করোনা ভাইরাস : অনন্য ভূূমিকায় কিউবা

128

চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী অনন্য ভূমিকা পালনকারী ল্যাটিন দেশ কিউবা করোনা প্রতিরোধেও অনন্য ভূমিকা পালন করছে। বিচ্ছিন্নভাবে নিজেদের কথা চিন্তা না করে তারা মানবিক বিবেচনায় সারা বিশ্বের পারস্পরিক সহযোগিতার ওপর জোর দিচ্ছে। এর অংশ হিসেবে পাঁচ করোনা আক্রান্ত যাত্রীকে নিয়ে ক্যারিবীয় সাগরে আটকে পড়া ব্রিটিশ জাহাজ এমএস ব্রায়েমারকে নিজেদের তীরে ভিড়তে দিতে রাজি হয়েছে কিউবা। ক্যারিবীয় অঞ্চলের বেশ কয়েকটি দেশ জাহাজটিকে নিজেদের তীরে নোঙর ফেলতে দিতে অস্বীকৃতি জানানোর পর হাভানা এমন সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলো।
প্রেসিডেন্ট ব্রুনো রড্রিগুয়েজ টুইটারে খবরটি জানিয়েছেন।প্রসঙ্গত এক সময়কার ‘মার্কিন প্লে-গ্রাউন্ড’ কিউবাকে রেকর্ড মানবাধিকারের দেশে পরিণত করেছিলেন ফিদেল কাস্ত্রো। মত প্রকাশের স্বাধীনতার মতো অবস্তুগত অধিকার নয়; বাস্তব খাদ্য-বস্ত্র-চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটিয়ে সামগ্রিক মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার ব্যাপার ছিল। চিকিৎসা ক্ষেত্রে কিউবা গোটা বিশ্বের জন্য অনন্য দৃষ্টান্ত। যুক্তরাষ্ট্রের মতো ‘শত্রু’ দেশসহ দুনিয়াজুড়ে নিজেদের ডাক্তার পাঠিয়ে মানবিক সেবা দিয়ে যাচ্ছে দেশটি। এবার করোনা প্রতিরোধেও সারা বিশ্বের জন্য উদাহরণ সৃষ্টি করছে কিউবা।
ব্রিটিশ কোম্পানি ফ্রেড ওলসেন ক্রুজ লাইনস এর মালিকানাধীন এমএস ব্রায়েমার জাহাজটিতে ৬৮২ জন যাত্রী ও ৩৮১ জন ক্রু রয়েছেন। এরমধ্যে চার যাত্রী ও এক ক্রু এর দেহে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। আর ঠান্ডাজনিত লক্ষণ থাকা আরও ৪০ জনকে কোয়ারেন্টিন করে রাখা হয়েছে। যাত্রীদের বেশিরভাগই ব্রিটিশ। এছাড়া কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, কলম্বিয়া, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, জাপান, নেদারল্যান্ডস, নিউ জিল্যান্ড, নরওয়ে ও সুইডেনের নাগরিক রয়েছেন। বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে নোঙর ফেলার জন্য জায়গা খুঁজে বেড়াচ্ছিলো ব্রিটিশ জাহাজ ব্রায়েমার। তবে কোনও দেশই জাহাজটিকে তীরে ভিড়তে দিচ্ছিলো না। শেষ পর্যন্ত সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে কিউবা। প্রেসিডেন্ট রড্রিগুয়েজ তার টুইটার পোস্টে লিখেছেন, ‘যুক্তরাজ্য সরকারের অনুরোধ সাপেক্ষে কয়েকজন করোনা আক্রান্তবাহী এমএস ব্রায়েমার নামক জাহাজটিকে তীরে ভিড়তে দিতে রাজি হয়েছে কিউবা। ওই জাহাজের যাত্রী ও ক্রুদের গ্রহণ করার সময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়মাবলী ও মিনসাপ কিউবা প্রটোকল অনুসরণ করা হবে।’
কিউবার কূটনৈতিক সূত্রকে উদ্ধৃত করে সিএনএন-এর হাভানা প্রতিনিধি প্যাট্রিক অপমান তার টুইটার অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, ‘কোনও দেশই জাহাজটিকে তাদের তীরে ভিড়তে দিচ্ছে না। শুধু কিউবা তাদেরকে নোঙর ফেলতে দেবে। ক্যারিবীয় দ্বীপটি এসব যাত্রীর অবস্থা বুঝতে পারছে।’ প্যাট্রিক আরও লিখেছেন, “কিউবা জানিয়েছে, ‘মানবিক দিক’ এবং ‘বৈশ্বিক মহামারি মোকাবিলায় যৌথ প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তা’ বিবেচনায় নিয়ে জাহাজটিকে নিজেদের উপকূলে নোঙর ফেলার অনুমতি দেবে হাভানা। আলোচনা এখনও চলছে, তবে যাত্রীরা বলছেন তারা যত দ্রæত সম্ভব জাহাজ থেকে নিচে নামার আশায় আছেন।”