ক্ষতিগ্রস্তদের অপেক্ষা শেষ হচ্ছে এ মাসেই সাত মৌজায় বিতরণ করা হবে প্রায় ৩১৪ কোটি টাকা

128

হালিশহর-পতেঙ্গায় গ্যাস লাইনের পাইপ বসানোর পরও ক্ষতিপূরণের চেক না পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকদের মধ্যে ক্ষোভ দীর্ঘদিনের। ক্ষতিগ্রস্তদের চেক দিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. আফসারুল আমীন নানাভাবে তৎপরতা চালিয়ে আসলেও এ প্রকল্পের অর্থছাড় কোনোভাবেই আলোর মুখ দেখছিলো না। নানা জটিলতার কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে চেক বিতরণ বন্ধ থাকলেও অবশেষে অপেক্ষার পালা শেষ হচ্ছে।
এলএ শাখা সূত্র জানায়, চলতি মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে চেক বিতরণ শুরু করতে যাচ্ছে ভূমি অধিগ্রহণ (এলএ) শাখা। এ প্রকল্পের জন্য হালিশহর-পতেঙ্গার সাত মৌজায় ২৪ দশমিক ৪৩৫১ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এতে দুই শতাংশ উৎস করসহ ৩১৩ কোটি ৪১ লক্ষ ২০ হাজার ২৫৩ টাকা পাবেন ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকরা।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ) মো. আমিরুল কায়ছার পূর্বদেশকে বলেন, ‘পতেঙ্গা-হালিশহরের সাতটি মৌজায় ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকদের মধ্যে চলতি মাসেই চেক বিতরণ শুরু হবে। ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের আবেদনের শুনানি চলছে। আট ধারা নোটিশও দ্রæত ছাড়ার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। এখন স্বয়ংক্রিয়ভাবেই এসএমএসের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তরা টাকা পাওয়ার বিষয়টি জানবেন। কেউ অযথা এখানে এসে জটলা করার সুযোগ পাবেন না। আমরা যেদিনই ক্ষতিগ্রস্তদের আসতে বলবো সেদিনই এসে চেক নিয়ে যাবেন। শুধুমাত্র তার আগে একবার শুনানিতে অংশ নিতে আসবেন। শুনানির দিন তারিখও আমরা এসএমএস সার্ভিসের মাধ্যমে জানিয়ে দিচ্ছি।’
জানা যায়, গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণ প্রকল্পের পতেঙ্গা-হালিশহরের সাতটি মৌজায় প্রচুর আবেদন জমা পড়েছে। দক্ষিণ পতেঙ্গা, উত্তর পতেঙ্গা, দক্ষিণ হালিশহর, মধ্যম হালিশহর, উত্তর হালিশহর, দক্ষিণ কাট্টলী ও উত্তর কাট্টলীর ২৪ দশমিক ৪৩৫১ একর জায়গা অধিগ্রহণ করেছে সরকার। প্রকল্প অনুসারে জায়গা অধিগ্রহণ করে পাইপলাইন বসানো হলেও গত কয়েক বছর ধরে ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকরা চেক না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েন। প্রকল্পের নিয়মানুসারে জায়গা ছাড়লেও দীর্ঘদিন ধরে ক্ষতিপূরণ না পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্তরা স্থানীয় সংসদ সদস্যকে বিষয়টি সুরাহার অনুরোধ জানান। এরপরই প্রকল্পের অর্থছাড়ে তড়িঘড়ি শুরু করে ভূমি অধিগ্রহণ শাখা।
সূত্র জানায়, এ প্রকল্পটির কাজটি সম্পূর্ণভাবে অনলাইনেই করতে চায় এলএ শাখা। যে কারণে প্রকল্পের ক্ষতিপূরণের অর্থ বিতরণে কিছুটা সময়ক্ষেপণ হয়েছে। এখন কোনোধরনের ভোগান্তি ছাড়াই ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকরা টাকা পাবেন। এলএ শাখার ওয়েবসাইটে গেলেই আবেদন সম্পর্কে জানবেন ক্ষতিগ্রস্তরা। শুনানির আগেই পক্ষে-বিপক্ষের সবার মুঠোফোনে এসএমএস পৌঁছে যাচ্ছে। ‘এলএসিটিজি’ নাম্বার থেকেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে এ এসএমএসটি পাঠানো হবে। যেদিনই শুনানি হবে সেদিনই নিষ্পত্তি করা হচ্ছে প্রতিটি আবেদন। আর ওয়েবসাইটে প্রবেশ করলেই আবেদনকারীর নাম, ছবি, প্রকল্পের নাম, কেইস নং, জমির শ্রেণি ভেসে উঠবে। এক দাগে একাধিক আবেদনকারী থাকলেও তাদের সবার নাম ও ছবি একইভাবে দেখা যাবে। বিষয়টি সাধারণ মানুষকে বুঝাতেই এলএ শাখার বাইরে বসানো হচ্ছে অত্যাধুনিক ডিসপ্লে বোর্ড।