কোটি টাকার আমানত নিয়ে উধাও দুই ভাই

61

পটিয়ায় কোটি টাকার আমানত নিয়ে উধাও হয়ে গেছে পটিয়া ‘নিউ স্টার সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লি.’ নামে একটি সমবায় সংগঠনের কর্মকর্তারা। গত বৃহস্পতিবার গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেয়ার সময় দিয়ে পৌর সদরের বিওসি রোডের অফিসটিতে তালা লাগিয়ে দিয়ে সমিতির সভাপতি মো. সেকান্দর আলী নাছির (৩৬) ও তার ভাই মো. আলী সেলিম (২৮) উধাও হয়ে যান। বর্তমানে ওই অফিস এবং তাদের বাড়িতে তালা ঝুলছে। তারা পটিয়া পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডস্থ ফজর আলী মুন্সির বাড়ির ফৌজ্জ্যারপুলের দক্ষিণ পাশের মৃত আনু মিয়ার পুত্র।
শেয়ার হোল্ডার ও আমানতকারী পশ্চিম হাইদগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মৃত হাজী এখলাছুর রহমানের পুত্র হুমায়ুনুর রশিদ বাদী হয়ে পটিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
গতকাল সোমবার সকালে বিভিন্ন এলাকার গ্রাহকরা অফিসের বাইরে অবস্থান ও বিক্ষোভ করতে দেখা যায়। তবে অফিসের বাইরে তালা লাগানোর কারণে কেউ ভিতরে ঢুকতে পারেননি।
জানা গেছে, ২০১১ সালে নাছির ও সেলিম (২৮) পটিয়া ‘নিউ স্টার সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লি.’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান (রেজি-১১০৪৬) গড়ে তুলেন। অফিসের ঠিকানাদেখানো হয় পটিয়া বিওসি রোড়স্থ বজল সওদাগরের বিল্ডিংয়ের ২য় তলা। ২০১৩ সালে অভিযোগকারীকে প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন মাধ্যম তথা চুক্তিপত্র, চেক ও সংগঠনের বইয়ের মাধ্যমে প্রায় ৫৫ লাখ টাকা গ্রহণ করেন। এসব টাকার বিপরীতে লভ্যাংশ দেয়ার কথা থাকলেও তা দেননি।
দুই বছর ধরে সমিতি থেকে অভিযোগকারী অব্যাহতি এবং টাকা ফেরত চাইলে সমিতির কর্মকর্তারা কালক্ষেপন করতে থাকেন। সর্বশেষ গত ১০ সেপ্টেম্বর অভিযোগকারীসহ সদস্যদের টাকা ফেরত দেবে বলে জানান এবং মোবাইল ফোনে একটি ম্যাসেজ প্রেরণ করেন।
গত বৃহস্পতিবার সকালে অফিসে গেলে সেখানে তালাবদ্ধ এবং মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় ঘরের দরজায়ও তালা। এরপর গ্রাহকরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন।
স্থানীয়রা জানান, ওই সংগঠন বিভিন্ন গ্রাহকের কাছ থেকে দেড় কোটি টাকার মত আমানত সংগ্রহ করে। এরপর তারা লাপাত্তা হয়ে যান। বিওসি রোডস্থ বিল্ডিংয়ের দোতলায় অবস্থিত সংগঠনের কার্যালয়ে তালা দেয়া রয়েছে। স্থানীয়রা সংগঠনের কর্মকর্তাদের ব্যাপারে কোন তথ্য দিতে পারেননি। লাপাত্তা দুই ভাইয়ের বাড়িতে গিয়েও তাদের পাওয়া যায়নি। তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় এ বিষয়ে বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
গতকাল সরেজমিন দেখা যায়, বিওসি রোডস্থ বিল্ডিংয়ের দোতলায় অবস্থিত সংগঠনের কার্যালয়ে তালা দেয়া রয়েছে। স্থানীয়রা সংগঠনের কর্মকর্তাদের ব্যাপারে কোন তথ্য দিতে পারেননি। লাপাত্তা দুই ভাইয়ের বাড়িতে গিয়েও তাদের পাওয়া যায়নি। তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় এ বিষয়ে বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
পটিয়া থানার ওসি (তদন্ত) জাব্বারুল ইসলাম জানান, একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই সংগঠনের কার্যক্রমের বিষয়ে খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে। সংগঠনের সভাপতিসহ লাপাত্তা দুই ভাইকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
পটিয়া থানার ওসি বোরহান উদ্দিন জানান, সংগঠনের এক সদস্যের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনার তদন্ত চলছে। ওসি (তদন্ত) জব্বারুল ইসলাম তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।