খাদ্যে ভেজালকারীর শাস্তি মৃত্যুদন্ড হওয়া উচিত

59

খাদে ভেজাল মাদকের চেয়েও ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধি। মাদকের জন্য সবোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড হলেও খাদ্যে ভেজালের শাস্তি সর্বোচ্চ ৩ বছর কারাদন্ড ও অনধিক ৫ লক্ষ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। খাদ্যে ভেজালকারীর শাস্তি মৃত্যুদন্ড হওয়া উচিত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খাদ্যে ভেজালের বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা প্রদর্শনের নির্দেশ দিলেও এ সমস্ত অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব হচ্ছে না। অন্যদিকে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত, ভোক্তা অধিদপ্তরের বাজার অভিযানের ফলে খাদ্যে ভেজাল থেমে নেই। যে হোটেল-রেস্তোরাঁকে জরিমানা করা হচ্ছে, পরের দিন ভোক্তারাই ওই হোটেল থেকে খাদ্য কেনায় লাইন দিয়ে বসে থাকে। তার অর্থ ভেজাল খাদ্যের চাহিদা থাকায় ব্যবসায়ীরা এখনও ব্যবসা করার সুযোগ পাচ্ছে। যদি ভোক্তা হিসাবে যে হোটেল, রেস্তোরাঁ ও দোকানকে জরিমানা করা হচ্ছে, তাকে বয়কট করা হয় তাহলে খাদ্যে ভেজাল, ক্যামিকেল মিশ্রণসহ নানা অপরাধ অতি সহজেই বন্ধ করা সম্ভব হবে। অধিকাংশ ভোক্তারা অসচেতন, অসংগঠিত, আইন ও অধিকার সম্পর্কে জানে না। ফলে প্রতারিত হওয়া, ঠকা, হয়রানির সম্মুখীন হওয়া নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। তাই এ জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে ব্যবসায়ীদের সচেতন করার পাশাপাশি ভোক্তাদেরকেও ্আইন ও অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা প্রয়োজন।
ইউকেএইড, বৃটিশ কাউন্সিলের সহায়তায় প্রকাশ প্রকল্পের কারিগরী সহযোগিতায় পোল্ট্রি সেক্টরে সুশাসন প্রকল্প, কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম এর আয়োজনে ২৫ মার্চ শুলকবহর ওয়ার্ড কার্যালয়ে নিরাপদ খাদ্য আইন, ভোক্তা সংরক্ষণ আইন এবং মৎস্য ও প্রাণী খাদ্য আইন নিয়ে মাল্টি-স্টেকহোল্ডারস কর্মশালায় বিভিন্ন বক্তারা উপরোক্ত অভিমত জানান।
ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ মোরশেদ আলমের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মাশহুদুল কবির, বিশেষ অতিথি ছিলেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন। আলোচনায় অংশ নেন কর্নফুলী কমপ্লেক্স এর সভাপতি এয়াকুব চৌধুরী, পূর্ব নাসিরাবাদ মহল্লা কমিটির আমির হোসেন, আরকান হাউজিং সোসাইটির এস এম ওয়াজেদ, দক্ষিণ শুলক বহর মহল্লা কমিটির আকতারুল ইসলাম, সালেহ হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট এর সালাহউদ্দীন সালেহ, ক্যাব পাঁচলাইশ কমিটির যুগ্ন সম্পাদক সেলিম জাহাঙ্গীর, নারী নেত্রী মেহেরুন্নীসা, নারী উদ্যোক্তা নুরুন্নাহার ফুলু, পাঁচলাইশ কমিউিনিটি পুলিশের সাধারণ সম্পাদক মো. আসাদ সর্দার, ক্যাব মাঠ সমন্বয়কারী জগদিশ চন্দ্র রয় প্রমুখ।
ক্যাব ডিপিও জহুরুল ইসলামের সঞ্চালনায় কর্মশালায় মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ খাদ্য আইন নিয়ে মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনা করেন পাঁচলাইশ থানা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. জাকিয়া খাতুন ও ভোক্তা অধিকার আইন নিয়ে মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনা করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. হাসানুজ্জমান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মাশহুদুল কবির বলেন, মাদক যেরকম যার কাছে পাওয়া যায়, তাকেই শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে, খাদ্যে ভেজালের বিষয়ে একইভাবে লাইসেন্স বিহীন, মানহীন পণ্য বিক্রয়কারীর বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেবার বিধান বয়েছে। একই সাথে একই অপরাধ বারবার করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠিন শাস্তির বিধান থাকলেও অনেক সময় প্রশাসন মানবিক বিষয়গুলি বিবেচনা করে থাকেন। বিজ্ঞপ্তি