কাস্টমসের নিলাম শাখায় ই-অকশন পদ্ধতির যাত্রা

56

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের নিলাম শাখায় প্রথমবারের মত ই-অকশন পদ্ধতি চালু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে কাস্টমস হাউসের হল রুমে এ পদ্ধতির উদ্বোধন করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মাসুদ সাদিক। প্রথম দিনে ১৬টি লটে অনলাইনে নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর দরপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে একইদিন দুপুর ১২টা থেকে আজ বুধবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সদস্য মাসুদ সাদিক বলেন, ই-অকশন হচ্ছে আধুনিক ও যুগোপযোগী একটি পদ্ধতি। এতে কাস্টমসে অনেকটা অনিয়ম দুর্নীতি কমে আসবে। কাস্টমসের কার্যক্রমে আরো গতি আসবে। চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস ডিজিটাইজেশনের আওতায় এলে দেশ থেকে মুদ্রাপাচার রোধ করা যাবে। এর পাশাপাশি আগামীতে শতভাগ ই-পেমেন্ট পদ্ধতির চালু করা হবে।
বক্তারা বলেন, নিলাম শাখায় ই-অকশন পদ্ধতি চালু হয়েছে। এতে আগ্রহীরা যেকোনো স্থান থেকেই প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট দাখিল করে নিলামে অংশ নিতে পারবেন। এর ফলে সময় বাঁচবে আর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে। বর্তমানে কাস্টমসে জব্দকৃত পণ্যের নিলাম প্রক্রিয়া ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে হচ্ছে, যা বেশ জটিল এবং সময়সাপেক্ষ।
কাস্টম কর্মকর্তারা জানান, জব্দকৃত পণ্য নিলামে তোলার ক্ষেত্রে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। আর কিছু কিছু পণ্য নিলামে তোলার ক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হয় বলে সময়ক্ষেপণ হয়। নিলামে অংশগ্রহণকারীকে কাস্টমসের নিলাম শাখায় দৌড়ঝাঁপ করতে ভোগান্তি পোহাতে হয়। পুরো নিলাম প্রক্রিয়া অনলাইনের মাধ্যমে হলে ভোগান্তি আর থাকবে না।
জানা যায়, আমদানিকৃত পণ্য জাহাজ থেকে বন্দর ইয়ার্ডে নামার ৩০ দিনের মধ্যে পণ্য খালাস না নিলে আমদানিকারককে নোটিশ দেয় কাস্টম কর্তৃপক্ষ। এর ১৫ দিনের মধ্যে পণ্য খালাস না নিলে তা নিলামে তুলতে পারে কাস্টম কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া মিথ্যা ঘোষণা এবং ঘোষণা বহির্ভূত পণ্য জব্দের পর নিলামে তোলা যায়। এছাড়া ই-অকশনে নিলামে অংশগ্রহণকারীরা পণ্যের দর, পণ্যের তালিকা, পণ্যের ছবি দেখতে পারবে। প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত পূরণ করে ঘরে বসেই নিলামে অংশ নিতে পারবে। একইভাবে ঘরে বসেই কোন ক্যাটালগের সর্বোচ্চ বিডার কে তাও দেখতে পারবে। এতে ঝামেলা ছাড়াই নিলাম কাজ সম্পন্ন করা যাবে।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম শাখার ডেপুটি কমিশনার ফয়সাল বিন রহমান বলেন, বুধবার (আজ) থেকে ই-অকশন চালু হবে। এর আগে গত ২২ অক্টোবর ই-অকশনের এ সফটওয়ারের সিস্টেম ব্যবসায়ীদের বুঝানোর জন্য একটি সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছিল। এরপরও ব্যবসায়ীদের বুঝতে কোন সমস্যা হলে সেজন্য কাস্টমসের নিলাম শাখায় একটি হটলাইন চালু রাখা হয়েছে। যেকোনো সময় ব্যবসায়ীরা ফোন করে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে এসময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের অতিরিক্ত কমিশনার ড. আবু নূর রাশেদ আহমেদ, যুগ্ম কমিশনার মো. তাফছির উদ্দিন ভূঞা, মুহাম্মদ মাহবুব হাসান, মোহাম্মদ তোফায়েল আহমেদ, মোহাম্মদ বাপ্পী শাহরিয়ার, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি একেএম আকতার হোসেন, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক আবদুল্লাহ জহির, বিজিএমইএর পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ, বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক খায়রুল আলম সুজন, বিকেএমইএর শওকত ওসমানসহ কাস্টমস কর্মকর্তা, সিএন্ডএফ এজেন্ট, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার, বাণিজ্য সংগঠন ও ব্যাংকের প্রতিনিধিসহ ব্যবসায়ীবৃন্দ।