করোনাভাইরাস : স্কুলে যাচ্ছে না লাখ লাখ শিশু

35

নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্বজুড়ে দশটিরও বেশি দেশের লাখ লাখ শিশুর স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে আছে। প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে চীনজুড়ে স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে, এতে দেশটির প্রায় এক কোটি ৮০ লাখ শিশু ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে সিএনএন। সাংহাইয়ের ১৮ বছর বয়সী শিক্ষার্থী হুয়াং ইয়াংয়ের স্কুল শুরু হয় বাসায় বসে ল্যাপটপ খোলার মধ্য দিয়ে। গত দুই সপ্তাহ ধরে স্কুলের ঘণ্টা ছাড়াই সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত নিজের ল্যাপটপের সামনে বসে ক্লাশ করেন হুয়াং। বাসায় স্কুলের বারান্দার মতো কোনো ব্যস্ততা নেই, ক্যান্টিনে গিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে বসে খাওয়ার ব্যাপার নেই আর ইউনিফর্মেরও কোনো বালাই নেই। বাসার পোশাক পড়েই অনলাইনে ক্লাশ করছেন হুয়াং।
শরীর চর্চা ক্লাসের শিক্ষক ক্যামেরার সমানে নিজে ব্যায়াম করে বাড়িতে বসা শিক্ষার্থীদের তা অনুসরণ করতে বলেন। শিক্ষার্থীরা ইংরেজি ক্লাশের বক্তৃতা শুনেন চুপ করে। এই ভার্চুয়াল ক্লাশরুমের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২০ থেকে ৩০ জন। কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্য শিক্ষক ডাকলে নিজের ওয়েবক্যামের ওপর স্টিকার লাগিয়ে দেন হুয়াং, যেন সহপাঠিরা তাকে দেখতে পান।
“আমরা সবাই বাসায়, তাই আমাদের কাউকেই সুন্দর দেখায় না,” বলেন তিনি। বাসা থেকে খুব একটা বের হন না হুয়াং। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধুদের সঙ্গে দেখা নাই। কিন্তু বিচ্ছিন্ন হলেও তিনি এখন বিশ্বের সবচেয়ে বৃহত্তম দূরবর্তী শিক্ষণ এক্সপেরিমেন্টের অংশ হয়ে আছেন।
চীনে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ার মুখে শিক্ষাদানের এ দূরবর্তী পদ্ধতি মাত্র শুরু হলেও হংকং, ম্যাকাও, ভিয়েতনাম, মঙ্গোলিয়া, জাপান, ইরান, পাকিস্তান, ইরাক ও ইতালির স্কুলগুলো বন্ধ রাখা হযেছে। এতে লাখ লাখ শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এর মধ্যে কয়েকটি দেশ অনলাইলন ক্লাশ চালু করার প্রস্তুতি নিলেও অপর দেশগুলোর ক্লাশ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে আছে। প্রাদুর্ভাব পরিস্থিতি নাজুক হয়ে উঠলে তারাও স্কুল বন্ধ করে দিতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্য।
করোনাভাইরাসের এই প্রাদুর্ভাবকালে অনলাইন শিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের পড়াশোনা চালিয়ে নিতে পারলেও বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের। কিছু শিক্ষার্থীর ইন্টারনেট সংযোগ দুর্বল হওয়ায় তাদের সমস্যা হচ্ছে, অন্যান্যরা দীর্ঘ সময় একা একা বসে থেকে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছে। এটা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও হুমকি হয়ে উঠছে, যা তাদের একাডেমিক ভবিষ্যৎকেও সমস্যায় ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিডিনিউজ