কৌতুক অভিনেতা থেকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট

80

কয়েকমাস আগেও ‘কমেডিয়ান’ হিসেবে ভোলোদিমির জেলেনস্কিকে চিনত গোটা ইউক্রেন। তার কাজ ছিল প্রেসিডেন্টের ভূমিকায় অভিনয় করে দর্শকদের হাসানো। তবে আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি কৌতুক মঞ্চে নয় বরং বাস্তবেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন ভোলোদিমির জেলেনস্কি। রবিবার দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চূড়ান্ত ভোটের প্রাথমিক ফলাফলে বিপুল ভোটে এগিয়ে রয়েছেন তিনি। জানা যাচ্ছে, এই কৌতুক অভিনেতা পেয়েছেন ৭০ শতাংশের বেশি ভোট। প্রতিদ্ব›দ্বী ধনকুবের পেট্রো পোরোশেনকোর পেয়েছেন ৩০ শতাংশেরও কম ভোট। এরই মধ্যে পরাজয় মেনে নিয়েছেন পোরেশেঙ্কো। খবর গার্ডিয়ানের।
মার্চের শেষ সপ্তাহে দেশটিতে মোট ৩৯ জন প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে নিয়ে প্রথম দফা ভোট অনুষ্ঠিত হয়। এতে কেউই এককভাবে ৫০ শতাংশ ভোট না পাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া দুই প্রার্থী ভোলোদিমির জেলেনস্কি ও পেট্রো পোরোশেঙ্কোর মধ্যে রবিবার চূড়ান্ত ভোট অনুষ্ঠিত হয়। সার্ভেন্ট অব দ্য পিপল নামে হাস্যরসাত্মক একটি টিভি শো করেছিলেন জেলেনস্কি। সেখানে দেখা গেছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পর সাধারণ এক নাগরিক দেশের প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। এবার সে কল্পিত টিভি শো-ই হয়তো বাস্তব রূপে হাজির হচ্ছে জেলেনস্কির জীবনে। রবিবার জেলেনস্কি সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমি কখনও আপনাদের হতাশ করবো না। আমি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট হইনি। তারপরও ইউক্রেনের নাগরিক হিসেবে সোভিয়েত পরবর্তী দেশগুলোকে আমি বলতে চাই, আমাদের দিকে তাকিয়ে দেখুন। সবকিছুই সম্ভব।’
চূড়ান্ত নির্বাচনের আগে পোরোশেঙ্কো বলেছিলেন, ‘পাঁচ বছরের প্রেসিডেন্ট পদ কোনো কমেডি শো নয় যেটি আপনাদের আর মজার না লাগলে সুইচ অফ করে দিতে পারবেন। না এটা কোনো ভূতের গল্প যেটি যেকোনো মুহূর্তে দেখা বন্ধ করে দিতে পারবেন।’ তার সমর্থকদের আরও দাবি, ২০১৪ সালে রাশিয়ার ক্রিমিয়া সংযুক্তিকরণের সময় রুশ-ঘনিষ্ঠ ইউক্রেন সরকারের পতন ঘটিয়ে পোরোশেঙ্কোর প্রেসিডেন্ট পদে বসার পর যে ভাবে সেনাবাহিনীর পুনর্গঠন করেছেন তিনি, তাতে তার নেতৃত্বের গুরুত্ব সুপ্রতিষ্ঠিত। কিন্তু দেশের সাড়ে চার কোটি জনতার অনেকেই মনে করেন সেই সময়ের অনেক প্রতিশ্রুতিই পূরণ হয়নি।একারণেই জেলেনস্কিকে সাধারণ ইউক্রেনবাসী ভোট দিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
জেলেনস্কি তার প্রচারে বলেন, ‘আমি রাজনীতিবিদ নই। আমি এক জন সাধারণ মানুষ যে পুরো সিস্টেমটা ভাঙতে চায়। আপনাদেরই ভুল ও মিথ্যা প্রতিশ্রুতির ফল আমি।’ অনেকে বলছেন, এই সরল, সাদাসিধে মানুষটি দেশের সমস্যা ঢের ভালো বুঝতে পারেন। কারও মতে, পার্লামেন্টে বেশিদিন টিকতেই পারবেন না জেলেনস্কি। কারণ সেখানে তার কোনো সমর্থন নেই। উপরন্তু রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে মোকাবিলা করার মতো অভিজ্ঞতাও নেই তার ঝুলিতে।