খাশোগি হত্যাকান্ড নিয়ে মার্কিন সিনেটের ভোটাভুটি অশোভন হস্তক্ষেপ : সৌদি

43

ইস্তানবুলের সৌদি কনস্যুলেটের ভেতর সাংবাদিক জামাল খাশোগি’র নৃশংস হত্যাকান্ডের ঘটনায় মার্কিন সিনেটের ভোটাভুটিকে অশোভন হস্তক্ষেপ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে রিয়াদ। গত ১৩ ডিসেম্বর সিনেটে খাশোগি হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে দায়ী করে উত্থাপিত প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হয়। এতে বলা হয়, খাশোগি হত্যায় সৌদি আরবকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত। প্রস্তাবে নৃশংস এ হত্যাকান্ডের নির্দেশদাতা হিসেবে সৌদি যুবরাজকে দায়ী করায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে রিয়াদ। সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকান্ডে খুনের নির্দেশদাতা হিসেবে সামনে এসেছে দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নাম।
সোমবার সৌদি প্রেস এজেন্সিতে প্রকাশিত দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, মার্কিন সিনেটের সাম্প্রতিক অবস্থানের মূলে রয়েছে ভিত্তিহীন অভিযোগ। এটি অভ্যন্তরীণ, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সৌদি আরবের ওপর অশোভন হস্তক্ষেপ। খাশোগি হত্যাকান্ডের বাইরে ইয়েমেনে নৃশংসতার জন্যও সৌদি আরবকে দায়ী করে দেশটিতে অস্ত্র বিক্রি নিষিদ্ধের পক্ষেও মত দিয়েছেন মার্কিন সিনেটররা। সিনেটের এই দুই প্রস্তাবে সমর্থন দানকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স উল্লেখ করেছে, কংগ্রেসে পাস না হলে অস্ত্র বিক্রি বন্ধের প্রস্তাব পাস করানো বিফল হবে। প্রস্তাবটিকে আইনে পরিণত করতে গেলে দরকার মার্কিন কংগ্রেসের সমর্থন। কিন্তু সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য রিপাবলিকান। তারা মনে করেন, ইরানকে ঠেকাতে সৌদি আরবের সহায়তা দরকার যুক্তরাষ্ট্রের।
মার্কিন সিনেটরদের ৫৬ জন্য সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধের পক্ষে ভোট দিয়েছেন, আর বিপক্ষে গেছেন ৪১ জন। ইয়েমেনের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধের বিষয়ে সিনেটে ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন সাত জন রিপাবলিকানও। সিনেটের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান ও রিপাবলিকান সিনেটর বব কোরকার বলেছেন, ‘জামাল খাশোগিকে হত্যার বিষয়ে সিনেট যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে দায়ী করার বিষয়ে প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়েছে। এটা খুবই কড়া একটি বার্তা।
আমরা যেসব মূল্যবোধকে ধারণ করি এ প্রস্তাবনার মূল প্রেরণা সেসব মূল্যবোধ।’
ইয়েমেনের বিষয়ে ভোটাভুটি হওয়ার পর সিনেটে খাশোগির হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে দায়ী করে উত্থাপিত প্রস্তাবে ভোটাভুটি হয়। সেই প্রস্তাবনায় আরও বলা হয়, খাশোগি হত্যায় সৌদি আরবকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত। কিন্তু সৌদি আরবের বিষয়ে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক রাখার বিষয়েই মত ব্যক্ত করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি সৌদি যুবরাজের পক্ষে দাঁড়াচ্ছেন। ট্রাম্প মনে করেন, মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রভাব বৃদ্ধি ঠেকাবার জন্য সৌদি আরবের উপস্থিতি অপরিহার্য। ইরান শক্তিশালী হয়ে উঠলে বিপদে পড়বে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইসরায়েল। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, ইয়েমেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যও সৌদি আরবকে পাশে পাওয়া দরকার। সৌদি আরবের সমর্থন ছাড়া ইয়েমেনে ব্যর্থ হতে পারে শান্তি আলোচনা। তাছাড়া, ফিলিস্তিন-ইসরায়েল শান্তি প্রতিষ্ঠার যে চুক্তি নিয়ে কাজ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, তাতেও সৌদি আরবের ভূমিকাকে অপরিহার্য মনে করে হোয়াইট হাউস।