কামার পাড়ায় থেমে গেছে হাতুড়ির শব্দ

40

করোনায় কর্মহীন আর অলস সময় কাটাচ্ছেন বান্দরবানের কামার সম্প্রদায়ের মানুষ। প্রতি বছর কোরবানের দিনগুলোতে দা, ছুরি, বটি তৈরিতে দিন-রাত ব্যস্ত সময় কাটাতেন কামাররা। অনেক ব্যস্ততার মধ্যে সময় কাটালেও এবারের কোরবানে তা ব্যতিক্রম। করোনার প্রভাবে তেমন অর্ডার পাননি। বেচা-বিক্রিও প্রায় বন্ধ। ফলে আর্থিক সংকটে আছেন অনেক পরিবার।বান্দরবান বাজারের বাবু কর্মকার জানান, আগের বছরে কোরবানি ঈদের ১৫ দিন আগে থেকে দিন-রাত নতুন দা, ছুরি, বটি তৈরি এবং শান দিতে ব্যস্ত সময় পার করতে হতো। দিনে আয় হতো ৩-৪ হাজার টাকা। আর এখন করোনার কারণে কোন কাজ নেই। দিনে ৩-৪শ’ টাকা আয় করতে পারি না। এছাড় আগের বছরে কর্মচারীকে ৫শ টাকা করে তাদের দৈনিক বেতন দিতাম কিন্তু এবছর করোনা ভাইরাস ও লকডাউনের কারণে কর্মচারীকে ৯শ টাকা করে দৈনিক বেতন দিতে হচ্ছে লোক সংকটের কারণে। তাই হাজার বছরের ঐতিহ্য বাঁচিয়ে রাখতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি।
তিনি আরও জানান, আমরা সরকারের কাছে আকুল আবেদন করছি, করোনার এ করুণ পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে যদি আমাদের আর্থিক সহযোগিতা অথবা প্রণোদনা প্রদান করতো, তাহলে আমরা আমাদের এ কর্মকান্ড চালিয়ে যেতে পারতাম। তা না হলে হলে আমাদের এ ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া কোন উপায় থাকবে না।
রাজু কর্মকার জানান, আগের বছরে মত এবছর বেচা-বিক্রি হচ্ছে না। ক্রেতাসাধারণ খুব কম। ছেলে মেয়ে পরিবার ও সংসার নিয়ে আমরা খুব কষ্টে আছি।
কোরবানির জন্য ছুরি কিনতে আসা ক্রেতা মোহাম্মদ আমান জানান, দীর্ঘ মাস করোনার কারণে সব মানুষ আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে মানবতার জীবন যাপন করছেন।
কামার সম্প্রদায়ের লোকজন বলেন, আগের মত আর দা, ছুরি, বটির অর্ডারও দেয় না। তাই কাজ নেই, ব্যস্ততাও নেই। এ অবস্থায় পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে দিনযাপন করতে হচ্ছে। এ শিল্পের সাথে জড়িত কামাররা সরকারের কাছে অন্তত এবছর তাদেরকে আর্থিক প্রণোদনা দিয়ে হলেও এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার দাবি জানান।