গণতন্ত্রের সূচক বেগবান হোক

154

গণতন্ত্র সূচকে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। ইকোনমিস্ট ইনটেলিজেন্স ইউনিট (ইআরইড) এর সর্বশেষ গণতন্ত্র সূচকে (২০১৯) ৫.৮৮ স্কোর নিয়ে আট ধাপ এগিয়ে ৮০তম স্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। এর আগে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৫.৫৭। এ সূচক অগ্রগতি বিশ্বে নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে উড্ডীন করবে। ই আর ইউ সূচকে আমরা এগিয়ে গেলেও প্রতিবেশী ভারতের পেছনে পড়ে আছি। তারা ১০ ধাপ পিছালেও ৫১তম স্থানটি ধরে রেখেছে।
নতুন সূচকের তলানিতে চীন। সংখ্যালঘু মুসলিমদের নিপীডন এর প্রধান কারণ। তাদের স্কোর ৫.৪৪। একটি দেশের সুঠাম গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা দেশকে অর্থনৈতিক উন্নয়নে এগিয়ে নেবার পথ সুগম করে। গণতন্ত্রের উত্তরণের পথ ধরে উন্নয়নের মহাসোপানে বাংলাদেশ। বিশ্ব দেখছে বাংলাদেশের আশ্চর্য অগ্রগতি। বাংলাদেশ এখন আর পর নির্ভরশীল বা তলাবিহীন ঝুড়ি নয়। অর্থ সামাজিক সব দিকেই বাংলাদেশের অবস্থান ঈর্ষান্বিত। মাথাপিছু আয়ও ক্রয়ক্ষমতাই শুধু বাড়েনি। মজবুত এক অর্থনীতির ভিত রচনাকে প্রমাণ করেছে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ, কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ, সাব মেরিন ও বঙ্গবন্ধু মহাকাশ স্যাটেলাইট স্থাপন, সমুদ্র জয়, পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড। দেশে সংবিধান বলবৎ আছে, স্বাধীন নির্বাচন কমিশন কাজ করছে। সবচেয়ে আলোচিত বিষয়টি হচ্ছে উপ-মহাদেশে এক অভূতপূর্ব উদাহরণ সৃষ্টি করে বর্তমান সরকার নিজ দলের নেতাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান পরিচালনা করেছে।
দেশে শক্তিশালী বিরোধী দল ও মতকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। যদিও সরকারের বিরুদ্ধে এদের অভিযোগের শেষ নেই। টিভি টক শোতে সরকারের জোর সমালোচনা চলে। সংবাদপত্র ও গণমাধ্যম সম্পূর্ণ স্বাধীন। সভা-সমাবেশ চলছে। বিক্ষোভ মানববন্ধন ও ট্রেড ইউনিয়নগুলো কাজ চালাতে কোন বাধ্যবাদকতা নেই। প্রায় সবগুলো নির্বাচনে বিরোধী দল অংশ নিয়ে আসছে।
তথাপি আমরা চাই, গণতন্ত্র আরো বিকাশ লাভ করুক। মত প্রকাশের স্বাধীনতা আরো প্রসারিত হোক। স্বাধীন দেশের নাগরিকেরা প্রকৃত স্বাধীনতার আস্বাদ গ্রহণ করুক। দেশ এক স্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে মধ্যম আয়ের দেশ থেকে উন্নত বিশ্বে রূপান্তরিত হোক। এই আশা জাতির জনকের জন্মশত বার্ষিকীর মুজিবর্ষে।