খেতে ক্ষতিকর পোকা দমনে আলোর ফাঁদ

94

ফাঁদ হিসেবে অন্ধকারে বাতি জ্বালানো হয়। বাতি জ্বালালে পোকামাকড় সেদিকে আকৃষ্ট হয়। এরপর সেসব পোকা গিয়ে পড়ে বাতির নিচে রাখা গামলার ভেতরে। গামলায় পানির সঙ্গে থাকে সাবানের ফেনা। এ ফেনায় গিয়ে বসলে বা পড়লে পোকামাকড় উঠতে পারে না। এরপর ধানের জন্য ক্ষতিকর এবং উপকারি পোকা শনাক্ত করা হয়। পরে ক্ষতিকর পোকা দমনে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারেন কৃষকরা। পোকা চিহ্নিত করে ক্ষতিকর পোকা দমনের এ পদ্ধতিই হলো আলোর ফাঁদ। দিনদিন এটি কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। রামু উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু মাসুদ সিদ্দিকী বলেছেন, আমন ধানের মাঠে ফসলের ক্ষতিকর পোকা নির্ণয় ও দমনে আলোর ফাঁদ একটি সফল ও পরিবেশবান্ধব কৃষি ব্যবস্থাপনা। এ পদ্ধতি ব্যবহার করে চাষীরা কোনো খরচ ছাড়াই খুব সহজে ফসলের ক্ষতিকর পোকা শনাক্ত করে পোকার হাত থেকে ফসল রক্ষা করতে পারবেন। এতে চাষীদের কাংখিত ফসল উৎপাদনে পোকা কোনো বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না এবং ফলনও ভালো হবে। গত ১৯ ফেব্রæয়ারি রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের থোয়াইংগাকাটা এলাকায় স্থানীয় কৃষকদের উপস্থিতিতে উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্যোগে স্থাপিত আলোর ফাঁদ পরিদর্শনকালে কৃষি কর্মকর্তা আবু মাসুদ সিদ্দিকী এসব কথা বলেন। উল্লেখ্য রামু উপজেলায় বিভিন্ন বøকে আমন ধান রক্ষায় আলোর ফাঁদ পেতেছে উপজেলা কৃষি অফিস। ফসলের জন্য ক্ষতিকর পোকামাকড়ের উপস্থিতি জরিপ করতে আমনখেতে আলোর ফাঁদ স্থাপন করা হচ্ছে। এ সময় রামু উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু মাসুদ সিদ্দিকী ছাড়াও উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মোস্তফা জাবেদ চৌধুরী, মো. শওকত ওসমান তালুকদার, কৃষক আবদুল খালেক, সিরাজুল ইসলাম, শামসুল আলম, নাছির উদ্দিন, সৈয়দ আলম, হোসেন আহমদ সহ স্থানীয় কৃষক ও জনসাধারণ উপস্থিত ছিলেন। উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মোস্তফা জাবেদ চৌধুরী বলেন, কৃষি বিভাগের কর্মীরা ফাঁদে আটকা পড়া পোকা শনাক্ত করেন। পরে ধান রক্ষায় কোন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে, সে ব্যাপারে কৃষকদের পরামর্শ দেন। আলোর ফাঁদ স্থাপনের মাধ্যমে মূলত ক্ষতিকর ও উপকারি পোকামাকড়ের উপস্থিতি জরিপ করা হয়। তিনি বলেন, মিয়ানমার সীমান্তবর্তী টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলায় বাদামি গাছফড়িং জাতীয় পোকার আক্রমণে আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়। মিয়ানমারের গহিন জঙ্গল থেকে এ পোকা আসে। আলোর ফাঁদ বাদামি গাছফড়িং শনাক্ত ও নিধনে ভূমিকা রাখবে। বাদামি গাছফড়িং ধানের জন্য অন্যতম ক্ষতিকর পোকা। এ পোকার আক্রমণে ফসলের ২০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত ক্ষতি হয়।