গণমাধ্যম আইন সহসাই মন্ত্রিসভায় যাবে : তথ্যমন্ত্রী

36

হুটহাট চাকরিচ্যুতি, নিয়মিত বেতন না হওয়া, চাকরির সুরক্ষা না থাকাসহ গণমাধ্যমকর্মীদের বিভিন্ন সমস্যার কথা তথ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নেতারা। সংগঠনটির নতুন কার্যনির্বাহী কমিটির নেতারা গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে গণমাধ্যমের ‘সঙ্কট’ এবং নিজেদের দাবি-দাওয়া নিয়ে কথা বলেন।
ডিআরইউ’র সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরী বলেন, যখন-তখন সাংবাদিকদের চাকরি চলে যাচ্ছে। অনেক মাস বেতন হয় না। (গণমাধ্যমগুলোতে) অস্তিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
সাংবাদিকদের চাকরির নিশ্চয়তা ‘প্রায় শূন্যের কোঠায়’ নেমে গেছে মন্তব্য করে ডিআরইউ’র সহ-সভাপতি নজরুল কবীর সাংবাদিকদের সুরক্ষার দাবি জানান।
তিনি বলেন, সাংবাদিক না খেয়ে থাকলে, চাকরির নিশ্চয়তা না থাকলে এর থেকে বেদনার কিছু হতে পারে না।
ডিআরইউ’র সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ তথ্যমন্ত্রীকে বলেন, আগামী ১১ ফেব্রæয়ারি সাগর-রুনি হত্যার আট বছর পূর্ণ হবে। তার আগে আপনি খবর নেন এই মামলার কী অবস্থা, আমরা প্রত্যাশার কথা শুনতে চাই।
ঢাকার প্রতিবেদকদের এ সংগঠনের কিছু সদস্যকে আইসিটি আইনের মামলায় ‘জড়ানো হয়েছে’ মন্তব্য করে এর প্রতিকারের জন্যও তথ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন আজাদ। খবর বিডিনিউজের
ডিআরইউ নেতারা তাদের সদস্যদের প্রশিক্ষণসহ সংগঠনটির উন্নয়নে তথ্যমন্ত্রীর সহযোগিতা চান। সবার বক্তব্য শুনে তথ্যমন্ত্রী তাদের দাবি-দাওয়া পূরণের আশ্বাস দেন। যৌথভাবে প্রশিক্ষণের আয়োজন করা যেতে পারে বলেও তিনি মত দেন।
এখন দেশে ‘কয়েক হাজার’ অনলাইন পত্রিকা রয়েছে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, আজকাল প্রচুর গণমাধ্যম হওয়ার কারণে, বিশেষ করে অনলাইন, সেগুলোর কারণে দেখা যাচ্ছে অনেকেই যারা সত্যিকার অর্থে সাংবাদিক হওয়ার মত যোগ্যতা রাখেন না, তারা অনেকে সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিচ্ছে, বিশেষ করে অনলাইনের ক্ষেত্রে এগুলো হচ্ছে, সেখানে ব্যাপক প্রশিক্ষণের প্রয়োজন।
মন্ত্রী বলেন, আসলে তারা সাংবাদিক নয়, কিন্তু একটা অনলাইন খুলে বসে একটা কার্ড বানিয়ে সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিচ্ছে। গুটি কয়েকজনের জন্য বৃহত্তর সাংবাদিক পরিবারের বদনাম হয়। এটা যাতে না হয়, তার একটি উপায় সমন্বিতভাবে সবাইকে খুঁজে বের করতে হবে।
অনলাইন সংবাদপত্রের নিবন্ধন দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, একটি সংস্থার তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। আরেকটি সংস্থার কাছ থেকে প্রতিবেদন পেলে নিবন্ধন দেওয়া শুরু হবে।
নিবন্ধন দেওয়া হলে ভূঁইফোড় অনলাইন স্বাভাবিকভাবেই বন্ধ হয়ে যাবে। সত্যিকার অর্থে অনলাইন হিসেবে সংবাদ পরিবেশনের জন্য নয়, ভিন্ন উদ্দেশ্যে যেগুলো খোলা হয়েছে সেগুলোর ডোমেইন বন্ধ করে দেব।
অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে মামলার বাধা পেরিয়ে সরকার সংবাদপত্রের কর্মীদের জন্য নবম ওয়েজবোর্ড ঘোষণা করলেও কোনো পত্রিকাই যে এখনও তা বাস্তবায়ন করেনি, সে বিষয়ে তথ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন একজন সাংবাদিক প্রতিনিধি।
উত্তরে হাছান মাহমুদ বলেন, আমি আশা করব সংবাদপত্রের মালিক বা পরিচালনা পক্ষ সহসা ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন করবে। কারণ ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন করলে সেখানে যারা কাজ করে শুধু তারাই লাভবান হবে না, প্রকৃতপক্ষে পুরো সংবাদপত্র পরিবার লাভবান হবে। এতে করে সাংবাদিকরা কাজ করতে উৎসাহ বোধ করবেন।
গণমাধ্যমকর্মী আইনের খসড়ার ভেটিং আইন মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত করে ফেলেছে জানিয়ে হাছান বলেন, সহসাই এটি মন্ত্রিসভায় পাঠানো হবে। এ আইন পাস হলে গণমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত সবার আইনি সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব হবে।
আর সাগর-রুনি হত্যার বিচার নিয়ে তথ্যমন্ত্রীর ভাষ্য, আমরা তাগাদা দিতে পারি। বিষয়টি আসলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে। আপনাদের হয়ে আমি আবারো কথা বলব, যাতে তাড়াতাড়ি সমাধানে পৌঁছানো যায়, রহস্য উদঘাটিত হয়।