কাগতিয়া দরবার, মাদরাসা ও প্রাণপ্রিয় পীর সাহেবের মান-মর্যাদা রক্ষায় জীবন দিতেও প্রস্তুত তরিক্বতপন্থীরা

222

মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় কমিটির কর্মকর্তাগণ বলেছেন, গত ১৭ এপ্রিল সংঘটিত বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো রাউজান জুড়ে তরিক্বতের কার্যালয় ভাংচুর, তরিক্বতপন্থীদের বাড়িঘরে হামলা, ভাংচুর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা লুটপাট চলছে। তা কোন সভ্য সমাজে চলতে পারে না। তারা বলেন, বাংলাদেশ একটি গনতান্ত্রিক দেশ। স্বাধীনতার পর হতে এই দেশে সকল ধর্মের, সকল মতের, সকল দলের মানুষ সহাবস্থান করে আসছে। মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দেশ বিদেশে অবস্থানরত লক্ষ লক্ষ তরিক্বপন্থীকে আলোর পথ দেখিয়ে বিশেষ করে তরুণ ও যুবকদের দেশের সুনাগরিক হিসাবে গড়ে তোলার জন্য অতুলনীয় ভুমিকা পালন করছে। অথচ দুঃখের বিষয় একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে উপজীব্য করে দীর্ঘদিন ধরে রাউজান জুড়ে যে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে তাতে রাউজানের সর্বস্তরের মানুষ আজ বাকরুদ্ধ। বক্তারা আজ ২১ জুন, মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ, কেন্দ্রীয় কমিটি আয়োজিত এক জরুরী সভায় এই কথা বলেন। মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ এর আলহাজ্ব মুহাম্মদ হাসানের সভাপতিত্বে বাদ আসর নগরীর গাউছুল আজম কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত এই সভায় বক্তব্য রাখেন মুহাম্মদ জোনায়েদ, মুহাম্মদ দিদারুল আলম, মুহাম্মদ জাহেদ, মুহাম্মদ আবদুল করিম প্রমুখ।
বক্তারা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটির মত একটি হক তরিক্বতকে নিয়ে ইদানিং তরিক্বত বিদ্বেষী ও কুচক্রী মহলের বিভিন্ন সভা সমাবেশ, মানববদ্ধন, সংবাদ সম্মেলন আমাদেরকে ব্যাথিত করছে। দেশ বিদেশে অবস্থানরত মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটির সকল তরিক্বতপন্ত্রী তাদের প্রিয় কাগতিয়া দরবার, কাগতিয়া মাদরাসা ও প্রাণপ্রিয় পীর সাহেবের মান, মর্যাদা রক্ষায় জীবন দিতেও প্রস্তুত থাকবে। এই সময় উপস্থিত সকল তরিক্বতপন্থী হাত তুলে সম্মতি জানান। গত ২১ জুন দৈনিক পূর্বকোণের দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় প্রকাশিত আহলে সুন্নতের সংবাদ সম্মেলনে মুনিরীয়া যুব তবলীগ নিষিদ্ধের দাবী ও সেন্ট্রাল বয়েজ অব রাউজান দাবি অধ্যাপক আবুল মনসুরকে আইনের আওতায় আনতে হবে শীর্ষক সংবাদে উদ্বেগ প্রকাশ করে বক্তারা বলেন, মুনিরীয়ার কি অপরাধ যে, মুনিরীয়া কে নিষিদ্ধ করবে? গায়ের জোরে একটি হক তরিক্বতকে নিষিদ্ধ করা সম্ভব নয়। আপনারা আলেম মানুষ, আপনাদের প্রতি অনুরোধ থাকবে, কোন তরিক্বতকে নিয়ে পীর আঊলিয়ার এই দেশে কোন মুসলমান, কোন সুন্নি জনতা প্রাণ থাকতে আপনাদের এই বক্তব্য সর্মথন করবে না। বরং, এই বক্তব্য দিয়ে ইতো মধ্যে আপনারা চট্টগ্রামের সকল ধর্ম প্রাণ মানুষের কাছে ঘৃনার পাত্রে পরিনত হয়েছেন। আমরা ষ্পটভাবে বলতে চাই, দেশ বিদেশে ৪ লক্ষাধিক তরিক্বতপন্থীর একজনেরও প্রাণ থাকতে মুনিরীয়া তরিক্বত এবং আমাদের হুজুর কেবলাকে নিয়ে কোন ধরনের ষড়যন্ত্র সহ্য করা হবে না। অধ্যাপক আবুল মনসুরকে আইনের আওতায় আনতে হবে, সেন্ট্রাল বয়েজ অব রাউজানের এ দাবী প্রসঙ্গে মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটির কর্মকর্তারা বলেন, ড. আবুল মনসুর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সিনিয়র অধ্যাপক। ছাত্র জীবনে ছাত্রলীগ করা এ কৃতি ছাত্র জীবনের প্রতিটি পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে উর্ত্তীণ হয়েছেন। ইতিপূর্বে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির দুই-দুইবার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান সিনেট সদস্য ড. আবুল মনসুর সস্পর্কে আপনাদের চিন্তা করা উচিত, কি মায়ার টানে বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন একজন শিক্ষক মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটির সাথে নিজেকে জড়িয়েছেন। আসলে আধ্যাত্মিকতার বিষয়টিকে প্রথমে যে কোন মানুষকে মনে প্রাণে অনুধাবন করতে হবে। তারা বলেন, ড. আবুল মনসুর কিংবা মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটির কোন সদস্য জননেতা এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে নয়। রাউজানের এই অরাজকতা নিয়ে কয়েক দফা এবং বিভিন্ন মাধ্যমে আমরা মাননীয় সংসদ সদস্যের সাথে যোগাযোগ করেছি। আমরা পুলিশ প্রশাসনসহ সবাই এ বিষয়ে সার্বিক অবহিত করেছি এবং তারা সর্বাত্মক সহযোগীতার আশ্বাস প্রদান করেছে। কিন্তু কেন যে এই অরাজকতা এখনও অব্যাহত আছে তা আমাদের বোধগম্য নয়। সভায় রাউজানের এই তান্ডব বন্ধে মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটির পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং চট্টগ্রাম উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ এবং মাননীয় সংসদ সদস্যগণের নিকট ম্মারকলিপি প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।