কারও ফোন-অনুরোধ রাখার সুযোগ নেই

46

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেছেন, ‘কর্ণফুলী নদীর দুই পাড়ের দখল উচ্ছেদে কারও ফোন ও অনুরোধ রাখার সুযোগ নেই। আমার কাছে অনেক কল আসছে, রিকুয়েস্ট আসছে। আমি মনে করি, কোনো অনুরোধ রাখার সুযোগ নেই। এখানে দীর্ঘসময় দিয়েছি। আমার মনে হয়, আর কিছু করার নাই। আমরা সবকিছু বিবেচনা করেই কাজ শুরু করছি। কেউ প্রভাবশালী হতে পারবে না। সরকারের চেয়ে প্রভাবশালী কে? মহামান্য আদালতের রায় আছে। কোনো প্রভাবশালী নাই। প্রভাবশালী বলতে আমি কিছু বুঝি না।’
গতকাল বিকেলে সদরঘাটের কর্ণফুলী ঘাট এলাকায় নদীর দুই পাড়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পূর্ব প্রস্তুতি দেখতে গিয়ে ভূমিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এসময় চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেনও উপস্থিত ছিলেন।
ভূমিমন্ত্রী বলেন, আমি মূলত সরেজমিনে তদারকি করার জন্য এসেছি। আগামী সোমবার থেকে এখানে উচ্ছেদ শুরু হবে। হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী আরএস মোতাবেক যেভাবে বলে দেয়া হয়েছে সেভাবেই কাজ শুরু করা হবে। আমরা কয়েকটা জোনে ভাগ করেছি। প্রথম জোনে আমাদের ২০০ স্থাপনা আছে। সেখানে দশ একরের মতো জায়গা আছে।
তিনি বলেন, এখানে মূলত যারা স্থাপনা করেছেন তারা মানসিকভাবে জানেন। যে কারণে ২০১৫ সাল থেকে কোনো স্থাপনা করেননি। আমরা বারবার বলেছি যে, কাউকে স্থাপনা নির্মাণে পারমিশন দেয়া হবে না। সেটা সরকারি হোক, বেসরকারি হোক। কোনোটাই ছাড় দিব না।
ভূমিমন্ত্রী জাবেদ বলেন, এখানে অনেক অভিযোগ এসেছে। লবণের কিছু বিষয় আমার কাছে এসেছে। তারা বলছে, স্টোরেজ করবে কিভাবে। সেজন্য আবার বলছি, তাদের মূল বেসিক যে ওয়্যারহাউস সেখানে তারা রাখতে পারছে। কিন্তু তারা আস্তে আস্তে দীর্ঘসময় এসে নদীর পাড় পর্যন্ত চলে এসেছে। তাদেরকে যথেষ্ট সময় দেয়া হয়েছে। আগামী রবিবার (আজ) পর্যন্ত তাদের স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার সময় আছে। উচ্ছেদ কাজগুলো হবে ধীরে ধীরে। আমরা কয়েকটি জোন যেভাবে করছি সেভাবে পতেঙ্গা থেকে মোহরা পর্যন্ত উচ্ছেদ হবে।
কর্ণফুলী নদী চট্টগ্রামের সম্পদ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমি আমার মন্ত্রণালয় থেকে উচ্ছেদে বরাদ্দ দিয়েছি। আমি সবার সহযোগিতা চাই। এ কর্ণফুলী নদী চট্টগ্রামের একটি সম্পদ। যেভাবে হোক, দলমত সবার উর্ধ্বে উঠে এটি রক্ষা করতে হবে। কারণ, কর্ণফুলী বাঁচলেই, চট্টগ্রাম শহর বাঁচবে। না হলে কিছুই করার নাই। আপাতত আমি এতটুকুই করতে চাই। এখন কাজ দেখেন, কথা বেশি বলে লাভ নাই।
প্রভাবশালীদের নিয়ে নিজেদের অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী জাবেদ বলেন, কোনো প্রভাবশালী হবে না। সরকারের চেয়ে প্রভাবশালী কে? মহামান্য আদালতের রায় আছে। কোনো প্রভাবশালী নাই। প্রভাবশালী বলতে আমি কিছু বুঝি না।’
এসময় মন্ত্রী কর্ণফুলীর পাড়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে উচ্ছেদ অভিযানের প্রাক প্রস্তুতি সম্পর্কে ধারণা নেন। এসময় উচ্ছেদ অভিযানে সমন্বয়কের দায়িত্বে থাকা পতেঙ্গা সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাহমিলুর রহমান ভূমিমন্ত্রীকে উচ্ছেদের অগ্রগতি সম্পর্কে জানান এবং বিভিন্ন দিক ঘুরে দেখান।