কালুরঘাটে দ্রুত বহুমুখী সেতু নির্মাণের দাবি

33

সরকারের উন্নয়নের তালিকায় কালুরঘাট বহুমুখী সেতুর স্থান নেই বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ও বিজিএমইএ’র প্রাক্তন প্রথম সহ সভাতি এরশাদ উল্লাহ। গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
এরশাদ উল্লাহ বলেন, বোয়ালখালী তথা দক্ষিণ চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার জেলার সাথে এক সময়ে সড়ক ও রেল যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম ছিল কালুরঘাট রেল সেতু। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত এই সেতুটির মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। কালুরঘাট সেতু দিয়ে প্রতিনিয়ত অন্তত ৩০/৪০ হাজার মানুষ পায়ে হেঁটে পার হন। তাছাড়া রাত-দিন অসংখ্য ছোট-বড় ভারী যানবাহন চলাচল করে। একমুখি সড়ক হওয়াতে ২/৩ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয় যার কারণে জনসাধারণের দৈনন্দিন কাজের ও ব্যবসা বাণিজ্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এছাড়া অসুস্থ রোগী ও গর্ভবতী মা-বোনদের দ্রুত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে যায়। সেতুটির বর্তমান অবস্থা অত্যন্ত নাজুক এবং জরাজীর্ণ। প্রতিনিয়ত ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটেই চলছে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম ৮ আসনের মহাজোটের এমপি মঈনুদ্দিন খাঁন বাদল সাহেব স্বয়ং চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময়কালে এই সেতুর ব্যাপারে আক্ষেপ করে বলেছেন আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে কালুরঘাট সেতু নির্মাণ করা না হলে মহান সংসদকে তিনি সালাম জানাবেন। উনি যেহেতু মহাজোট কর্তৃক উক্ত এলাকার সংসদ সদস্য এবং উনার গ্রামের বাড়ি বোয়ালখালী উপজেলায় তাই রাগ, অভিমান বা আক্ষেপ করা মোটেই সমীচিন নয়। কারণ উনি উনার নির্বাচনী ইশতেহারে এই কালুরঘাট সেতু নির্মানের ব্যাপারে ২০০৮ সাল এবং ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে জনগণের কাছে ওয়াদা করেছেন। জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসাবে আক্ষেপ করে সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করার ঘোষণা জনগণের সাথে প্রতারণার বহিঃপ্রকাশ। তাই দ্রুত নতুন সেতু নির্মাণ করে যোগাযোগ সচল রাখার জন্য উনার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং জনগণের কাছে দেওয়া ওয়াদা বান্তবায়ন করা প্রয়োজন ও উচিত বলে আমরা মনে করি।
তিনি বলেন, কালুরঘাট সেতু নিয়ে ইতিমধ্যে চার বার সমীক্ষা হয়েছে। কোরিয়ান কোম্পানি চূড়ান্ত সমীক্ষা করেছে। এখন কালুরঘাট সেতু (রেল সেতু) যে অবস্থায় আছে সেটার উপর দিয়ে মাত্র ২টি ট্রেন আসা যাওয়া করে। বর্তমানে সরকার দোহাজারী থেকে কক্সবাজার-টেকনাফ-ঘুমধুম পর্যন্ত রেল স¤প্রসারণের জন্য প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য কালুরঘাট রেল সেতু নতুন করে তৈরি করা ছাড়া সরকারের আর কোনো বিকল্প পথ নাই।
এরশাদ উল্লাহ বলেন, বর্তমান কালুরঘাট রেল সেতুর বয়স ৮৯ বছর। ১৯৩০ সালে নির্মিত হয় এই সেতু। বর্তমানে সেতুটি জোড়াতালি দিয়ে কোনো রকমে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। এরপরও এই সেতুতে যানবাহন ও জনগণের চলাচল বাড়ছে দিন দিন। ফলে ঝুঁকিও বাড়ছে। ২০০১ সালে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সেতুটিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করে। ফলে চরম ঝুঁকিতে যানবাহন চলাচল করছে মেয়াদোত্তীর্ণ কালুরঘাট সেতুটি দিয়ে। রেল কাম সড়ক সেতুটি এক লাইন বিশিষ্ট হওয়ায় ট্রেন আসা যাওয়ার সময় সড়কের দুই দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। এ ছাড়া দক্ষিণ দিক থেকে গাড়ি এলে উত্তর দিক বন্ধ রাখতে হয়। ফলে সেতুটির উপর নির্ভরশীল বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে প্রতিদিনই চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। তাই দ্রæত কালুরঘাট সেতু নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র সদস্য ও বোয়ালখালী থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি আজিজুল হক, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি নেতা এম এ হাশেম রাজু, মহানগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আর ইউ চৌধুরী শাহিন, চান্দগাঁও থানা বিএনপি’র সভাপতি কাউন্সিলর মোহাম্মদ আজম, দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র সদস্য শওকত উল আলম, চান্দগাঁও থানা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক শরিফ উদ্দিন খান, চান্দগাঁও ৪নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি মোহাম্মদ ইলিয়াছ, মোহরা ৫নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এম ফিরোজ খান, বোয়ালখালী থানা বিএনপি’র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ সরওয়ার আলমগীর, আবুল হাশেম, মোহাম্মদ শাহজাহান, মোহাম্মদ জাকির হোসেন, যুবদল দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আজগর, চট্টগ্রাম মহানগর যুবদল নেতা জাফর আহম্মেদ, সহ-সভাপতি শফিকুল ইসলাম শাহিন, চান্দগাঁও বিএনপি নেতা হাজী মোস্তফা কামাল উদ্দিন, হাজী আবুল বশর, মোহাম্মদ ইউসুফ, মোহাম্মদ নুরুন্নবী, মোহাম্মদ আলমগীর, ফোরকান উদ্দিন জাবেদ, যুবদল চান্দগাঁও থানার সভাপতি মোহাম্মদ ওমর ফারুক, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ওসমান গণি, নগর ছাত্রদল নেতা তারেক রহমান, আরিফুল ইসলাম, আবু সৈয়দ রাসেল, নিয়াজ মোর্শেদ খান, জামাল উদ্দিন, মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, মোহাম্মদ আলমগীর, মোহাম্মদ হোসেন টিপু, যুবদল নেতা মোহাম্মদ শাহজাহান, জয়নাল আবেদীন, মোহাম্মদ ফজল কবির, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নূহ গাজী সেলিম প্রমুখ।