কর্ণফুলীসহ ৫ নদী নিয়ে মহাপরিকল্পনা

74

দখল-দূষণরোধে চট্টগ্রামের কর্ণফুলীসহ তুরাগ, বালু, শতিলক্ষ্যা ও বুড়িগঙ্গা এ পাঁচটি নদী নিয়ে খসড়া মহাপরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে খসড়া মহাপরিকল্পনাটি। আশা করছি, দু-এক দিনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দেবেন। তখন এটি প্রকাশ করা হবে।
গতকাল সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দর ভবনের সম্মেলন কক্ষে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এসব কথা বলেন।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম বন্দরে আসেন তিনি। প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম বন্দরের গতিশীলতার জন্য অনেক ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বন্দর সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। বন্দর কর্তৃপক্ষ যদি সেই কাজ এগিয়ে নিতে দেখি সেটা আমাদের প্রশান্তি।
কর্ণফুলী নদী থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ থাকা প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মহাপরিকল্পনা করার জন্য অভিযান কিছুটা শ্লথ দেখা গেছে। এটা বন্ধ হয়নি। উচ্ছেদ অভিযান চলবে।
তিনি আরও বলেন, আমার কাজ আমি করবো। দেশের প্রতি দায়িত্ব আছে, এটা মনে রাখলে আমরা লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো। ২০৪১ সালে উন্নত দেশ হবে, এ লক্ষ্যে সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। এসডিজির লক্ষ্য ২০৩০ সালের আগেই পূর্ণ করবো।
চট্টগ্রাম বন্দর অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারাই হচ্ছেন বন্দরের প্রাণ। মূল কায়িক শ্রমটা আপনারা দেন। কর্মকর্তারা আদেশ দেন, কাগজে কলমে কাজ করেন। সুতরাং আপনাদের গুরুত্ব আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশি।
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে দেওয়া প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বে-টার্মিনালের কার্যক্রম থেমে নেই, যদিও এখন দৃশ্যমান হয়নি। বে টার্মিনাল বাস্তবায়ন হলে বন্দরে তথা দেশের চিত্র পাল্টে যাবে। চট্টগ্রাম বন্দরের ১৩২ বছরের পথচলায় আমরা বিশ্বের ১০০ বন্দরের তালিকায় এসেছি। আগামী শীর্ষ অবস্থানে যাওয়া আমাদের লক্ষ্য। এটি প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য। চিন্তার কোন কারণ নেই। চট্টগ্রাম বন্দর ভালোভাবে চলছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চট্টগ্রাম বন্দর প্রথম হিসেবে থাকবে। পর্যায়ক্রমে সব উদ্যোগ বাস্তবায়ন হবে।
প্রতিমিন্ত্রী বলেন, দেশের জন্য যারা শহীদ হয়েছেন তারা স্বাধীন দেশে অক্সিজেন নিতে পারেননি। আমাদের দায়িত্ব বেশি। অন্তরাত্মাকে জিজ্ঞেস করতে হবে। পরিবার, সন্তানের মতো দেশের জন্য দায়িত্ব পালন করতে হবে। দুর্বলতাকে জয় করতে হবে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন গণতন্ত্রের পূজারী। গণতন্ত্রকে ধারণ করতেন তিনি। তার উদারতার সুযোগ নিয়ে লেবাসধারীরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু চট্টগ্রামের মাটিতে ভাটিয়ারির প্যারেডে অনাচার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেছিলেন।
মতবিনিময় সভায় একাধিক সিবিএ নেতার উপস্থিতি দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, একটি অনুষ্ঠানে সিবিএর এত নেতা থাকতে হবে কেন। সবার পক্ষ থেকে কথা বলার জন্য সভাপতি সাধারণ সম্পাদক থাকলেই তো হয়। আমার কাছে অনেক দাবি-দাওয়া দেওয়া হয়েছে সেগুলো বিবেচনা করছি। এছাড়া বন্দরের কর্মীরা আমাদের সম্পদ। বন্দর চেয়ারম্যান আপনাদের যৌক্তিক দাবি পূরণে সবসময় সচেষ্ট থাকবে। আপনাদের প্রতি আমাদের নজরদারি, আন্তরিকতা রয়েছে।
মতবিনিময় সভা শেষে প্রতিমন্ত্রী চট্টগ্রাম বন্দরের চলমান দুটি বড় প্রকল্প পরিদর্শন করেন। একটি হলো পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল (পিসিটি) আর অপরটি হলো বে-টার্মিনাল। এ সময় হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল জুলফিকার আজিজসহ বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।