কে হচ্ছেন ‘নৌকার মাঝি’ চলছে হিসেব-নিকেষ

168

রাউজান পৌরসভা নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই প্রার্থীর সংখ্যা কমছে। বেশ কয়েক সপ্তাহ আগে আওয়ামী লীগের ডজন খানেকের উপর প্রার্থীর নাম শোনা গেছে। কিন্তু এখন আলোচনায় আছেন মাত্র কয়েক জন। আপাতত আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে কে মনোনয়ন বা ‘নৌকা প্রতীক’ পাচ্ছেন, তা নিয়েই চলছে হিসেব-নিকেষ। তবে যোগ্যতার মাপকাঠিতে কে এগিয়ে, কে জয়লাভ করলে পৌরবাসী সর্বোচ্চ সেবা পাবেন, কার দ্বারা পৌরবাসীর আশা-আকাক্সক্ষা পূরণ হবে- এমন আলোচনা ও বিশ্লেষণ করছেন দলটির নেতাকর্মী এবং ভোটাররা।
দেখা গেছে, হাট-বাজার, অফিস-আদালত ও রাজনৈতিক অঙ্গনসহ ঘরে-বাইরে সবখানে আলোচনা আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীর মনোনয়ন নিয়ে। তবে দলীয় মনোনয়ন পেতে যারা এগিয়ে আছেন, তারা হচ্ছেন বর্তমান পৌর মেয়র দেবাশীষ পালিত, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও প্যানেল মেয়র জমির উদ্দিন পারভেজ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম চৌধুরী রানা। মূলত এ তিনজনকে নিয়েই উপজেলাজুড়ে আলোচনা হচ্ছে।
তবে পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে জমির উদ্দিন পারভেজকে দলীয় মনোনয়ন দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও রাউজানের সাংসদের কাছে দাবি করে উঠোন বৈঠক, সভা-সমাবেশ করেছে উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদ, শিক্ষক সমিতি ও শ্রমিক-চালক সমিতিসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের অর্ধ শতাধিক সংগঠন।
এদিকে মেয়র পদে নির্বাচন করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন সাবেক ছাত্রীগ নেতা আ স ম ইয়াছিন মাহমুদ। এছাড়া জাতীয় পার্টি থেকে প্রস্তুত হচ্ছেন জেলা জাতীয় পার্টির সিনিয়র সহ সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন আকবর।
নির্বাচন নিয়ে দেবাশীষ পালিত বলেন, নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর পৌরসভাকে প্রথম শ্রেণির পৌরসভা করেছি। আমার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নিজেই অবগত আছেন, তাই আগামী নির্বাচনে মনোনয়নের জন্য অন্যদের মত লবিং-তদবির করছি না। দল ও জননেত্রী শেখ হাসিনা যদি মনোনয়ন দেন, তাহলে নির্বাচন করব। অন্যথায় দল যাকে মনোনয়ন দিবে, তার জন্য কাজ করব।
জমির উদ্দিন পারভেজ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে কাজ করছি। আমি বিএনপি-জামায়াত ও সাকা চৌধুরীর প্রতিহিংসার শিকার হয়ে হত্যা-হুমকির মুখোমুখি হয়েছি বারবার। রাউজানের মাটিতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছি। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি। ১৯৯২ সালে আমাকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলেন মানবতার জননী, আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাংসদ এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর দক্ষ নেতৃত্বে উপজেলাকে আওয়ামী লীগের দুর্গে পরিণত করেছি। করোনা ভাইরাসের শুরু থেকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে ফজলে করিম চৌধুরীর নির্দেশে ও ফারাজ করিমের নেতৃত্বে আইসোলেশন স্থাপন, মৃত ব্যক্তিদের দাফন ও সৎকারে মানুষের পাশে থেকেছি। যে কারণে এলাকার লোকজনই আমাকে নির্বাচনে উৎসাহ দিচ্ছেন।
সাইফুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আমি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে সরকারের প্রতিটি এজেন্সির দেওয়া নেতা-কর্মীদের রিপোর্ট রয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, আমার রাজনৈতিক স্বচ্ছতা ও সততার বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অবগত আছেন। যেভাবে দেশব্যাপী সৎ ও সঠিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করছেন তার অংশ হিসেবে তিনি আমাকে মনোনীত করবেন। আর মনোনয়ন পেলে আমার উপর পৌরবাসীর আস্থার প্রতিদান দিতে আমি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। নির্বাচিত হলে সততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে আমি পৌরসভা ও পৌরবাসীর প্রত্যাশা পূরণে অঙ্গীকারবদ্ধ।
মেজবাহ উদ্দিন আকবর বলেন, আমার দল জাতীয় পার্টি যদি আমাকে মনোনয়ন দেয়, তাহলে অবশ্যই নির্বাচন করব। আমার প্রতি জনগণের ব্যাপক সমর্থনও রয়েছে।