গৃহস্থালিতে গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে রাজপথে আন্দোলনের হুমকি দেওয়া হয়েছে ঢাকায় এক কর্মসূচি থেকে। গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘প্রতিবাদী নাগরিক’দের অবস্থান কর্মসূচি থেকে সরকারকে এই হুমকি দেওয়া হয়। এই কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন কলামনিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম এম আকাশ।
আবুল মকসুদ বলেন, অন্যায্যভাবে, রান্না করার গ্যাসের দাম বাড়ানোর চেষ্টা করছে সরকার। যদি গ্যাসের দাম বাড়ানোর সরকারের এ্ই চেষ্টা অব্যাহত থাকে, তবে এর বিরুদ্ধে আরও বড় কর্মসূচি দেওয়া হবে।
গ্যাসের দাম নিয়ে বিইআরসি যে গণশুনানির উদ্যোগ নিয়েছে, তাতে গৃহস্থালিতে দুই চুলার গ্যাসের মাসিক বিল ৮০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২০০ টাকা করার পাঁয়তারা করা হচ্ছে বলে দাবি করেন সমাবেশের বক্তারা।
গ্যাসের দাম এখনই ‘অনেক বেশি’ দাবি করে মকসুদ বলেন, মানুষ এখন গ্যাসের যে দাম দিচ্ছে, তার অর্ধেক ব্যবহার করতে পারছে। মানুষ টাকা দিচ্ছে কিন্তু গ্যাস পাচ্ছে না। আমি আমার নিজের বাড়িতে দেখেছি, ধানমন্ডি এলাকায়, সেখানে ভাত রান্না যায়, তরকারি রান্না করা যায় না। খবর বিডিনিউজের
কর্মসূচিতে ঢাকার বিভিন্ন এলাকার কয়েকজন তাদের ঘরের চুলায় গ্যাস না পাওয়ার কথা জানান।
অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, তেলের দাম থেকে সরকার মুনাফা করে। সরকার বলে, মুনাফা দিয়ে গ্যাস খাতের উন্নয়ন করবে। গ্যাস উন্নয়ন তহবিল তৈরি করবে। আমরা জানি জ্বালানি উন্নয়ন তহবিল একটা আছে। কিন্তু এই তহবিল ব্যবহার করা হয়নি। গ্যাস উন্নয়নের জন্য করতে গিয়ে এই তহবিলে নয়-ছয় হচ্ছে।
বাপেক্সকে বাদ দিয়ে বিদেশি কোম্পানিকে গ্যাস অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়ার বিরোধিতা করে তিনি বলেন, ২০০৯ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত বাপেক্স ছয়টি কূপ এবং ৯টি উন্নয়ন কূপ খনন করেছে। তারপরে এক বিদেশি কোম্পানিকে খননের জন্য দেওয়া হল। দেখা গেল, তারা তিন গুণ বেশি খরচ করল। এই দুর্নীতির ঘানি কেন আমরা টানবো?
কর্মসূচিতে সিপিবি নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদ নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, সিপিবি নেতা হাসান তারিক চৌধুরী সোহেল ও লুনা নূর বক্তব্য রাখেন।
তারা গ্যাসের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা বাদ দেওয়ার পাশাপাশি জ্বালানি খাতের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের শাস্তি দেওয়া ও দেশের শতভাগ মালিকানা নিশ্চিত করে সমুদ্র বক্ষের গ্যাস উত্তোলনের পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।