‘এমভি এক্সপ্রেস কোহিমা’ জাহাজে চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। আমদানিকারক কোম্পানি স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড থেকে (১৯১৮০১০১৩৯ নম্বর) এলসি করে। ১০ ফেব্রূয়ারি এআইআর শাখা কর্তৃক কায়িক পরীক্ষার তারিখ থাকলেও গত মঙ্গলবার কায়িক পরীক্ষা করা হয়। এতে অতিরিক্ত পণ্য নিয়ে আসার তথ্য পাওয়া যায়। চালানের বিল অফ এন্ট্রি দাখিলের পর সন্দেহ থাকায় চালানটি কাস্টমসের বিশেষায়িত সফটওয়্যার অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ডে ‘লক’ করে তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় এআইআর শাখাকে।
এ বিষয়ে কাস্টমসের সহকারী কমিশনার নুর এ হাসনা সানজিদা অনসূয়া বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে চালানটি লক করা হয়েছিল। শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করার পর অনিয়মের বিষয়টি স্পষ্ট হয়। এর জন্য জরিমানা গুণতে হবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে। সেই সাথে অতিরিক্ত পণ্যের উপর শুল্কও দিতে হবে। আর জড়িতদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা দায়ের হবে।