আগামীকাল ২৩ জুন ৭১ বছরে পা দিচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী হবে জমকালো, রঙিন ও আনন্দ-উৎসবমুখর। দলটি ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী রাঙাতে নিয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। ঘোষণা করেছে মাসব্যাপি কর্মসূচি।
আওয়ামী লীগের দফতর সূত্রে জানা গেছে, এবার রাজপথের কর্মসূচিতে বা বিভিন্ন মাধ্যমের প্রচারণায় বাড়তি আওয়াজ থাকছে না। থাকবে ব্যতিক্রমী আয়োজন। এর মধ্যে দলের প্রতিষ্ঠাকালীন কার্যালয় ঢাকার রোজ গার্ডেনকে রঙিন করে সাজানো হয়েছে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের তত্বাবধানে এই জায়গাটি সাজানো হচ্ছে। এখানে রঙিন আলোর ঝলকানির পাশপাশি সীমিত আকারে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কিছু কর্মসূচিও পালন করা হবে।
এছাড়া ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে রাজধানীজুড়ে বর্ণিল সাজ থাকবে। ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থাপনা ও প্রধান-প্রধান সড়কে আওয়ামী লীগের ঐতিহ্যকে তুলে ধরে আলোকসজ্জ্বা করা হবে। প্রতিষ্ঠার স্মৃতিবিজড়িত রোজ গার্ডেন হয়ে নবাবপুর, নবাবপুর থেকে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও রাজধানীজুড়ে ঐতিহ্যের আলোয় সজ্জ্বিত করা হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘৭০তম প্রতিষ্ঠাবাষির্কী রঙিন এবং উৎসবময় করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ৭১তম জন্মদিনকে স্মরণীয় করে রাখতে শাসক দল আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ২৪ জুন রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভার আয়োজন করবে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিন ২৩ জুন সকাল ৭ টায় বঙ্গবন্ধু ভবনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রতিষ্ঠাবাষির্কীর কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। ২৫ জুন বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। সংসদ সদস্য ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ, রফিকুল ইসলামসহ দেশের বরেণ্য ও জনপ্রিয় শিল্পীরা এতে সঙ্গীত পরিবেশন করবেন। জাতীয় সঙ্গীত ও দলীয় সঙ্গীতের পাশাপাশি স্বাধীনতা ও দেশের গান থাকবে এই আয়োজনে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ইতোমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে মাসব্যাপী কর্মসূচিও। আলোচনা সভা, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, র্যালি, প্রচার ও পুস্তিকা প্রকাশ, রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতাসহ থাকছে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন, ‘ইতোমধ্যে প্রায় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আজকের মধ্যেই আলোকসজ্জা দৃশ্যমান হবে। আজ-কালের মধ্যে বিস্তারিত কর্মসূচি গণমাধ্যমে পাঠানো হবে’।
কেন্দ্রের পাশাপাশি সমানতালে তৃণমূলেও পালিত হবে আওয়ামী লীগের এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এই উপলক্ষে ইতোমধ্যে তৃণমূলে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তূণমূলে পাঠানো ওই নির্দেশনায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে সমন্বয় করে কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি জেলা-উপজেলা এবং ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত আলাদা কর্মসূচি পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি রাজধানী ঢাকা ও এর পাশের জেলা নেতাদের সঙ্গে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে একাধিক যৌথসভা করেছে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ। একইভাবে সহযোগী সংগঠনগুলোর সঙ্গেও বৈঠক করা হয়েছে। এসব বৈঠকে সাড়ম্বরে, আনন্দ-উৎসবের সঙ্গে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এবার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর ব্যানার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ডে ব্যক্তিগত ছবি ব্যবহার না করতে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রত্যেক জেলা থেকে দু’জন করে প্রবীণ নেতাকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, পুরান ঢাকার ঋষিকেশ দাস লেনের রোজ গার্ডেনে ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘আওয়ামী মুসলিম লীগ’। পরে মুসলিম শব্দটি বাদ দিয়ে এর নাম করা হয় ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ’। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর দলটির নাম দেওয়া হয় ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ’। রোজ গার্ডেন থেকে দলীয় কার্যালয় কয়েকটি জায়গায় বদল হয়। ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা দলের সভাপতি হয়ে দেশে ফেরার পর দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় করা হয় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে। ২০১৮ সালে ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সেখানে দলের ১০তলা কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।