কোনো ইস্যুতেই বঙ্গবন্ধুকে অবমাননা সহ্য করা হবে না

25

নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বঙ্গবন্ধু এমন একজন নেতা ছিলেন, যে নেতার আহব্বানে বাঙালি নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। যেখানে মানুষ নিজের প্রাণটাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে; সেই প্রাণ বিসর্জন দেওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে পেরেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এমন খুব কম নেতাই আছেন, যারা মানুষকে এভাবে উদ্দীপ্ত করতে পেরেছেন। বঙ্গবন্ধু একদিকে যেমন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, তেমনি বিশ্ব ইতিহাসে সেরা নেতাদের একজন। তাই কোনো ইস্যুতেই বঙ্গবন্ধুকে অবমাননা সহ্য করা হবে না।
গতকাল শনিবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে মুজিববর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল কর্তৃক ‘বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মভিত্তিক বই বিতরণ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠান শেষে কাউন্সিল কর্তৃক চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবকে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও সাংবাদিকতা বিষয়ে ৮৫টি বই প্রদান করা হয়।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, মুজিববর্ষের শেষের দিকে এসে নানাভাবে বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে। অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে নানা প্রসঙ্গ টেনে সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। যারা সমাজকে পিছিয়ে নিতে চায় এবং তাদেরকে যারা পৃষ্ঠপোষকতা করছে, তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। যারা সমাজকে মধ্যযুগে নিয়ে যেতে চায়, যারা মধ্যযুগীয় সমাজব্যবস্থা কায়েম করতে চায় এবং তাদেরকে যারা পৃষ্ঠপোষকতা করে, তাদের বিরুদ্ধেও আজকে কলম নিয়ে সোচ্চার হওয়ার সময় এসেছে।
তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, সাংবাদিকরা দেশের মানুষকে পথ দেখায়। আমাদের স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলনে যেমন সাংবাদিকদের ভূমিকা ছিল, তেমনি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীনতার জন্য মানুষের মনন তৈরির ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের লেখনী ও পত্রিকার সংবাদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। বঙ্গবন্ধু ইস্যুতেও কোন বাধা আসলে সাংবাদিকদের কলম নিয়ে সোচ্চার হতে হবে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন,বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল গঠন করেছেন। এ প্রেস কাউন্সিলকে আরো শক্তিশালী ও কল্যাণমুখী করতে প্রেস কাউন্সিল আইন সংশোধনের পর্যায়ে রয়েছে। সংশোধিত আইন আগামী পার্লামেন্টে উপস্থাপন করা হতে পারে। সংশোধিত আইন মোতাবেক সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির পাশাপাশি সংক্ষুব্ধ গণমাধ্যমকর্মীও প্রেস কাউন্সিলে অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন। সংশোধিত আইন পাস হলে প্রেস কাউন্সিল আরো কল্যাণমুখী কাজ করতে পারবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বই জ্ঞানের খোরাক যোগায়। প্রতিভা বিকশিত করার পাশাপাশি বিশ্বকে জানতে বই পাঠের বিকল্প নেই। প্রবীণরা বই পড়ায় অভ্যস্ত হলেও বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস কম। তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় বুঁদ হয়ে থাকে। অনেক তথ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় পাওয়া গেলেও তা বইয়ের আবেদনের তুলনায় অপ্রতুল। তরুণদেরকে বই পড়ায় উৎসাহী করে তুলতে হবে। তাদের বইমুখী করতে হবে।
বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের সদস্য ও দৈনিক আজাদী সম্পাদক এমএ মালেক বলেন, বই আমাদেরকে অন্ধকার থেকে জ্ঞানের দিকে নিয়ে যায়। বই ছোট হতে পারে কিন্তু তার মধ্যে জানা ও জ্ঞানের পরিধি বেশি। প্রেস কাউন্সিল সম্বন্ধে জনগণ জানে না। সংবাদপত্রের বিরুদ্ধে যে সমস্ত মামলাগুলো হবে, সেগুলো যদি প্রথমে প্রেস কাউন্সিলে যায়, তাহলে ভালো হয়। সেখানে মনপুত না হলে, পরে না হয় কোর্টে যাওয়া হোক।
সভাপতির বক্তব্যে প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, গত অর্থবছরে ২০টি জায়গায় আমরা বই বিতরণ করেছি। এ অর্থ বছরেও আরও ২০টি জায়গায় বই বিতরণ করবো। বঙ্গবন্ধু কর্নার করেছি দুটি জায়গায়। আরও ৫টি জায়গায় বঙ্গবন্ধু কর্নার করা হবে। চট্টগ্রামেরটা দ্রুত করা হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন প্রেস ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সালাহ উদ্দিন মোহাম্মদ রেজা, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, প্রেস কাউন্সিলের সদস্য আব্দুল মজিদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী প্রমুখ।