খাশোগি হত্যার দণ্ড নিয়ে নতুন সমালোচনায় সৌদি আরব

29

ইস্তানবুল দূতাবাসে সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যার দণ্ড নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে সৌদি আরব। তুরস্ক ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গ্রুপগুলো বলছে, সৌদি আদালত ন্যায় বিচার করতে ব্যর্থ হয়েছে। ওই বিচারে যুবরাজ্য মোহাম্মদ বিন সালমানের দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে ছাড় দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি তাদের। ২০১৮ সালের অক্টোবরে ইস্তানবুল দূতাবাসে সৌদি এজেন্টদের হাতে খুন হন যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছায় নির্বাসনে থাকা সাংবাদিক জামাল খাশোগি। দেশটির প্রসিকিউটররা জানিয়েছেন, এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট মোট ৩১ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হয়। এদের মধ্যে ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। সোমবার ঘোষিত রায়ে তাদের মধ্যে তিন জনকে মোট ২৪ বছরের কারাদ ও পাঁচ জনকে মৃত্যুদÐ দেওয়া হয়। বাকিদের খালাস দেওয়া হয়েছে। তবে অভিযুক্তদের কারও নামই তাৎক্ষনিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি।
সৌদি আরবের ডেপুটি পাবলিক প্রসিকিউটর শালান আল শালান বলেন, তদন্তে দেখা গেছে ওই হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত ছিল না… ঘটনার আকস্মিকতায় ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে সৌদি আরবের এই বর্ণনা জাতিসংঘের নেতৃত্বে পরিচালিত অপর এক তদন্তে পাওয়া তথ্যের বিপরীত।
সৌদি আদালতে খাশোগি হত্যার রায় ঘোষণার পর একে ন্যাক্কারজনক আখ্যা দিয়েছে তুরস্ক। প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ানের প্রেস সহযোগী ফাহরেত্তিন আলতুন টুইটারে লিখেছেন, ‘যারা ব্যক্তিগত বিমানে করে ইস্তানবুলে ডেথ স্কোয়াড (হত্যাকারি দল) পাঠালো আর এই হত্যাকাণ্ডকে আড়ালে রেখে দিতে চাইলো তাদের দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে’। তুর্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই রায় আমাদের এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।
জাতিসংঘের বিশেষ দূত অ্যাগনেস ক্যালামার্ডও ওই রায় নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনে খাশোগির খুন বিচারবর্হিভূত হত্যাকাণ্ড, এর জন্য সৌদি আরব রাষ্ট্র দায়ী। যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও সৌদি আরবের রায়কে হোয়াইটওয়াশ আখ্যা দিয়েছে। সংস্থাটি বলছে, এতে ন্যায়বিচারও যেমন হয়নি তেমন জামাল খাশোগি ও তার প্রিয়জনদের সামনে সত্য উন্মোচন করেনি।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জামাল খাশোগি খুন একটি নৃশংস অপরাধ। এই নৃশংসতার ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার তার পরিবারের রয়েছে। সৌদি আরবকে অবশ্যই দায়ী সবাইকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে যাতে এই নৃশংসতা আর না ঘটে।