খালেদা জিয়ার জামিনের মেয়াদ বাড়লো

38

স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে ‘বির্তকিত’ মন্তব্যের অভিযোগে ঢাকা ও নড়াইলের দুই মানহানি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিনের মেয়াদ এক বছর বাড়িয়েছে হাই কোর্ট। খালেদার আইনজীবীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের হাই কোর্ট বেঞ্চ গতকাল মঙ্গলবার এ আদেশ দেয়। বিএনপি নেত্রীর পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ও ফায়েজ জিবরান। খবর বিডিনিউজের
কায়সার কামাল পরে বলেন, গত বছরের অগাস্ট মাসে এ দুই মামলায় হাই কোর্ট খালেদা জিয়াকে ছয় মাসের জামিন দিয়েছিল। সেই জামিনের মেয়াদ ফুরিয়ে আসায় নতুন আবেদন করা হয়ছিল জানিয়ে এই আইনজীবী বলেন, আদালত দুটি মামলায় জামিনের মেয়াদই এক বছর করে বাড়িয়ে দিয়েছে।
নড়াইলের আদালতে করা মানহানির মামলায় খালেদা জিয়াকে গত বছরের ১৩ অগাস্ট ছয় মাসের জামিন দেয় হাই কোর্ট। আর ঢাকার মামলায় খালেদা জিয়া ছয় মাসের জামিন পান গত ১৪ অগাস্ট।
হাই কোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিতের আবেদন নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষ চেম্বার আদালতে গেলে ৩০ অগাস্ট চেম্বার আদালত বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেয়। আপিল বিভাগ হাই কোর্টের আদেশ স্থগিত না করায় খালেদার জামিন বহাল থাকে।
এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজার রায়ের পর প্রায় এক বছর ধরে কারাগারে আছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। এর মধ্যে জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাতেও তার কারাদÐ হয়েছে।
নড়াইলের আদালতে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মানহানির মামলাটি হয় ২০১৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর। নড়াইল জেলা পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও নড়াগাতি থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রায়হান ফারুকী ওই মামলা দায়ের করেন।
একই ঘটনায় ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে (সিএমএম) ২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারি অন্য মামলাটি দায়ের করেন জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী।
ওই বছর ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের এক আলোচনা সভায় খালেদা মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বলেন, আজকে বলা হয়, এতো লক্ষ লোক শহীদ হয়েছেন। এটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে যে আসলে কত লক্ষ লোক মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। নানা বই-কিতাবে নানারকম তথ্য আছে।
একাত্তরে আওয়ামী লীগ ‘স্বাধীনতা’ নয়, ‘ক্ষমতা’ চেয়েছিল দাবি করে ওই সভায় বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, তিনি (জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন, স্বাধীন বাংলাদেশ চাননি।
নড়াইলের মামলার অভিযোগে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা এবং জাতির জনকের গৌরবজনক ভূমিকা নিয়ে খালেদা জিয়া উদ্দেশ্যমূলক বক্তব্য দিয়ে মানহানি করেছেন।
আর ঢাকার মামলার আর্জিতে বলা হয়, ওই ধরনের বক্তব্য দিয়ে বিএনপির চেয়ারপরসন ফৌজদারি দÐবিধির ৫০০ ধারা অনুযায়ী অপরাধ করেছেন।
নড়াইলের জেলা ও দায়রা জজ আদালত গত বছরের ৫ অগাস্ট খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করলে হাই কোর্টে জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবীরা।
আর ঢাকার মামলায় জজ আদালত জামিন নাকচ করেছিল গত ৭ অগাস্ট। পরে দুই মামলাতেই হাই কোর্ট বিএনপি চেয়ারপারসনকে জামিন দেয়।