কালো টাকা সাদার সুযোগ সংবিধান পরিপন্থী : টিআইবি

23

প্রস্তাবিত বাজেটে কালো টাকা সাদা করার বিধানকে অসাংবিধানিক, বৈষম্যমূলক, দুর্নীতিবান্ধব বলে অভিহিত করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটির মতে, কালো টাকা সাদা করার এই বিধান প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত জিরো টলারেন্স নীতির পরিপন্থী। গতকাল শুক্রবার সংস্থাটির পরিচালক (আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন) শেখ মনজুর-ই-আলম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়েছে।
টিআইবির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বাড়ানোসহ কয়েকটি উদ্যোগ সাধুবাদযোগ্য হলেও সামগ্রিকভাবে এই বাজেটে ক্রমবর্ধমান সম্পদ ও আয়বৈষম্য নিরসনে কোনো সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব নেই। বরং অনিয়ম ও দুর্নীতির মহোৎসবের অবারিত সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। এতে সম্পদ ও আয়বৈষম্য আরও বাড়বে’।
কালো টাকা ব্যবহারের সুযোগপ্রাপ্ত খাতে দুর্নীতির একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হবে উল্লেখ করে টিআইবির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সৎপথে এসব খাতে আয় ও সম্পদ আহরণের সুযোগ ধূলিসাৎ হবে। এর প্রভাবে দুর্নীতির বিস্তৃতি ও গভীরতা আরও বাড়বে। সংকটাপন্ন ব্যাংক খাতের সংস্কারে কার্যকর কোনো পথনির্দেশ বা পরিকল্পনা না থাকায় গভীর উদ্বেগও প্রকাশ করা হয় বিবৃতিতে।
২০১৯-২০২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের প্রতিক্রিয়ায় টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সুশাসন ও ন্যায্যতা পরিপন্থী হলেও দফায় দফায় কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়ে এসেছে একের পর এক সরকার। এটি সংবিধানের ২০(২) অনুচ্ছেদের সুনির্দিষ্ট লঙ্ঘন ও দুর্নীতির প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত জিরো টলারেন্স নীতির পরিপন্থী। এরপরও এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে এই অনিয়মকে বাদ না দিয়ে বরং এর পরিধি আরও বাড়ানো হয়েছে। ফ্ল্যাটের পাশাপাশি এবার জমি কেনার বিষয়টিও যোগ করা হয়েছে। এছাড়া বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কে শিল্প স্থাপনে ১০ শতাংশ কর দিয়ে অপ্রদর্শিত আয় বিনিয়োগ করা যাবে’।
ড. ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে তৈরি পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্ট খাতে জনগণের করের টাকায় নতুন করে বাড়তি প্রণোদনার যে প্রস্তাব করা হয়েছে, তা এ খাতের শ্রমিকদের স্বার্থরক্ষায় কোনো ভূমিকা রাখবে কিনা, রাখলে কিভাবে; সে ব্যাপারে সরকারের কি বিবেচনা রয়েছে, তার ইঙ্গিত নেই’। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড (বিসিসিটিএফ)-এর জন্য কোনো বরাদ্দ না করায় হতাশা প্রকাশ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান ঝুঁকির পরিপ্রেক্ষিতে বাজেটে কোনো বরাদ্দ না রাখাটা একেবারেই অযৌক্তিক ও উল্টো পথে হাঁটার শামিল। সুতরাং বিসিসিটিএফে কমপক্ষে ১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের দাবি জানাচ্ছি’। পাশাপাশি জলবায়ু বাজেটে ঝুঁকিপূর্ণ খাত ও এলাকা চিহ্নিতকরণসহ জবাবদিহি নিশ্চিতে কৌশলগত দিকনির্দেশনারও দাবি জানান তিনি।