করোনা পরিস্থিতি চট্টগ্রামে সাড়ে ১৭ লাখ কৃষি পরিবারকে দুশ্চিন্তা মুক্ত করা জরুরি

50

বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলে সাড়ে ১৭ লাখ কৃষি পরিবার রয়েছে। কৃষি ক্ষেত্রে অগ্রগতির কারণে দেশ কৃষি পণ্যের উপর বিদেশ নির্ভরতা কমিয়ে আনার পক্ষে অনেকখানি এগিয়েছে। খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণতা অর্জনে কৃষিমন্ত্রণালয়ের সার্থকতা উল্লেখযোগ্য। যে সব কৃষিজাত পণ্য দেশে উৎপন্ন হচ্ছে তা আরো সম্প্রসারণের পাশাপাশি নতুন নতুন কৃষি উৎপাদনের দিকে আমাদের নজর দেওয়া জরুরি। ধান, পাট, ইক্ষু, ভুট্টা, ডাল, ফলমুল, শাকশব্জি ইত্যাদি কৃষিজাত পণ্য উৎপাদনে আরো সংহতি প্রয়োজন। এটা করতে গিয়ে চাষিদের স্বল্প-সুধে ঋণ প্রদান ও প্রযুক্তিগত সুবিধাবৃদ্ধি করাও প্রয়োজন। অনাবাদী জমিগুলোকে আবাদী করে তুলতে সরকারের কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। শিল্প ক্ষেত্রে আমাদের অগ্রগতির পাশাপাশি শিল্পের কাচামাল সরবরাহে কৃষিপণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি ছাড়া বিকল্প নেই। কৃষি ক্ষেত্রে বিদেশ নির্ভরতা কমিয়ে দেশকে সত্যিকার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ অর্জনে ভূমিকা রাখতে হবে সরকার ও কৃষিমন্ত্রণালয়কে।
বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশের কৃষি সেক্টর সংকটে নিস্পতিত। মাঠের ফসল ঘরে তোলা এবং উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত ও সরবরাহ ব্যবস্থায় কৃষি পরিবারগুলো হিমসিম খাচ্ছে। কৃষকের উৎপাদিত দ্রব্যসামগ্রী পরিবহন ও বেচাবিক্রির ক্ষেত্রে করোনা পরিস্থিতির কারণে যে সব বাধা বিপত্তি আসছে তা নিরসনে সরকার ও প্রশাসনকে এগিয়ে আসতে হবে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ জনিত কারণে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে কৃষিপরিবারের স্বাস্থ্য ও কৃষি নির্ভর অর্থনীতি। এমতাবস্থায় কৃষি পরিবারগুলোর পক্ষে দাঁড়াতে হবে সরকার, প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য সেবা-সংশ্লিষ্টদের।
একদিকে দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। অন্যদিকে দেশের শিক্ষা-কৃষি-শিল্প-বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়েছে। প্রাণ বাঁচানো যেমন প্রযোজন তেমনি প্রাণে বেঁেচ থাকলে অর্থ ও খাদ্যের স্বাভাবিকত্বও কম জরুরি নয়। তাই দেশের মানুষকে বাঁচানোর পাশাপাশি দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা এবং শিক্ষাকেও বাঁচিয়ে রাখতে সরকারসহ সকলের কর্তব্য। করোনা ভাইরাস ছড়ানোর বিষয়ে দেশের অধিকাংশ মানুষ সচেতন নয়। দেশের সকল সেক্টরে করোনা সংক্রান্ত স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির বিষয়ে আরো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে সরকারও গণপ্রশাসনকে। সরকার এবং গণপ্রশাসন একার পক্ষে গণসচেতনতা বৃদ্ধির কাজটি সুচারু রূপে আঞ্জাম দেয়া সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে দেশের সচেতন নাগরিক এবং সেচ্ছাসেবি সংঘঠনসহ এনজিও সংগঠনগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে। দেশের সচেতন মানুষেরা যার যার অবস্থান থেকে সেচ্ছায় গণসচেতনতা তৈরির কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহায়তা করলে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ হবেই।
আক্রান্ত ব্যক্তিদের জানাতে হবে সাধারণ মানুষের সান্নিধ্যে যেন তার উপস্থি না হয়। দেশ উভয় সংকটে সময় পার করছে। একদিকে করোনার প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ, অন্যদিকে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখা। একমাত্র জন-সচেতনতাই পারে দেশের এ সংকট থেকে দেশকে বাঁচাতে। ঘরে বসিয়ে ত্রাণ বিতরণ করে দীর্ঘ মেয়াদি ক্ষতির মুখোমুখি হওয়া কোন জাতির জন্য কল্যাণকর নয়। আমাদের কৌশলে করোনা ভাইরাস জনিত এ বিশ্ব পরিস্থিতির সংকটজনক অবস্থা মোকাবেলা করতে হবে। করোনা পরিস্থিতির উন্নয়নে লকডাউন যে এদেশে খুব একটা কার্যকর পদক্ষেপ নয়, তা ইতোমধ্যে প্রমাণিত। তাই জনসচেতনতা বৃদ্ধির কার্যকর ব্যবস্থা করে দেশের পরিস্থিকে স্বাভাবিক অবস্থায় অনাই হবে বৃদ্ধিমানের কাজ।