কর্ণফুলী নদীতে ছড়িয়েছে তেল

60

কর্ণফুলী নদীর ডলফিন জেটি-৩ সংলগ্ন এলাকায় দেশ-১ নামের অয়েল ট্যাঙ্কারের সাথে সিটি-৩৪ জাহাজের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। শুক্রবার ভোর ৪টার দিকে অয়েল ট্যাংকারটি ফুটো হয়ে প্রায় ১০ টন ডিজেল নদীতে ছড়িয়ে পড়ে। গতকাল শনিবার শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত প্রায় নয় টনের মতো ছড়িয়ে পড়া তেল নদী থেকে তোলা হয়েছে বলে জানান বন্দর কর্তৃপক্ষ। তবে এখনও আশপাশের বিভিন্ন জায়গায় তেল ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বলে জানা যায়। কিন্তু পরিবেশবিদরা জোয়ারে সাগর থেকেও তেল ফিরে আসার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
জানা যায়, শুক্রবার ভোর ৪টার দিকে দেশ-১ নামের তেলবাহী অয়েল ট্যাঙ্কার জাহাজটি অবস্থান পরিবর্তনের সময় অপর জাহাজ সিটি-৩৪ এর সাথে ধাক্কা লাগে। এতে দেশ-১ ফুটো হয়ে সেখান থেকে তেল নদীতে ছড়িয়ে পড়ে। এই ট্যাঙ্কারে ১ হাজার ২০০ টন ডিজেল ছিল। পদ্মা জেটি থেকে তেল নিয়ে জাহাজটির খুলনা যাওয়ার কথা ছিল। দুর্ঘটনার পর ছড়িয়ে পড়া তেল নদী থেকে প্রায় ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ তুলে নেওয়া হয়েছে।
তবে শনিবার দুপুরের দিকে কর্ণফুলীর সাথে সংযুক্ত ৭ নম্বর খালের মুখে ছড়িয়ে পড়া তেল ভাসতে দেখা গেছে। ওই এলাকা থেকে প্রায় সাত কিলোমিটার দূরে মহেশখালের মুখে তথা ইশান মিস্ত্রির হাট সংলগ্ন খাল পাড়ের ঘাষে ও গাছপালায় তেল লেগে আছে বলে জানান স্থানীয়রা। এছাড়া পানিতে তেল ভাসতে দেখার কথাও জানান তারা। একইভাবে গতকাল শনিবার সকালের দিকে জোয়ারের সময় তেল ভেসে আসছিল। এতে জোয়ারের পানির সাথে ভেসে যাওয়া তেল কর্ণফুলী নদীর সাথে সংযুক্ত বিভিন্ন খালে ছড়িয়ে পড়ে। ভাটার সময় তেল আবার নদীর দিকে যাচ্ছে বলে জানা যায়।
এদিকে পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সংযুক্ত দাশগুপ্তা জানান, আমরা নদীতে তেল ছড়ানোর প্রমাণ পেয়েছি। আর তেল ছড়িয়ে পড়ার ছবিসহ বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করেছি। এতে পরিবেশ দূষণের চিহ্ন পাওয়া গেছে। নদীতে তেল ছড়িয়ে পড়ার ঘটনার সাথে জড়িত দুটি জাহাজের মালিকপক্ষকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তাদেরকে আজ শুনানির জন্য হাজির হতে বলা হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের ডেপুটি কনজারভেটর ক্যাপ্টেন ফরিদুল আলম বলেন, আমরা দুর্ঘটনার পরপরই তেল অপসারণের কাজ শুরু করেছি। ঘটনার সময় তেল অপসারণকারী জাহাজ বে ক্লিনার-২ কাছাকাছি ছিল। তখন জোয়ার আসার শেষ সময় ছিল। ফলে সহজেই ছড়িয়ে পড়া তেল স্ক্রিনিং পদ্ধতিতে অপসারণ সম্ভব হয়েছে। এরপর দ্রæততম সময়ে বে ক্লিনার-১ এবং সাপোর্ট ভেসেল হিসেবে কান্ডারি-৮, ১০ ও ১১ কাজ শুরু করে। শেষ ফোটা পর্যন্ত অপসারণের কাজ চলবে বলে জানান তিনি।
ক্যাপ্টেন ফরিদুল আলম বলেন, বন্দর চ্যানেলে আর কোনো ভাসমান তেল নেই। তবে জোয়ার-ভাটার কারণে কিছু তেল বিভিন্ন জেটিতে জাহাজের গায়ে হয়ত লেগে যায়।
চট্টগ্রাম বন্দর সচিব ওমর ফারুক জানান, কর্ণফুলী নদীর ডলফিন জেটি ৩ সংলগ্ন এলাকায় দেশ-১ নামের তেলবাহী অয়েল ট্যাঙ্কার জাহাজটি অবস্থান পরিবর্তনের সময় অপর জাহাজ সিটি-৩৪ এর সাথে ধাক্কা লাগে। এতে দেশ-১ ফুটো হয়ে সেখান থেকে তেল নদীতে ছড়িয়ে পড়ে। পদ্মা জেটি থেকে তেল নিয়ে জাহাজটি খুলনা যাওয়ার কথা ছিল। এ ঘটনার সাথে জড়িত জাহাজ দুটিকে আটক করা হয়েছে। কোস্টগার্ড তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।