কমিটিতে চট্টগ্রামের যারা আসতে পারেন

149

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন ২০ ও ২১ ডিসেম্বর। সম্মেলন সফল করতে ১২টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের সমন্বয়ে গঠিত এসব কমিটি সম্মেলনের সবধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আর এই সম্মেলন প্রস্তুতির মধ্যদিয়েই কমিটিতে ঠাঁই পাওয়ার লবিং-তদবির সেরে নিচ্ছেন দলীয় নেতারা। তবে এবারের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে বড়ধরনের রদবদলের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এবার নানা কারণে সমালোচিত নেতাদের বাদ দিয়ে সাবেক ছাত্রনেতাদের স্থান দেয়ার গুঞ্জন চলছে। কমিটিতে আসতে পারে চট্টগ্রামের অনেক নেতার নামও ঘুরেফিরে আলোচনায় আসছে এবার।
দলীয় সূত্রগুরো বলছে, ওয়ান-ইলেভেনের সময় দলের অধিকাংশ নেতার কর্মকান্ডে ক্ষুব্ধ ছিলেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা। পরে ২০০৯ সালে সম্মেলনে সমালোচিতদের বাদ দিয়ে কমিটিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনেন। সাম্প্রতিক সময়ে ক্যাসিনোকান্ডসহ অনৈতিক নানা কর্মকান্ডে দলের একশ্রেণীর নেতাদের উপর ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী। যে কারণে ২০০৯ সালের পর এবারের কমিটিতেই বড় ধরনের পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। ইতোমধ্যে দলের সাধারণ সম্পাদক বিভিন্ন সভা-সমাবেশে তেমন ইঙ্গিত দিচ্ছেন। গোয়েন্দা সংস্থা ও দলীয় জরীপ পর্যালোচনা করে এবারো বর্তমান কমিটির অর্ধেক নেতাকে বাদ দেয়ার পরিকল্পনা করছে ক্ষমতাসীন দলটি।
আওয়ামী লীগের এক সভায় দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কমিটিতে পরিবর্তন আসবে। সভানেত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া সব পদেই পরিবর্তন আসতে পারে। তবে এটা বাদ পড়া না বলে দায়িত্বের পরিবর্তন হয় মাত্র। এবারের সম্মেলনে শুদ্ধি অভিযানের প্রভাব থাকবে। যারা ইতিমধ্যে বিতর্কিত তারা কমিটিতে স্থান পাবেন না। নতুন-পুরানো মিলিয়ে কমিটি হবে। অনেকের পদ পরিবর্তন হতে পারে। আসতে পারেন নতুন মুখ।’
নেতাকর্মীরা জানান, আস্থা ও ভালোবাসার মূর্তপ্রতিক হয়ে থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবারো সভাপতি হবেন। সাধারণ সম্পাদক পদে ওবায়দুল কাদের এবারো অপ্রতিদ্বন্দ্বি হলেও তাঁর অসুস্থতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীও চিন্তিত। এবার পদ হারাতে পারেন বর্তমান কমিটির অনেক নেতা। আবার নতুন করে যুক্তও হবেন কেউ কেউ। কমিটিতে চট্টগ্রামের নেতাদের আধিপত্য থাকবে এমনটাই গুঞ্জন চলছে। এরমধ্যে গত কমিটিতে থাকা তিন নেতা পদোন্নতি পেতে পারেন। উপদেষ্টা পরিষদেও চট্টগ্রাম থেকে নতুন কেউ যুক্ত হতে পারেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২০তম কাউন্সিলে ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের ঠাঁই পাওয়া ছিল চট্টগ্রামবাসীর জন্য বড় চমক। পরে প্রেসিডিয়ামে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, উপদেষ্টা পরিষদে ড. অনুপম সেন, ইসহাক মিয়া, ড. প্রণব কুমার বড়ুয়া, প্রচার সম্পাদক পদে ড. হাসান মাহমুদ, উপ-সম্পাদক পদে আমিনুল ইসলাম ও ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার ঠাঁই হয়। পরে ইসহাক মিয়ার মৃত্যু হলে পদটি শূন্য হয়। কমিটির সদস্য করা হয় রাঙামাটির দীপংকর তালুকদারকে। সে সময় কয়েক ধাপে কমিটি ঘোষণায় ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াকে প্রথমে সদস্য ও পরে উপ-দপ্তর সম্পাদক করে চট্টগ্রামবাসীর জন্য আরো একটি চমক দেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। ২১তম কাউন্সিলে এবারো ঘুরেফিরে আলোচনায় আছেন গত কমিটিতে থাকা চট্টগ্রামের এসব নেতারা। এর বাইরেও পাবর্ত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়েশা খান, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাঈনুদ্দিন হাসান চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের ছেলে মাহবুবুর রহমান রুহেল কমিটিতে আসতে পারেন। এবারই প্রথম বারের মতো কক্সবাজার থেকে একজন নেতাকে কমিটিতে ঠাঁই দেয়ার কথাও শোনা যাচ্ছে। তবে দল ও সংগঠন পৃথকের যে পরিকল্পনা আছে আওয়ামী লীগের তার বাস্তবিক রূপ দেয়া হলে হিসেব-নিকেশ পাল্টে যেতে পারে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘কমিটিতে কারা আসবে তা শুধু নেত্রীই জানেন। অত্যন্ত নান্দনিক ও জাকজমকভাবে সম্মেলনের প্রস্তুতি চলছে। প্রবীণ-নবীণের সমন্বয়ে ডায়ানামিক নেতারাই এবার নেতৃত্বে আসবে। চূড়ান্তভাবে কারা নেতৃত্বে আসছেন তার জন্য কমিটির তালিকা প্রকাশ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।’