কাদিয়ানীদের ইজতেমা বন্ধ না হলে লংমার্চ

68

দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা পঞ্চগড়ে আগামী ২২, ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য কাদিয়ানীদের ইজতেমার আয়োজন ও কার্যক্রম বন্ধ করা না হলে পঞ্চগড় অভিমুখে লংমার্চসহ আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা দিতে বাধ্য হবে বলে জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সংশ্লিষ্টরা। কারণ কাদিয়ানীরা শুধু ইসলামের দুশমন নয় তারা দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের জন্যও চরম হুমকি। তাই অনতিবিলম্বে জাতীয় সংসদে আইন পাশ করে তাদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করার আহবান জানান নেতৃবৃন্দ।
গতকাল বুধবার সকাল সোয়া ১১ টায় আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসায় হেফাজত ইসলামের আমিরের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কর্মসূচি দেওয়ার জন্য প্রস্তুত জানিয়ে হেফাজত নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন। হেফাজত আমীর আল্লামা শাহ্ আহমদ শফি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আহমদিয়া মুসলিম জামাত’ তথা কাদিয়ানীদের সরকারিভাবে সংখ্যালঘু ঘোষণা করতে হবে। কাদিয়ানীরা মুসলিম নয়, তারা কাফের। তাদের অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে। আমাদের এ দাবিটি হেফাজতের ১৩ দফার মধ্যে অন্যতম। এছাড়া যারা কাদিয়ানীদের মুসলমান বলবে তারাও বেইমান। তাদের ইমান থাকবে না। তাই সরকারের প্রতি কাদিয়ানীদের ইজতেমা বন্ধ ও সরকারিভাবে কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।
হেফাজতের ইসলামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদীর সঞ্চালনায় সাংবাদিক সম্মেলনে হেফাজত আমীরের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তাঁর ছেলে হেফাজতের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা আনাস মাদানী।
এদিকে গত মঙ্গলবার রাতে পঞ্চগড়ে ঘটে যাওয়া ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক যারা দোষী-অপরাধী তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবির পাশাপাশি প্রয়োজনে তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে হবে বলেও উল্লেখ করা হয়। তাছাড়া হতাহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থাসহ আন্দোলনকারীদের হামলা-মামলা ও ভয় ভীতি প্রদর্শন বন্ধ করতে দাবি জানান হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী আগাগোড়া ইংরেজদের দালাল। সে অযু ছাড়া নামাযের ইমামতি করতো। সে বলতো, আমি নবী মুহাম্মাদ (সা.) থেকেও উত্তম। তিনি আরও বলেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ১৩ দফায়ও কাদিয়ানীদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণার জোর দাবি ছিলো। সরকারকে আমরা লিখিতভাবে তা জমা দিয়েছি। কাদীয়ানীরা বাংলাদেশকে কাদিয়ানী রাষ্ট্র বানাতে চায়। কাদিয়ানীরা শুধু ইসলামের দুশমন নয় তারা দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের জন্যও চরম হুমকি। তাই অনতিবিলম্বে তাদের তথাকথিত ইজতেমাসহ বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে এবং জাতীয় সংসদে আইন পাশ করে তাদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে। এছাড়া তাদের জন্য ইসলামী পরিভাষাসমূহ যেমন- কালিমা, নামায, রোযা, হজ্ব ও মসজিদ ইত্যাদি শব্দের ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হোক।
সংবাদ সম্মেলনে হেফাজত ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব আল্লামা লোকমান হাকিম, মাওলানা সলিম উল্ল্যাহ, মাওলানা নোমানী মেখলি, মাওলানা ইসহাক নূর, মাওলানা মঈনুদ্দিন রুহি, মাওলানা নুরুল ইসলাম, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী, মাওলানা রফিক নানুপুরী, মাওলানা নাসির উদ্দিন মুনির, মাওলানা হাফেজ ফয়সাল, মাওলানা মীর ইদ্রিস, মাওলানা আলমগীর, সরোয়ার কামাল ও মাওলানা আহসান উল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।