কাস্টমস জটিলতায় পিছিয়ে পড়ছে পোশাক শিল্প

54

কাস্টম হাউজে বর্তমান জটিলতার ফলে রপ্তানিতে বিঘিœত হয়ে পোশাক শিল্প পিছিয়ে পড়ছে বলে উল্লেখ করেন বিজিএমইএ’র প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আবদুস সালাম। এ সময় তিনি পোশাক শিল্পের আমদানিকৃত পণ্য চালান ছাড়করণে বিরাজমান সমস্যা সমূহ দ্রæত সমাধানের জন্য কমিশনারকে অনুরোধ করেন। সেই সাথে সংশ্লিষ্ট সকল স্টেইক হোল্ডারদের নিয়ে একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টায় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. ফখরুল আলম এর সাথে বিজিএমইএ নেতৃবৃন্দের এক সভায় এসব কথা বলেন তিনি। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস এর সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় আবদুস সালাম বলেন, পোশাক শিল্প বর্তমানে কঠিন সময় অতিক্রম করছে। আন্তর্জাতিক বাজারে অব্যাহতভাবে পণ্যের দর পতন, অন্যদিকে বিদেশী ক্রেতার পরিদর্শন সংস্থা অপপড়ৎফ অষষরধহপব-এর সংস্কার কর্মসূচি প্রতিপালন, সর্বশেষ শ্রমিকদের মজুরী ৫১% বৃদ্ধি সহ নানাবিদ অবকাঠামোগত সমস্যায় ব্যবসা পরিচালনা ব্যয় বেড়েছে প্রায় ৩০%। এমনিতেই লিডটাইম বা উৎপাদন সময়ের জন্য আমরা প্রতিযোগী অন্যান্য দেশ থেকে পিছিয়ে আছি, তদুপরি নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে রপ্তানিতে ব্যর্থ হয়ে স্টকলট সহ অর্ডার বাতিলের কারণে রুগ্ন শিল্পে পরিণত প্রতিষ্ঠান সমূহ বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছে উদ্যোক্তাগণ। এ অবস্থায় সম্প্রতি আমদানিকৃত মালামাল ছাড়করণে কাস্টমস্ কর্তৃক কাপড় রাসায়নিক পরীক্ষাগারে পরীক্ষণ, ঋরৎংঃ অঢ়ঢ়ৎধরংবসবহঃ প্রদান, অওজ কর্তৃক ইওঘ খড়পশ/চালান আটক, ফ্রি অব কষ্ট চালান ছাড়করণে দীর্ঘসূত্রিতা, কম্পোজিট প্রতিষ্ঠানের কেমিক্যাল ছাড়করণে অনীহাসহ বিভিন্ন জটিলতায় প্রচুর সময়ক্ষেপনসহ হয়রানির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের কমিশনার মো. ফখরুল আলম, দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে তৈরি পোশাক শিল্পের অবদান রয়েছে। পোশাক শিল্পের রপ্তানিকে অগ্রাধিকার প্রদান করে কাস্টম কার্যক্রম সহজীকরণে আমদানি-রপ্তানির প্রক্রিয়া তরান্বিত করা হবে। তিনি পোশাক শিল্পের আমদানিকৃত চালান দ্রæত ছাড়করণে বিদ্যমান জটিলতা দ্রæত নিরসনসহ এবং একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা হবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন।
তিনি আরো বলেন, সৎ ব্যবসায়ীদেরকে উৎসাহ প্রদান, ব্যবসা-বান্ধব পরিবেশ কাস্টম হাউজে তৈরি করতে তিনি সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবেন এবং এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। পোশাক শিল্পের বর্তমান অগ্রযাত্রায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড তথা সরকারের নীতি সহায়তার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে কমিশনার বলেন, বিদ্যমান নীতি সহায়তার সুফল যেন সৎ ব্যবসায়ীরা লাভ করতে পারেন সেজন্য তিনি সচেষ্ট থাকবেন।
সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি এ এম চৌধুরী সেলিম, পরিচালক এ এম মাহাবুব চৌধুরী, প্রাক্তন প্রথম সহ-সভাপতি নাসিরউদ্দিন চৌধুরী, নাসিরউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, প্রাক্তন পরিচালক এমডি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, সাইফ উল্লাহ মনছুর, সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশন সভাপতি- এ কে এম আকতার হোসেন প্রমুখ।
সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পরিচালক মোহাম্মদ মুসা, মোহাম্মদ আতিক, খন্দকার বেলায়েত হোসেন, এনামুল আজিজ চৌধুরী, প্রাক্তন পরিচালক, লিয়াকত আলী চৌধুরী, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, কাস্টম কমিটির চেয়ারম্যান ইশতিয়াক রহমান, সদস্য শাহ নেওয়াজ, এস এম শফিউল করিম, এস এম আল মাসুম, আবদুল আলীম আরিফসহ বেশ কিছু পোশাক শিল্পের মালিক।
কাস্টমস এর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত কমিশনার-১ মোহাম্মদ আকবর হোসেন, অতিরিক্ত কমিশনার-২ কাজী মুহাম্মদ জিয়া উদ্দিন, যুগ্ম কমিশনার-২ সাধন কুমার কুন্ডুসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।