ক্যাসিনোয় ব্যবহৃত টাকার উৎসের সন্ধানে গোয়েন্দারা

25

ঢাকার ক্লাবগুলোর ক্যাসিনোতে ব্যবহৃত টাকার উৎসের সন্ধানে নেমেছেন আর্থিক গোয়েন্দারা। এরই মধ্যে দেশের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) কাজ শুরু করেছে। ঢাকার ক্যাসিনোগুলোর সঙ্গে জড়িতদের সবার আর্থিক খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চাহিদা অনুযায়ী সংস্থাটি প্রয়োজনীয় সহযোগিতাও দিচ্ছে। ক্যাসিনোগুলোয় ব্যবহৃত টাকার উৎস খোঁজা একটি চলমান বিষয় বলেও গোয়েন্দারা জানান।
প্রসঙ্গত, মানি লন্ডারিং ও অর্থপাচার ঠেকাতে সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে কাজ করছে বিএফআইইউ। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়া সব ব্যক্তির নামে থাকা ব্যাংক হিসাব নজরদারিতে রাখতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি অভিযুক্তদের নিকটাত্মীয়দের নামে অ্যাকাউন্ট থাকলে তারও খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তাদের নামে কি পরিমাণ অর্থ ব্যাংকগুলোয় আছে, তাও জানার চেষ্টা চলছে।
এদিকে, র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার যুবলীগ নেতা জি কে শামীমের ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর কাছে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। এই প্রসঙ্গে একটি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী বলেন, ‘গত রবিবার আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠি পেয়েছি। চিঠিতে বলা হয়েছে, জি কে শামীম, তার স্ত্রী ও মা-বাবার নামে থাকা সব ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত রাখতে হবে। এ-সংক্রান্ত সব তথ্য পাঁচ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতেও বলা হয়েছে’।
এদিকে, জি কে শামীমের ব্যাংক হিসাবে এরই মধ্যে ৩০০ কোটি টাকার সন্ধান পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ইয়ংমেন্স ক্লাবে ক্যাসিনো খেলার টেবিলে রাখা হয়েছে আটক হওয়াদের কাছ থেকে জব্দ করা মোবাইল ফোন।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার জি কে শামীমের অফিসে হানা দিয়ে সাত দেহরক্ষীসহ তাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। এ সময় তার অফিস থেকে নগদ ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা, ১৬৫ কোটি টাকার স্থায়ী আমানতের (এফডিআর) কাগজপত্র (তার মায়ের নামে ১৪০ কোটি), ৯ হাজার ইউএস ডলার, ৭৫২ সিঙ্গাপুরি ডলার, একটি আগ্নেয়াস্ত্র ও মদের বোতল জব্দ করা হয়। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
এ প্রসঙ্গে বিএফআইইউ প্রধান আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান বলেন, ‘মানিলন্ডারিং ও সন্দেহজনক লেনদেনের বিষয়ে অনুসন্ধান করছে বিএফআইইউ। কোনো নেতা হোক আর যাই হোক, অপরাধ করে থাকলে তার ব্যাপারে আমরা কঠোর আছি। মানি লন্ডারিংয়ের সঙ্গে জড়িত থাকলে তাকে আইনের আওতায় আসতে হবে’।
এর আগে, গত রবিবার ক্যাসিনোয় ব্যবহৃত চিপস, টোকেন ও কুপন ব্যবহারের ওপর সতর্কতা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, টাকার আদলে তৈরি টোকেন ব্যবহার দন্ডনীয় অপরাধ।
প্রসঙ্গত, স¤প্রতি রাজধানী ক্লাবগুলোয় ক্যাসিনো, জুয়ার আসর চলার সময় বিভিন্ন ধরনের ‘টোকেন’ ও ‘কয়েন’ ব্যবহারের বিষয়টি উঠে আসার পর বাংলাদেশ ব্যাংক এই সতর্কতা জারি করে। এর আগে, গত ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ক্লাবগুলোতে অভিযান শুরু করে র‌্যাব। মতিঝিলে শুরু হওয়া এই অভিযান রাজধানী ছাড়িয়ে এরই মধ্যে দেশের অন্য শহরেও বিস্তৃত হয়েছে।