গ্রেটার নামে পোকার নাম

37

পরিবেশ আন্দোলনের কর্মী গ্রেটা থানবার্গের নাম এখন গোটা বিশ্ববাসীরই জানা, সুইডিশ এই কিশোরীর নাম এখন অক্ষয় হতে চলেছে ব্রিটিশ বিজ্ঞানীদের এক পদক্ষেপে। গ্রেটা থানবার্গের নামে ক্ষুদ্রাকায় একটি পোকার নামকরণের সিদ্ধান্ত লন্ডনের নেচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম নিয়েছে বলে খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের ডেইলি মেইল। জলবায়ু পরিবর্তন রোধে গ্রেটা থানবার্গের কাজের স্বীকৃতি হিসেবে এই নামকরণের সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন জাদুঘরের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মাইকেল ডার্বি। ব্রিটিশ প্রকৃতিবিজ্ঞানী উইলিয়াম ব্লক ১৯৬৫ সালে কেনিয়ায় এই গুবরে পোকাটি আবিষ্কার করলেও এতদিন এর কোনো নাম দেওয়া হয়নি। ১৯৭৮ সাল থেকে পোকাটি নেচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামে রয়েছে। পোকাটির বৈশিষ্ট্য জানিয়ে ডেইলি মেইল লিখেছে, এটি মাত্র এক ইঞ্চি লম্বা, এর কোনো চোখ নেই, নেই কোনো ডানাও। এর মাথায় রয়েছে একটি অ্যান্টেনা।
নামকরণের বিষয়ে ড. ডার্বি বলেন, “আমি এই কিশোরীর কাজে অভিভূত, তাই পোকাটির নাম দেওয়ার ক্ষেত্রে তার নাম বেছে নিয়েছি। এবং এর মাধ্যমে আমি তার অভাবনীয় কাজের স্বীকৃতি দিতে চাই।” জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকাতে বিশ্ববাসীকে সচেতন করে তুলতে কাজ করছেন গ্রেটা; তার ডাকে সারাবিশ্বের মানুষ নামছে পথে। এজন্য এবার নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্যও মনোনীত হয়েছিল এই স্কুলছাত্রীর নাম। জাদুঘরের জ্যেষ্ঠ কিউরেটর ড. ম্যাক্স ব্রাকলি বলেন, গ্রেটা বিশ্বের প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষায় কাজ করছেন, তার কাজ চীব বৈচিত্র্য রক্ষার ক্ষেত্রেও অবদান রাখছে। তাই তার নামে ঝুঁকিতে থাকা একটি জীবের নামকরণ যৌক্তিক বলা যায়।

নোংরা তেল-জলে মাখামাখি
কিশোরের ছবি ভাইরাল

ব্রাজিলের সাগরে ছড়িয়ে পড়া তেল অপসারণে স্বেচ্ছাসেবকের কাজ করছিলেন ১৩ বছর বয়সী কিশোর এভারটন মিগুয়েল দোস অ্যাঞ্জোস। এসময় নোংরা তেল-জলে তার শরীর মাখামাখি হয়ে যায়। আর এ অবস্থায় তার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যা থেকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে ব্রাজিলিয়ান কিশোর অ্যাঞ্জোস। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ওই ছবিতে দেখা যায়, তেল অপসারণের কাজ করতে গিয়ে কোমর পর্যন্ত কালো পানিতে ময়লা হয়ে গেছে অ্যাঞ্জোসের শরীর। ময়লা তেলে কাপড়-চোপড়, এমনকি শরীরের চামড়া হয়ে গেছে বিবর্ণ।


চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে বিপুল পরিমাণ তেল পড়ে দূষিত হয়েছে ব্রাজিলের উত্তরপূর্বাঞ্চলের সাগরেরর পানি। তবে কী কারণে অপরিশোধিত তেল সাগরে ছড়িয়ে পড়েছে তা সঠিকভাবে জানা যায়নি। গত ২১ অক্টোবর ব্রাজিলের উপকূলীয় শহর ক্যাবো দি সান্তো আগস্তিনহোর ইতাপুয়ামা সৈকতে তেল অপসারণের কাজ করছিল অ্যাঞ্জোস। সঙ্গে ছিল তার চার ভাইসহ বেশ কয়েকজন আত্মীয়-স্বজন। সেদিন স্বেচ্ছাসেবকের কাজ করছিলেন প্রায় কয়েকশ’ মানুষ। তারা সাগরের তীর ও পাথর থেকে তেল অপসারণ করছিলেন।
সাগরের পানিতে নামার সময় অ্যাঞ্জোস টি-শার্ট পরিহিত ছিলেন। কিন্তু পানি অতিরিক্ত নোংরা হওয়ায় টি শার্টের উপর বড় একটি প্লাস্টিকের ব্যাগ কেটে পরে নেয় অ্যাঞ্জোস। এদিকে ভাইরাল হওয়া এ ছবির চিত্রগ্রাহককে অ্যাঞ্জোস জানায়, নোংরা তেল-জলে মাখামাখি ছবিটি দেখে বকেছে তার মা। সে জানায়, সাগরের তীর পরিষ্কার করতে চাইলে মা রাজি হয়। কিন্তু শর্ত ছিল, শরীরে ময়লা লাগানো যাবে না। ওই ছবি তোলার চারদিন পর অর্থাৎ ২৫ অক্টোবরের মধ্যে অনেকটাই পরিষ্কার হয়ে গেছে সাগরের পানি। আর স্বেচ্ছাসেবী ছাড়া সমুদ্রের পানি পরিষ্কার করতে সেনাবাহিনী এখন একাই কাজ করছে।
গত ৩০ আগস্ট ব্রাজিলের উত্তরপূর্ব উপকূলীয় শহর পারাইবার সাগরে তেল পড়ে। যা দুই হাজার ২৫০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। দুই মাস আগে তেল পড়ার পর এখন পর্যন্ত সাগরের পানি থেকে এক হাজার টন তেল অপসারণ করা হয়েছে। তেল পড়ার কারণে সাগরের পানি ব্যাপকভাবে দূষিত হয়ে গেছে। বিপর্যস্ত হয়েছে পর্যটন নির্ভর শহরগুলো। প্রায় দুইশ’ উপকূলীয় নগর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরিবেশবাদীদের অভিযোগে, সরকার এই সংকট মোকাবিলায় খুব ধীরে কাজ করছে। ব্রাজিলের উত্তরপূর্বাঞ্চলের শহরগুলোর পরিবেশ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারা বলছেন, এটা এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় পরিবেশ দুর্যোগ। সরকার এখনো যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
অন্যদিকে, তেল পড়ার ঘটনায় ভেনিজুয়েলাকে দায়ী করেছেন ব্রাজিলের প্রধানমন্ত্রী জেইর বলসোনারো। তবে কীভাবে তারা দায়ী সে বিষয়ে বিস্তারিত কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।

চীনের কাছে ৩০ হাতির
বাচ্চা বিক্রি জিম্বাবুয়ের!

আফ্রিকার দেশ জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে চীনের কাছে ৩০টি হাতির বাচ্চা বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। তবে দেশটির জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষ বলছে, খরায় আক্রান্ত অন্য প্রাণীদের বাঁচাতে প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহের জন্যই এমন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে তারা। কেননা, তীব্র খরায় ইতোমধ্যেই ৫৫টি হাতি মারা গেছে। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানিয়েছে, বিক্রিত হাতিগুলোর বয়স দুই থেকে ছয় বছরের মধ্যে। এ ঘটনায় প্রাণী অধিকার সংগঠনগুলোর সমালোচনার মুখে পড়েছে জিম্বাবুয়ে। সমালোচকরা বলছেন, এভাবে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা নিরপরাধ প্রাণীগুলোর ওপর মানসিক আঘাতের শামিল। পরিবেশ সংস্থা অ্যাডভোকেট ফর আর্থের পরিচালক লেনিন চিসাইরা বলেন, এ ধরনের ক্ষেত্রে চিড়িয়াখানায় স্থানান্তরের রীতি থাকলেও এক্ষেত্রে প্রাণীগুলোকে নিষ্ঠুরভাবে দেশের বাইরে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।


এদিকে হাতি বিক্রির টাকা দিয়ে পানির কূপ খনন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় উদ্যানের মুখপাত্র তেনাশি ফারাও। তিনি জানান, এর ফলে খরার সময় অন্য বন্যপ্রাণীগুলোকেও সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব হবে।
স¤প্রতি ভিক্টোরিয়া ফলসে আয়োজিত আফ্রিকান ইউনিয়ান/ ইউনাইটেড নেশনস ওয়াইল্ডলাইফ সামিটে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে হাতির বিষয়ে কথা বলেন জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট এমারসন ম্যানানগাগওয়া। তিনি বলেন, বর্তমানে জিম্বাবুয়েতে হাতির সংখ্যা ৮৫ হাজার। কিন্তু মাত্র ৫০ হাজার হাতির বসবাসের মতই রসদ রয়েছে সরকারের কাছে। তাই সরকার প্রতিবেশী বা বিশ্বের যে কোনও রাষ্ট্রের কাছে হাতি বিক্রি করতে বা দান করতে প্রস্তুত। কারণ অতিরিক্ত ৩৫ হাজার রক্ষণাবেক্ষণের মতো অবস্থা সরকারের নেই।
এমারসন ম্যানানগাগওয়া বলেন, অস্থির পরিস্থিতে থেকে নিজেদের বাঁচাতে বন্যপ্রাণীরা দক্ষিণ দিকে সরে এসেছে। এর জেরে হাতি ও বুনো মহিষের দলের সঙ্গে বর্তমানে এলাকা দখলের লড়াই শুরু হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতেই বিশ্বের কাছে হাতি কেনার মানবিক আবেদন জানাতে বাধ্য হয়েছে সরকার। জিম্বাবুয়ে বলছে, অতিরিক্ত হাতি মেরে ফেলার পরিবর্তে রফতানি করাই ভালো। এ থেকে উপার্জিত অর্থ বরং জাতীয় উদ্যান পরিচালনায় ব্যয় করা যায়। তাছাড়া, এতে হাতির সংখ্যা অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়াও ঠেকানো যাবে।