কাগতিয়া মাইজ পাড়ায় আমরণ অনশন কর্মসূচি ভঙ্গ করল ইউএনও

100

মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটির সভাপতি মুনির উল্লাহকে গ্রেপ্তার, কমিটির কার্যক্রম নিষিদ্ধ, অবৈধ হাজার হাজার কোটি টাকার উৎসের তদন্ত, মুনিরীয়ার সম্পদ জব্দ ও সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের চার দফা দাবি নিয়ে মুনির উল্লাহর নিজ গ্রাম কাগতিয়া মাইজ পাড়ায় আমরণ কর্মসূচির ডাক দেয় এলাকাবাসি। এতে এসব দাবি পূরনের আশ্বাস দিয়ে কর্মসূচি ভঙ্গ করেছে রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জোনায়েদ কবির সোহাগ ও ওসি মো. কেপায়েত উল্লাহ। এ সময় রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জোনায়েদ কবির সোহাগ বলেন, মুনিরীয়া ও কাগতিয়ার পীর মুনির উল্লাহর অপকর্ম নিয়ে জনগন দীর্ঘ সময় ধরে যে প্রতিবাদ করে আসছে, তা অবশ্যই আমরা অবগত আছি। সরকার অবশ্যই জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সোচ্ছার। এ বিষয়ে আমরা সরকারের উর্ধ্বতন মহলে অবগত করেছি। এ বিষয়ে রাউজান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কেপায়েত উল্লাহ বলেন, মুনির উল্লাহেক গ্রেপ্তারের ইতোমধ্য মোবাইল নাম্বারের মাধ্যমে সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে। তবে তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্নস্থানে স্থানান্তিরত হওয়ায় গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছে। তবে আশা করি অতিদ্রæত তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে। এছাড়াও তার বাড়ি ও সম্পদের বিষয়ে আদালতের মাধ্যমে তদন্ত করা হবে। এ বিষয়ে রাউজান উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জমির উদ্দিন পারভেজ বলেন, মুনিরীয়ার সদস্যরা মুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামীলীগ নেতা, আলেম ওলামা, সাংবাদিক, ভিন্ন তরিকার মানুষসহ সাধারণ লোকজনের উপর হামলা, মামলা ও হুমকির ঘটনা ঘটনায়। যার কারনে এখন সর্বস্তরের মানুষ মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকতার্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করে স্বারকলিপিও প্রধান করেছে। এ কমিটির সদস্যদের হাতে নির্মমভাবে নিহত উপজেলার হলদিয়ার কিশোর নঈম উদ্দিনের পিতা মাতা এখনো পুত্র শোকে বার বার কান্না করে। এছাড়াও মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটির সক্রিয় সদস্য রাউজানের কলপুরের মীরের বাড়ীর নওয়াজিস উকিলের বাড়ির মো.রফিকুল ইসলাম ও ছৈয়দা শামসুন নাহারের পুত্র মো. ইরফানুল ইসলাম রাজধানী ঢাকার আশুলিয়া আলোচিত জঙ্গী হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টিও এখন উপজেলার সচেতন মহলকে ভাবিয়ে তুলেছে। এসব কারনে মুনিরীয়ার কার্যক্রম নিষিদ্ধ ও মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটির সভাপতি মুনির উল্লাহকে গ্রেপ্তার করে বিচার এখন সময়ের দাবি। অনশন ভঙ্গের পূর্বে সেখানে বিশাল সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান লায়ন সাহাবুদ্দিন। রাউজান উপজেলা যুবলীগ নেতা আবদুল্লাহ আল মাসুদের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন রাউজান উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জমির উদ্দিন পারভেজ, রাউজান উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবু জাফর চৌধুরী, রাউজান পৌরসভার কাউন্সিলর জানে আলম জনি, রাউজান পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম চৌধুরী শাহাজান, ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম, ইউপি চেয়ারম্যান বিএম জসিম উদ্দিন হিরু, ইউপি চেয়ারম্যান তসলিম উদ্দিন চৌধুরী, রাউজান উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব চৌধুরী হাসান, জিল্লুর রহমান মাসুদ, রাউজান পৌরসভা আওয়ামীলীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক জসিম উদ্দিন চৌধুরী, পৌরযুবলীগ নেতা হাসান মো. রাসেল, জিয়াউল হক রোকন, আবু সালেক, মো. আসিফ, সাজ্জাদ মাহমুদ, পশ্চিম গুজরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন, মন্জুর মোরশেদ খসরু, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি ও প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক, পশ্চিম গুজরা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, আব্দুল্লাহ্ আল হেলাল, মোহাম্মদ ফোরকান, মুজিবুল হক, জামাল মেম্বার, অজিত মেম্বার, রাশেদ মেম্বার, জাহানার বেগম, সোহেল মেম্বার, রুবেল মেম্বার, মোস্তাফিজ মেম্বার, ইসমাইল মেম্বার, আবু তাহের, তৈয়ব উদ্দিন, দুলাল, সোহেল, রাকিব, কেনেডি, টনি, বদি আলম, মোহাম্মদ নুরুচ্ছাফা, মো. হারুন, রুবেল, মামুন, বেদার, নকি, আকতার, জাফর, আলমগীর, দৌলত, দেলোয়ার, জিসান, হাফিজুর রহমান, মাইজ্যা মিয়া, জয়নাব মাস্টার, ইলিয়াছ, জামাল, আমিন, ইয়াহান, ফাহিম, গিয়াস উদ্দিন, নেওয়াজ, ইয়াছিন, মনির, মোরশেদ, কামাল, মোহাম্মুদুল হক, জাহাঙ্গীর আলম, এতিমুল হক, মাহবুব আলম প্রমুখ। সভায় বক্তারা বলেন মুনিরীয়ার সন্ত্রাসীদের হাতে কাগতিয়া, মাইজপাড়ার মানুষ দীর্ঘদিন জিন্মী ছিল। এ এলাকার অনেক মানুষের জায়গা তাদের লালিত সন্ত্রাসী বাহিনী দখলে নিয়েছে। এলাকার অনেক মানুষকে মেরেছে। এখন সময় এসেছে তাদের জায়গা জমি মুনিরীয়াকে ফেরত দিতে হবে। উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জমির উদ্দিন পারভেজ বলেন ‘মুনিরীয়া যেসব অপরাধ করেছে, তার জন্য এখন তারা খেসারত দিতে হচ্ছে, তারা যদি সুষ্টু সমাধানে না আসে রাউজানের জমিতে আর মুনির উল্লাহকে নামতে দেয়া হবেনা।
অনশন ভঙ্গের পূর্বে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুনায়েদ কবীর সোহাগ ও ওসি কেপায়েত উল্লাহ বলেন ‘মুনির উল্লাহকে গ্রেপ্তারের চেষ্ঠা চলছে। প্রশাসনিক যেসব দাবি আমাদের আওতায় তা আমরা মেনে নিচ্ছি। তবে মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি নিষিদ্ধের যে দাবি করা হচ্ছে, সেটি সরকার তথা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদনের মাধ্যমে সঠিক পদ্ধতির মাধ্যমে করতে হবে।’ উল্লেখ্য যে, গত সোমবার দুপুরে এলাকার সর্বস্তুরের নারী সমাজের উদ্যোগে মুনিরীয়া তরিক্বতের নামে সন্ত্রাসী, জঙ্গী হামলা, ভ‚মি দস্যুতা এবং সাধারণ মানুষের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদে মহিলা সমাবেশে ওই চারদফা ঘোষণা দেয়া হয়। অন্যথায় আমরণ অনশনের ঘোষণা দেয়া হয়েছিল।