ক্ষুব্ধ পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট

60

পাকিস্তানের বেসরকারি স্কুলগুলোতে মাত্রাতিরিক্ত ফি বৃদ্ধি নিয়ে ক্ষুব্ধ দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। এই সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের এক বেঞ্চ দেশের সব ক’টি বেসরকারি স্কুলকে সরকারি নিয়ন্ত্রণে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে। বেসরকারি স্কুল কর্তৃপক্ষের উদ্দেশে আদালত বলেছে, ‘চাইলে এখনই আপনাদের স্কুল বন্ধ করে দিতে পারি। আর স্কুলের প্রশাসনিক সমস্ত দায়িত্ব সরকারের হাতে তুলে দিতে পারি।’
একই সঙ্গে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালতের মন্তব্য, কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কখনোই টাকা কামানোর কারখানা হতে পারে না। বেসরকারি স্কুলগুলোয় অতিরিক্ত ফি-বৃদ্ধি নিয়ে ক্ষোভ চলছে গোটা পাকিস্তানে। ডিসেম্বরে এই ফি-বৃদ্ধিতে রাশ টেনেছিল সর্বোচ্চ আদালত। তারা নির্দেশ দিয়েছিল, বর্ধিত ফি-এর অন্তত ২০ শতাংশ কমাতে হবে স্কুল কর্তৃপক্ষকে। যে সব বেসরকারি স্কুলের মাইনে পাঁচ হাজার টাকার বেশি, তাদের জন্যই এই নির্দেশ প্রযোজ্য ছিল। সেই সঙ্গেই আদালত নির্দেশ দিয়েছিল, কোনো বেসরকারি স্কুলই ছাত্র-ছাত্রীদের বেতন বছরে ৮ শতাংশের বেশি বাড়াতে পারবে না। তা-ও করতে হবে কোনো নির্দেশকের অধীনে। গ্রীষ্মকালীন ছুটির সময়ে যে স্কুল ফি দেওয়া হয়, তার অর্ধেক ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকদের ফিরিয়ে দেওয়ারও নির্দেশ দেয় কোর্ট।
সু্প্িরম কোর্টের সেই নির্দেশের প্রেক্ষিতে বিচারপতিদের চিঠি লেখে ইসলামাবাদের দু’টি বেসরকারি স্কুল। সেই নিয়েই মঙ্গলবার শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টে। ওই চিঠির ভাষা আদালতের পক্ষে ‘অবজ্ঞাসূচক’ বলে সোমবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিচারপতি গুলজার আহমেদ, বিচারপতি ফয়সাল আবাব এবং বিচারপতি ইজাজুল এহসানের বেঞ্চ।
বিচারপতিরা বলেছেন, ‘আপনাদের এত সাহস হয় কী করে? আদালতের নির্দেশকে কঠোর বলে বিচারপতিদের চিঠি পাঠান।’ এরপরে তারা বলেন, ‘আপনাদের চোখে তো লজ্জার চিহ্নমাত্রও নেই। এখনই আপনাদের স্কুল বন্ধ করে সরকারের হাতে তুলে দেওয়া উচিত।’ আদালতের ভর্ৎসনার প্রেক্ষিতে মুখ খুলেছেন ওই দুই বেসরকারি স্কুলের আইনজীবী। তারা জানান, আদালত অবমাননার কোনও উদ্দেশ্য তাদের ছিল না। তারা বলেছেন, ‘যা লেখা হয়েছে, তার জন্য আমরা ক্ষমা চাইছি। ভবিষ্যতে এমনটা আর হবে না।’