খুলনার টানা তিনে তিন জিততে ভুলে গেছে রংপুর

32

এক দল আড়ি দিয়েছে হারের সঙ্গে, আরেক দল ভুলে গেছে জিততে। উল্টো পথের দুই রথে আরও এক ম্যাচ সওয়ার হলো খুলনা টাইগার্স ও রংপুর রেঞ্জার্স। শফিউল ইসলাম ও মোহাম্মদ আমিরের দারুণ বোলিং গড়ে দিল ভিত, রাইলি রুশোর বিধ্বংসী ব্যাটিং গড়ে তুলল জয়ের সৌধ। খুলনার এগিয়ে চলার পথে পিষ্ট হলো রংপুর।
বঙ্গবন্ধু বিপিএলে রংপুর রেঞ্জার্সকে ৮ উইকেটে উড়িয়ে দিয়েছে খুলনা টাইগার্স। চট্টগ্রামে শুক্রবার রংপুরকে ১৩৭ রানে আটকে রেখে খুলনা জিতেছে ৪৫ বল বাকি রেখেই।
খুলনার এটি টানা তৃতীয় জয়। টুর্নামেন্টে কেবল তারাই এখনও হারেনি কোনো ম্যাচ। রংপুর হারল চার ম্যাচের সবকটি।
সাগরিকা জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের ব্যাটিং স্বর্গে খুলনাকে জয়ের পথে এগিয়ে নেয় বোলারদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স। ৪ ওভারে ১টি মেডেনসহ ২১ রানে ৩ উইকেট নেন শফিউল। দ্বিতীয় উইকেটে পূর্ণ করেন শততম টি-টোয়েন্টি উইকেট। পাকিস্তানি আমির নেন ২৪ রানে দুটি।
নাগালেই থাকা লক্ষ্য আরও অনায়াস হয়ে গেছে রুশোর সৌজন্যে। ৩১ বলে ৬৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে ম্যাচ শেষ করে আসেন দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যান।
ম্যাচের শুরু ছিল মোহাম্মদ নাঈম শেখের ব্যাটিং ঝলক দিয়ে। ম্যাচের প্রথম ওভারে আমিরকে দৃষ্টিনন্দন কাভার ড্রাইভে চার মারার পর রংপুরের তরুণ ওপেনার ওই ওভারেই বাউন্ডারি মারেন আরেকটি। পরের ওভারে রবি ফ্রাইলিঙ্ককে টানা দুটি বাউন্ডারি মারেন মোহাম্মদ শাহজাদ।
আমির ঘুরে দাঁড়ান দ্রুতই। গতিময় শর্ট বলে ফিরিয়ে দেন আফগান শাহজাদকে।
শফিউল শুরু করেন প্রথম বলেই সাফল্য দিয়ে। আসরে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা ক্যামেরন দেলপোর্ত মিড উইকেটে ক্যাচ দেন ফ্লিক করতে গিয়ে। নিজের পরের ওভারে শফিউল ফেরান নাদিফ চৌধুরিকে। ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পাওয়া নাদিফ ৯ বল খেলেও করতে পারেননি রান।
এরপর নাঈম ও ফজলে মাহমুদ রাব্বির জুটি চেষ্টা করেছে রংপুরকে এগিয়ে নিতে। কিন্তু ৩২ বলে ৩৯ রানের জুটি শেষ হয় নাঈমের রান আউটে। ফিল্ডার সোজা শট খেলেও রান নিতে ছুটে গিয়ে উইকেট হারান নাঈম। তার ৩২ বলে ৪৯ রানের ইনিংসে ৫ চারের সঙ্গে ছিল ২ ছক্কা।
অধিনায়ক মোহাম্মদ নবি ব্যর্থ হয়েছেন আবারও। ফজলে মাহমুদের সঙ্গে দলকে কিছুটা টেনে নেন লুইস গ্রেগোরি। তবে শফিউল-আমিরদের সৌজন্যে শেষেও খুব বেশি রান করতে পারেনি রংপুর।
দুটি করে চার-ছক্কায় ৩৩ বলে ৪২ করেছেন ফজলে রাব্বি। ২০ বলে ২২ গ্রেগোরি। শেষ ওভারে দুটি উইকেট নিয়েছেন পেসার শহিদুল ইসলাম।
অল্প পুঁজির পর রংপুরের প্রয়োজন ছিল ধারাল বোলিং। হয়েছে উল্টো। প্রথম ওভারেই ওয়াইডের মালা সাজিয়ে মুস্তাফিজ দেন ৯ রান। দ্বিতীয় ওভারে তরুণ পেসার মুকিদুল ইসলামকে উইকেটের দুই পাশে দুটি ছক্কায় ওড়ান রহমানউল্লাহ গুরবাজ।
মুস্তাফিজের বলে দেলপোর্তের দুর্দান্ত ক্যাচে শান্তর বিদায় অবশ্য খানিকটা আশা নিয়ে এসেছিল রংপুরের জন্য। সেই আশা দ্রæতই উড়িয়ে দেন রুশো ও গুরবাজ। আরাফাত সানির বাঁহাতি স্পিনে রুশো এক ওভারে আদায় করেন চারটি চার। তাসকিন আহমেদকে পাত্তা না দিয়ে এক চার, দুই ছক্কায় নেন ১৯ রান। স্বদেশি নবিকে চার-ছক্কা হজম করান গুরবাজ। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে রান আসে ৮৩। ম্যাচের উত্তেজনা সব শেষ ওখানেই।
২২ বলে ৩৭ রান করে গুরবাজ আউট হয়েছেন মুকিদুলের বলে সীমানায় ক্যাচ দিয়ে। রুশো আর মুশফিকুর রহিম আর উইকেট হারাতে দেননি খুলনাকে।
২৩ বলে ফিফটি স্পর্শ করে রুশো মেতে ওঠেন অভিনব উদযাপনে, মুখে হাত দিয়ে চলতে থাকে তার বিশেষ নাচ! সেখানেই না থেমে ম্যাচ শেষ করে এসেছেন ৯ চার ও ২ ছক্কায় ৬৬ রানে।
গত বিপিএলের সর্বোচ্চ স্কোরার রুশো এবারও খেলছেন দুর্দান্ত। এই ম্যাচের আগের দুই ম্যাচে করেছেন অপরাজিত ৬৪ ও ৪২। দারুণ বোলিংয়ে যদিও ম্যাচের সেরা শফিউল।