খোদাপ্রেমের মহিমান্বিত পথে গাউছুল আজম : মুনির উল্লাহ

84

‘নবীপ্রেমের পথ ধরে যারা খোদার সান্নিধ্য লাভ করেছেন তাদের মধ্যে চিরস্মরণীয় হযরত গাউছুল আজম। বেলায়তের পথ পরিক্রমায় মনজিলে মকছুদের সোনালী গন্তব্যে পৌঁছেছেন। শুধু তাই নয় উনার অনুসারীরাও যাতে সেই পথ ধরে খোদা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে সে জন্য রেখে গেছেন রাসুলনোমা তরিক্বত। যাঁর ছায়াতলে এসে পথহারা মানুষ পেয়েছেন নবীর নৈকট্য খোদার সান্নিধ্য। এভাবেই দিশাহীন সৃষ্টির দিশা হয়ে ধরণীকে আলোকিত করেছেন গাউছুল আজম। তাই তো তিনি আরোহণ করেছেন খলিলুল্লাহর অনন্য মকামে, অর্জন করেছেন খলিফাতুর রাসুলের (দ.) অতুলনীয় মর্যাদা, গাউছুল আজম পদমর্যাদার শ্রেষ্ঠত্ব।’
গতকাল বুধবার বাদে এশা রাউজান কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফে অনুষ্ঠিত কাগতিয়া দরবারের প্রতিষ্ঠাতা ছৈয়্যদ গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আন্হুর স্মরণে ৬৬তম মিরাজুন্নবী (দ.) মাহফিল ও সালানা ওরছে হযরত গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আন্হুর ঈছালে ছাওয়াব মাহফিলে আল্লামা অধ্যক্ষ শায়খ ছৈয়্যদ মুহাম্মদ মুনির উল্লাহ্ আহমদী মাদ্দাজিল্লুহুল আলী বক্তব্যে এ কথা বলেন।
এসময় তিনি আরও বলেন, হযরত গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু নবীর সুন্নাতকে প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে ত্যাগ করেছেন আপন জীবনের সুখ, শান্তি ও স্বার্থ। মানবতার কল্যাণে নিঃস্বার্থ এ অবদান মহাকাল ধরে রইবে স্মরণীয়, বরণীয় এবং গ্রহণীয়। তিনি পৃথিবীর বুকে সৃষ্টি করে গেছেন নবীকে পাবার, নবীর পথে চলার ঐতিহাসিক এক পথ, যে পথের পাথেয় দীদারে রাসূল। নবীকে বুকে ধারণ করে তিনি রওজা পাকে রয়েছেন, রওজা পাকের দিকে সারি-সারি অবনত বৃক্ষরাজি তারই সাক্ষ্য বহন করে। বর্তমানেও বৃক্ষগুলো রয়েছে অবনত। তিনি এমন এক নবীপ্রেমের বিরল দৃষ্টান্ত যা জগৎবাসীর দৃষ্টিতে স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ। এ মহান অলৌকিক নিদর্শন দেখার এবং হযরত গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু’র তরিক্বতকে গবেষণা করার জন্য তিনি উদাত্ত আহবান জানান।
গতকাল ফজরের নামাজের পর খতম শরীফ, মোরাকাবা, ঈছালে ছাওয়াব, রওজা জিয়ারত, মিলাদ-কিয়াম ও মুনাজাতের পর খতমে কুরআন ও বুখারী শরীফের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ওরছের কর্মসূচি। সপ্তাহজুড়ে চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন প্রবেশমুখসহ গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় উত্তোলন করা হয়েছিল তোরণ এবং বিভিন্ন ভবন ও আইল্যান্ডগুলোতে শোভা পাচ্ছিল কুরআন-হাদিস ও গাউছুল আজমের বাণী সম্বলিত ফেস্টুন ও ব্যানার।
শুধু দেশের নয়, সপ্তাহজুড়ে বাংলাদেশে আসা বহির্বিশ্বের বিভিন্ন দেশ মধ্যপ্রাচ্য, সৌদিআরব, অষ্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী কাগতিয়া দরবারের শতশত অনুসারী এতে অংশ নেয়। জোহরের পূর্ব পর্যন্ত চলতে থাকে এ কার্যক্রম। বিদেশে অবস্থানরত এ মনীষীর অনুসারীরাও বাদ পড়েননি, তারাও এদিন স্বস্ব স্থানে বসে আর মহিলারা নিজেদের ঘরে বসে কুরআন তিলাওয়াত করতে থাকেন। জোহরের পর রওজা জিয়ারত শেষে শুরু হয় পবিত্র মিরাজুন্নবী (দ.) ও গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আন্হুর জীবনী শীর্ষক আলোচনা। এতে আলোচনায় অংশ নেন প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আবুল মনছুর, মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি ওলামা পরিষদের সভাপতি আল্লামা মুফতি মুহাম্মদ ইব্রাহিম হানফী, সচিব আল্লামা মুফতি কাজী মুহাম্মদ আনোয়ারুল আলম ছিদ্দিকী, সহ-এশায়াত সম্পাদক আল্লামা মুহাম্মদ এমদাদুল হক মুনিরী, আল্লামা মুহাম্মদ সেকান্দর আলী, মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল হক প্রমুখ। গান পরিবেশন করেন মুনিরীয়া যুব তবলীগের কেন্দ্রীয় হামদ-নাত পরিষদের সদস্যরা। বিজ্ঞপ্তির