করোনা মহামারী মানুষের জীবনযাত্রার বিপন্নতা কাটিয়ে স্বাভাবিকতাই কাম্য

43

নগরবাসী মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তের চরম দুর্ভোগ চলছে। দেশে করোনা মহামারী ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। লাখের উপরে সরকারি হিসাবে আক্রান্তের সংখ্যা। সরকারি হিসাবে কোভিড-১৯ রোগে মৃতের সংখ্যাও প্রায় দেড় হাজার। এ মৃত্যুর মিছিল কোথায় গিয়ে ঠেকে জানিনা। গ্রাম এলাকার দরিদ্র মানুষের মধ্যে টেস্টের বিড়ম্বনা ও আর্থিক খরচের ভয়ের কারণে টেস্টের মুখোমুখি হচ্ছে না বলে আক্রান্তের সঠিক সংখ্যাটা সরকার পাচ্ছে না। সার্বিকভাবে বলা যায় দেশের অসংখ্য মানুষের মধ্যে করোনা ভাইরাস লুকিয়ে লুকিয়ে জীবন শক্তিকে বিনাশ করছে। অনেকে করোনায় মৃত্যুবরণ করলেও নানা রোগ শোক ও স্বাভাবিক মৃত্যু বলে চালিয়ে দিচ্ছে। তারপরও সরকারি হিসাবের চেয়ে দ্বিগুণ-তিনগুণ মানুষ কোভিড-১৯ রোগে মরছে তা অনুমান করা অমূলক নয়।
দীর্ঘদিন দেশের বিভিন্ন সেক্টর অচল হয়ে থাকার কারণে মধ্যবিত্ত এবং নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার বিশেষ করে যারা শহরে বসবাস করছে তাদের অবস্থা খুবই নাজুক। কারো চাকুরি চলে গেছে। কেউ কেউ ঠিকমতো বেতন পায়নি। ওষুধ এবং নিত্যভোজ্য পণ্যের ব্যবসায়ী ছাড়া বাকি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ও এর মধ্যে রয়েছে। বর্তমানে সাধারণ ছুটি (শিক্ষা ছাড়া) বন্ধ হওয়ার পর কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রাণ চাঞ্চল্য ফিরে আসলেও অনেকের পক্ষে তিন মাসের ইজা টানতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। শহরে অনেকে টিউশন করে পড়া লেখা চালিয়ে যেত। কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতো। টিউশন প্রাইভেট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা শহরে ঘর ভাড়া আর জীবন ধারণ খরচ মেটাতে না পেরে গ্রামে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে। নি¤œমধ্য বিত্ত পরিবারগুলো বাসাভাড়া বিদ্যুৎ বিলও অন্যান্য খরচ মিঠাতে না পেরে অনেকে গ্রামে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে। আসলে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাসহ সবকিছু কখন স্বাভাবিক হবে তা সরকারসহ কেউ বলতে পারছে না। আসলে দেশের সর্বস্তরের মানুষ বড়ো কষ্টে জীবন যাপন করছে। একে তো আয় রোজগার স্বাভাবিক নয়, তার উপর দ্রব্যমূল্য থেকে যাতায়াত খরচসহ সব কিছুর ব্যয়ভার অস্বাভাবিক। কি করবে দেশের মানুষ বুঝে উঠতে পারছে না। সবচেয়ে বড় কথা ধনীদেশগুলো করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে যে পরিমাণ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পেরেছে সে তুলনায় আমরা পেরে উঠছি না। এক্ষেত্রে আমাদের যুদ্ধ অনেকখানি ঢাল তলোয়ার হীন। তারপরও সরকারের আন্তরিকতার অভাব নেই। বড় বড় ধনীদেশগুলো যেখানে করোনা সংকটে হেস্তন্যস্ত সেখানে আমাদের দেশ এবং দেশের প্রধানমন্ত্রীর মনের জোর প্রশংসার দাবী রাখে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমাদের সকল কর্মকান্ড স্বাভাবিক করে দেশের মানুষকে স্বাভাবিক জীবন যাত্রায় ফিরিয়ে আনতে সরকারও প্রশাসনকে আরো পরিকল্পিত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।