করোনা উপসর্গ নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাসহ মৃত ৩

30

সীতাকুন্ডে করোনা উপসর্গ নিয়ে মো. একরামুল ইসলাম (৪৭) নামে এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তা সীতাকুন্ড মডেল থানায় এসআই হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি পৌরসদর উত্তর বাইপাস ভূইয়া টাওয়ারে একটি ফ্যাটে একা ভাড়ায় থাকতেন। তিনি কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার আউশপাড়া কাঁঠালিয়ার মৃত শামসুল আলমের পুত্র এবং তিন পুত্র সন্তানের জনক।
গতকাল শনিবার সকালে একরামকে উদ্ধার করে সীতাকুন্ড স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।
অপরদিকে একই দিন দুপুরে উপজেলার পাক্কা রাস্তার মাথা এলাকায় অবস্থিত আফতাব অটোমোবাইল ফ্যাক্টরির শ্রমিক ও সাবেক সিবিএ নেতা শাহ আলম (৫৫) ও বিকেলে বাড়বকুন্ড হাসেমনগর এলাকায় পংকজ দাস (৫২) নামে এক সিকিউরিটি গার্ড মারা যান।
ওই সিকিউরিটি গার্ড ফেনী জেলায় অবস্থিত পিএইচপি কারখার সিকিউরিটি গার্ড ছিলেন। অসুস্থ হওয়ার পর বাড়ি আসলে শনিবার বিকালে মৃত্যুবরণ করেন। তিনজনই গত কয়েকদিন ধরে সর্দি, জ্বরে ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন বলে জানা যায়।
জানা গেছে, গত ১ জুন গায়ে জ্বর হওয়ায় এসআই একরাম থানায় না এসে ওসিকে বিষয়টি ফোনে জানান এবং বাসায় চিকিৎসা সেবা নেন। শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার সময় ফের ওসিকে ফোন দিয়ে বলেন, স্যার আমার গায়ে জ¦র কম, তবে শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেছে। ওসি সাহেব বলেন, ঠিক আছে ভাই, সকালে নমুনা পরীক্ষা করে নিও। সকালে থানার আরও যারা অসুস্থ তাদের ফোন দিয়ে ওসি নমুনা পরীক্ষা করার জন্য বলেন। একইভাবে একরামকেও একাধিকবার ফোন দেওয়া হয়। ফোন রিসিভ না হওয়ায় অন্য পুলিশ সদস্যরা বাসায় গিয়ে সাড়া-শব্দ না পেয়ে ঘরের দরজা ভেঙে দেখেন একরাম মুখে ফেনা বের হওয়া অবস্থায় পড়ে আছেন। পরে সেখান থেকে উদ্ধার করে সীতাকুন্ড স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।
বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র চট্টগ্রাম এর সাধারণ সম্পাদক ও শ্রমিক নেতা মোহাম্মদ মছিউদ দৌলা বলেন, কর্মরত অবস্থায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন শ্রমিক নেতা শাহ আলম। তাকে অন্যান্য শ্রমিকরা উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। তিনি গত কয়েকদিন ধরে করোনা উপসর্গ নিয়ে অসুস্থ ছিলেন।
উপজেলার বাড়বকুন্ড ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছাদাকাত উল্লাহ বলেন, করোনার উপসর্গ নিয়ে পংকজ দাস মারা গেছে। পংকজ এর মৃত্যুর পর আমি প্রশাসনকে বিষয়টি অবগত করলে, উনাদের উপস্থিতিতে পংকজের বাড়িসহ আশে-পাশের কয়েকটি বাড়ি আমরা লকডাউন করি।
এ বিষয়ে সীতাকুন্ড স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. নুর উদ্দিন বলেন, মৃত পুলিশ কর্মকর্তার করোনা উপসর্গ ছিল কিনা জানি না। তবে উনি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তারপরও আমরা নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠিয়েছি।
সীতাকুন্ড মডেল থানার ওসি মো. ফিরোজ হোসেন মোল্লা বলেন, গত কয়েকদিন ধরে করোনা উপসর্গ নিয়ে অসুস্থ ছিল একরাম।