করোনায় আক্রান্ত পলাতক দুই রোহিঙ্গার খোঁজ মেলেনি

30

কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা শিবিরের করোনা আক্রান্তদের নোয়াখালীর ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হতে পারে ভেবে আইসোলেশন সেন্টার থেকে পালিয়ে যাওয়া দুই রোহিঙ্গার খোঁজ এখনও মেলেনি। তবে, তারা ক্যাম্পের ভেতরে লুকিয়ে রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে ক্যাম্পে করোনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। গত ১৪ মে প্রথম একজন রোহিঙ্গা কোভিড-১৯ পজিটিভ শনাক্ত হন। এরপর থেকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে ক্যাম্প জুড়ে। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
রোহিঙ্গারা জানায়, কোভিড-১৯ এ আক্রান্তদের নোয়াখালীর ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হতে পারে অথবা আলাদা করে হাসপাতালের নির্জন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে বলে মনে করছেন অনেকেই। ফলে রোহিঙ্গা শিবিরে অনেক মানুষের জ্বর, সর্দি-কাশি দেখা দিলেও তারা ভয়ে প্রকাশ করছে না। আবার অনেকের করোনার উপসর্গ দেখা দিলেও প্রকাশ না করে দোকান থেকে ওষুধ কিনে সেবন করছেন।
ক্যাম্প করোনা উপসর্গ দেখা দিলে রোহিঙ্গাদের পরীক্ষার জন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্র মুখী করতে বিভিন্নভাবে সচেতন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) কার্যালয়ের প্রধান স্বাস্থ্য সমন্বয়কারী ডা. আবু তোহা এম আর এইচ ভূঁইয়া।
তিনি বলেন, এ পর্যন্ত ৩৬৬ জন রোহিঙ্গা করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তার মধ্যে ২৯ জন করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে। তাদের ‘আইসোলেশন সেন্টার’ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে সেখানে পালিয়ে যাওয়া দুই রোগী ঘরে রয়েছে, তাদের ফেরত আনা হবে। এখন পর্যন্ত করেনা আক্রান্ত হয়ে ৭১ বছরের এক বৃদ্ধ রোহিঙ্গা মারা গেছেন।
তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা করোনা আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা ৭৫০ জনকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। এরমধ্যে ৬১৮ জনের কোয়ারেন্টিনের সময়সীমা শেষ হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৩৬শ পরিবারের ১৬ হাজার মানুষ ক্যাম্পে লকডাউনে রয়েছে।
উখিয়ার ক্যাম্প-২ (পূর্ব) এর রোহিঙ্গা নেতা মো. নূর বলেন, ‘তার ক্যাম্পের করোনা আক্রান্ত এক যুবক আইসোলেশন সেন্টার থেকে পালিয়ে গেছে। তাকে খোঁজা হচ্ছে। সে হয়তো ক্যাম্পে লুকিয়ে রয়েছে। ক্যাম্প-১ এর আরও একজন করোনা আক্রান্ত রোগীর খোঁজ মিলছে না বলে শুনেছি।
তিনি বলেন, ক্যাম্পের অনেক রোহিঙ্গার জ্বর, সর্দি-কাশি দেখা দিলেও তারা ভয়ে প্রকাশ করছে না। অনেকে মনে করছে করোনা শনাক্ত হলে তাদের ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হবে এবং পরিবার থেকে আলাদা করে হাসপাতালে নির্জন জায়গায় রাখা হবে। কিন্তু আমরা ক্যাম্পে করোনা রোধে বিভিন্নভাবে সচেতনতা চালিয়ে যাচ্ছি আর রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রমুখী করতে তাদের বোঝানো হচ্ছে।
বর্তমানে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারের শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের বেশিরভাগই ২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযানের সময় প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে রোহিঙ্গারা গাদাগাদি করে থাকে। সেখানে করোনা রোধে সামাজিক দূরত্বসহ কোনও নির্দেশনা মানা হচ্ছে না।