গ্রিসের পার্লামেন্টে অনুমোদন মেসিডোনিয়ার নতুন নাম

48

দীর্ঘ বিতর্ক ও রাজনৈতিক টানাপোড়েনের পর প্রতিবেশি দেশ মেসিডোনিয়ার নতুন নাম অনুমোদন করেছে গ্রিসের পার্লামেন্ট। শুক্রবারের এই অনুমোদনের ফলে মেসিডোনিয়ার পার্লামেন্টে আগেই অনুমোদন পাওয়া দেশটির নতুন নাম গণপ্রজাতন্ত্রী উত্তর মেসিডোনিয়াকে স্বীকৃতি দিলো গ্রীস। দুই দেশের পার্লামেন্টের অনুমোদন পেলেও মেসিডোনিয়া এখনই আনুষ্ঠানিকভাবে তা ব্যবহার করতে পারছে না বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। জাতিসংঘ ও ন্যাটোর অনুমোদনের পরেই সে সুযোগ পাবে তারা। কাতারভিত্তিক আল জাজিরা লিখেছে, এই অনুমোদনের মাধ্যমে ইউরোপের সবচেয়ে অদম্য এক বিরোধের অবসান ঘটালো এথেন্স ও স্কোপজে।
সাবেক যুগো স্লাভিয়া ভেঙ্গে ১৯৯১ সালে মেসিডোনিয়া আলাদা রাষ্ট্র হওয়ার সময় থেকেই গ্রীসের সঙ্গে নাম নিয়ে বিরোধ শুরু হয়। গ্রিসের উত্তরাঞ্চলীয় একটি রাজ্যের নাম মেসিডোনিয়া হওয়ায় প্রতিবেশটি দেশটির নাম নিয়ে আপত্তি ছিলো তাদের। একারণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটো জোটে মেসিডোনিয়াকে অন্তর্ভুক্ত করতে আপত্তি জানিয়ে আসছিল গ্রিস। বিরোধ নিরসনে গত বছরের জুনে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী এক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। মেসিডোনিয়ার পার্লামেন্ট নাম পরিবর্তনের ওই চুক্তি অনুমোদন করলেও রাজনৈতিক জটিলতায় পড়েন গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সিস সিপ্রাস। দুই দেশের মধ্যে চুক্তিতে উত্তর মেসিডোনিয়ার সঙ্গে প্রাচীন গ্রিক সভ্যতার কোনও সম্পর্ক না থাকার কথা স্পষ্ট করা হলেও তা মানতে অস্বীকৃতি জানান প্রধানমন্ত্রী সিপ্রাসের জোটসঙ্গী ইন্ডিপেন্ডেন্ট গ্রিক পার্টি।
পার্টির প্রধান প্যানোস ক্যামেনোস সিপ্রাসের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নিলে পার্লামেন্টে আস্থা ভোটের ডাক দেন প্রধানমন্ত্রী। গত বুধবার সেই ভোটে টিকে যান সিপ্রাস। শুক্রবার চুক্তি অনুমোদনের দিনেও পার্লামেন্টের বাইরে বিক্ষোভ করেছে গ্রিসের হাজার হাজার অধিবাসী।

মেসিডোনিয়া নামের দেশটি ঐতিহাসিক ঐতিহ্য কেড়ে নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা এসব বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে গত সোমবারও রাজধানী এথেন্সে পুলিশের সংঘর্ষ হয়।
তা সত্তে¡ও শুক্রবার গ্রিসের ৩০০ আসনের পার্লামেন্টে চুক্তি অনুমোদনের পক্ষে ভোট দেন দেন ১৫৩ আইনপ্রণেতা আর বিপক্ষে ভোট দেন ১৪৬ জন। আর ভোটদানে বিরত ছিলেন একজন। পার্লামেন্টে চুক্তি অনুমোদনের পর দিনটিকে ঐতিহাসিক বলে আখ্যা দেন গ্রিক প্রধানমন্ত্রী সিপ্রাস। তিনি বলেন, ‘উত্তর মেসিডোনিয়ার জন্ম হলো’।
বিবিসি লিখেছে, গ্রিক প্রধানমন্ত্রী উত্তর মেসিডোনিয়ার জন্ম ঘোষণা করলেও আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন নাম ঘোষণা করতে সময় লাগবে। মেসিডোনিয়ার কর্মকর্তারা ন্যাটো জোটে অন্তর্ভুক্তকরণ চুক্তি গ্রিস অনুমোদন করার পরই নতুন নাম ব্যবহার করা যাবে। আশা করা হচ্ছে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই অনুমোদন পাবে এই চুক্তি। তবে তার আগেই উত্তর মেসিডোনিয়া নামটি আনুষ্ঠানিকতা পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। স্কোপজে সরকার দুই দেশের পার্লামেন্টে নতুন নাম অনুমোদনের বিষয়টি জাতিসংঘকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানোর পরই সেই আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে।