কিশোর বয়সে আটক মুর্তাজার ‘মৃত্যুদন্ড দিচ্ছে না’ সৌদি আরব

28

সৌদি আরবে পাঁচ বছর আগে গ্রেপ্তার শিয়া তরুণ মুর্তাজা কুরেইরিসকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে গ্রেপ্তার হওয়ার সময় মুর্তাজার বয়স ছিল মাত্র ১৩; তার বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর বোমা হামলাসহ বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়। সৌদি আরব সংখ্যালঘু শিয়া স¤প্রদায়ের এ তরুণের মৃত্যুদন্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু করেছে- এমন খবরে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ ও সমালোচনার মধ্যে রিয়াদ তার অবস্থান জানাল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সৌদি কর্মকর্তা শনিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে ২০২২ সালের মধ্যেই মুর্তাজা ছাড়া পাচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন। গ্রেপ্তার হওয়ার পরপরই তখনকার কিশোর মুর্তাজার ১২ বছরের কারাদন্ড হয়েছিল; বয়সের কথা বিবেচনায় নিয়ে পরে ওই সাজা চার বছর কমিয়ে ৮ করা হয়। ‘তাকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হচ্ছে না,’ বলেন ওই কর্মকর্তা। সৌদি আরবের সরকারি কৌঁসুলিরা মুর্তাজার মৃত্যুদন্ড চেয়ে আবেদন করেছেন- চলতি মাসের শুরুতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিবেদনে এমনটা বলা হলে বিশ্বজুড়ে হইচই শুরু হয়। কৌঁসুলিরা মুর্তাজার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগে এনেছেন, তার অনেকগুলোই ১০ বছরের পুরনো বলেও দাবি মানবাধিকার সংগঠনগুলোর। গত বছরের অক্টোবরে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনসুলেটের ভেতর সাংবাদিক জামাল খাশুগজিকে হত্যা এবং নারী অধিকার কর্মীদের আটকের পর থেকে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে রিয়াদ বেশ চাটে আছে। শিয়া ওই তরুণের মৃত্যুদন্ড ঠেকাতে অস্ট্রিয়ার সরকার বুধবার ভিয়েনায় সৌদি অর্থায়নে পরিচালিত একটি ইসলামি কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়ার পরিকল্পনার কথা জানায়। চলতি বছরের এপ্রিলে সুন্নি সংখ্যাগরিষ্ঠ সৌদি আরব সন্ত্রাসবাদ সংক্রান্ত অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে যে ৩৭ জনের শিরশ্ছেদ করেছে তাদের বেশিরভাগই শিয়া সম্প্রদায়ের এবং অন্তত তিনজন অপ্রাপ্তবয়স্ক বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান। চলতি মাসের শুরুতে ওয়েসবাইটে দেওয়া এক বিবৃতিতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল মুর্তাজা কুরেইরিসকে নির্জন কারাপ্রকোষ্ঠে আটকে রাখা হয়েছে বলে জানায়। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাকে মারধর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ এ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনের। মুর্তাজা সৌদি আরবের শিয়া অধ্যুষিত পূর্ব প্রদেশের বাসিন্দা। বৈষম্য দূর এবং সৌদি রাজতন্ত্রের সংস্কারের দাবিতে ২০১১ সালে এ এলাকায় তুমুল বিক্ষোভ হয়েছিল। রিয়াদ ওই বিক্ষোভ ও সহিংসতার জন্য তাদের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী তেহরানকেই দায় দিয়েছিল। ইরান ও সৌদি আরবের শিয়ারা প্রথম থেকেই এ যোগসাজশের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। বৃহস্পতিবার ওমান উপসাগরে দুটি তেলের ট্যাঙ্কারে হামলার ঘটনা নিয়েও রিয়াদ ও তেহরান মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। হরমুজ উপত্যকার দক্ষিণে ওই হামলার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রও ইরানকে দায়ী করেছে। তেহরান তার বিরুদ্ধে আনা এ অভিযোগকে ‘একেবারেই ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে। বিডিনিউজ