কর্ণফুলীর দুই পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু সোমবার

60

অবশেষে উচ্ছেদ হতে যাচ্ছে কর্ণফুলী নদীর দুই পাড়ের অবৈধ স্থাপনা। আগামী সোমবার থেকে এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন জানান, অর্থ বরাদ্দের বিষয়ে ভূমিমন্ত্রীর আশ্বাসে আমরা উচ্ছেদ অভিযানে যাচ্ছি। সোমবার থেকে কর্ণফুলী নদীর দুই পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান শুরু করা হবে। কর্ণফুলী নদীর দুই পাড়র অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে হাইকোর্টের একটি আদেশ রয়েছে। কিন্তু অর্থ বরাদ্দের অভাবে এতদিন উচ্ছেদ অভিযান শুরু করতে পারেনি জেলা প্রশাসন।
অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে কর্ণফুলী নদী রক্ষায় উচ্চ আদালতের নির্দেশনার বাস্তবায়ন না করায় গত বছরের ৩ জুলাই সিটি মেয়র, ডিসি, পুলিশ কমিশনার, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, সিডিএ চেয়ারম্যান, সচিব, সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যানসহ আটজনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রুল জারির পর জেলা প্রশাসক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নোটিশ জারি করেন। ২০১৮ সালের ২৮ জুলাই এই নোটিশ জারি করা হয়। ৯০ দিনের মধ্যে নিজ দায়িত্বে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, অপসারণ বা ভেঙে ফেলার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। এর আগে ২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট কর্ণফুলী নদীর পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।৯০ দিনের মধ্যে দুই হাজার ১৮৭টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার কথা ছিল।
২০১০ সালে কর্ণফুলী নদীর গতিপথ স্বাভাবিক রাখতে নদীর সীমানা নির্ধারণ, দখল, ভরাট ও নদীতে যেকোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার জন্য হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করা হয়। মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জনস্বার্থে এ রিট দাখিল করেন। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১০ সালের ১৮ জুলাই কর্ণফুলীর নদীর প্রকৃত সীমানা নির্ধারণ করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও ভূমি জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। আদালতের আদেশে ২০১৪ সালের ৯ নভেম্বর কর্ণফুলীর দুই পাড়ে সীমানা নির্ধারণের কাজ শুরু করে জেলা প্রশাসন। ২০১৫ সালে জরিপের কাজ শেষ করা হয়। দুই তীরে প্রায় আড়াই হাজার অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করে জেলা প্রশাসন ২০১৫ সালে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদনে সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, কন্টেইনার ডিপো স্থাপনসহ কর্ণফুলী নদীর পাড় দখলদারদের তালিকায় জনপ্রতিনিধি, শিল্পপতি ও বড় বড় ব্যবসায়ীদের নাম উল্লেখ করা হয়। উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার জন্য জেলা প্রশাসন অর্থ বরাদ্দ চেয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ে চিঠিও দেয়। কিন্তু পরবর্তীতে নানান জঠিলতায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি।