করোনা বিপর্যয়ে খাবারের অভাবে মৃত্যু ঝুঁকিতে লাখো শিশু

37

করোনাভাইরাস বিপর্যয়ের বাস্তবতায় দুনিয়াজুড়ে ক্ষুধার্ত জনগোষ্ঠীর লাখো শিশুর মৃত্যুর আশঙ্কা জানিয়েছে জাতিসংঘ। এছাড়া বিদ্যমান বাস্তবতায় ক্রমবর্ধমান অপুষ্টির পরিণতি হবে দীর্ঘমেয়াদী। এটি একটি প্রজন্মকে বিপদের মুখে ঠেলে দেবে। সোমবার বার্তা সংস্থা এপি-কে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন সংস্থাটির কর্মকর্তারা।
জাতিসংঘ বলছে, করোনাভাইরাস এবং এ ভাইরাসকেন্দ্রিক নানা বিধিনিষেধের ফলে ক্ষুধার্ত জনগোষ্ঠী এমনিতেই খাদের কিনারায় গিয়ে পৌঁছেছে। ক্ষুদ্র খামারগুলো বাজার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং গ্রামগুলো খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এমন বাস্তবতায় করোনার প্রথম বছরেই বিশ্বজুড়ে এক লাখ ২৮ হাজার শিশু-কিশোরের মৃত্যুর আশঙ্কার কথা জানিয়েছে জাতিসংঘ।
এর আগে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডবিøউএফপি) জানায়, করোনা মহামারির কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দায় চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা মানুষের সংখ্যা এই বছর দ্বিগুণ বাড়তে পারে। গত এপ্রিলে প্রকাশিত সংস্থাটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এই বছর ১৩ কোটি মানুষ নতুন করে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় পড়তে পারে। ইতোমধ্যে এই সংকটে মানুষের সংখ্যা প্রায় ১৩ কোটি ৫০ লাখ। পর্যটন রাজস্ব হারানো, প্রবাসীদের আয় পাঠানো কমে যাওয়া এবং ভ্রমণ ও মহামারি সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিধিনিষেধের কারণে আয় কমে যাওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
সংস্থাটির প্রধান অর্থনীতিবিদ এবং গবেষণা, মূল্যায়ন ও পর্যবেক্ষণ পরিচালক আরিফ হুসেইন বলেন, ‘ইতোমধ্যে ঝুঁকির মধ্যে থাকা লাখ লাখ মানুষের জন্য কোভিড-১৯ সম্ভবত বিপর্যয়কর হতে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘দৈনিক মজুরি পেলে খাওয়া সম্ভব হয় এমন লাখ লাখ মানুষের জন্য এই মহামারি মারাত্মক বিপর্যয়কর। লকডাউন আর বিশ্ব জুড়ের চলতে থাকা মন্দায় ইতোমধ্যে তাদের সামান্য সঞ্চয় শেষ হয়েছে। বিশ্ব জুড়ে এই বিপর্যয় সামাল দিতে আমাদের অবশ্যই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।’ ডবিøউএফপি বলছে, বর্তমানে চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় থাকা মানুষগুলোর বেশিরভাগই নিম্ন এবং মধ্য আয়ের দেশগুলোর বাসিন্দা। খাদ্য সংকট বিষয়ক বৈশ্বিক রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১৯ সালে চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা সবচেয়ে বেশি মানুষ সংঘাত কবলিত দেশের। এদের সংখ্যা প্রায় সাত কোটি ৭০ লাখ। এর পরেই রয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই সংকটে পড়া মানুষ। তাদের পরিমাণ তিন কোটি ৪০ লাখ। এছাড়া অর্থনৈতিক সংকটে পড়া আরও দুই কোটি ৪০ লাখ মানুষও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় পড়েছে।