কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে দুর্ভোগের শেষ নেই

76

ঈদের দিন বুধবার থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের উখিয়ার পালংখালী, থাইংখালী, বালুখালী, কুতুপালং, উখিয়া সদর, কোটবাজার, মরিচ্যা ও সোনারপাড়া বাজার সহ গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে ব্যাপক কাঁদা ও গর্তে পানি জমে যান ও পথচারীরা ব্যাপক দুর্ভোগের পড়েছে। অনেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সড়কের চলাচল করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পতিত হয়ে আহত ও নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার চকরিয়া থেকে উখিয়া আসার পথে একজন মটর সাইকেল আরোহী সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত সহ অসংখ্য যাত্রী আহত হয়েছে। বিশেষ করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মালবাহী ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও এনজিওদের মাত্রাতিরিক্ত যানবাহন চলাচলের কারণে কক্সবাজার টেকনাফ সড়কের এই করুন অবস্থা বলে মনে করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
তবে এসব দেখার বা বলার কেউ না থাকায় সাধারণ মানুষের মনে ক্ষোভ বাড়ছে। শনিবার (৮জুন) সকালে উখিয়ার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, উখিয়ার পালংখালী সীমান্ত ব্রিজ থেকে শুরু করে মরিচ্যা লাল ব্রিজ পর্যন্ত এই দীর্ঘ সড়কের বিভিন্ন স্থানে খানা, খন্দক, বড় বড় গর্ত ও পানি নিস্কাশন না থাকায় কাঁদা মাটি সৃষ্টি হয়ে যান চলাচলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে উখিয়া সদর স্টেশন এবং কোটবাজারের অবস্থান বেহাল। যার ফলে ঈদের ছুটিতে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের বাধার সম্মূখীন হয়ে দাড়িয়েছে। এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করার কেউ নেই বলে ক্ষোভ প্রকাশ করে রাজাপালং ইউনিয়নের হারাশিয়া এলাকার বাসিন্দা ছৈয়দ আলম জানান, সড়ক দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়নের কথা বলে দু’পাশে নালা খনন সৃষ্টি লন্ডভন্ড করে ফেলেছে। যার কারনে কাঁদা মাটি সৃষ্টি সাধারণ পথচারীকে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে।
আরো জানা যায়, এসড়ক দিয়ে গত ২০১৭ সালের আগস্টের পর থেকে প্রতিদিন শত শত মালবাহী ট্রাক, পিকাপ, কাভার্ড ভ্যান, জিপ নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাতায়াত করে আসছে। এছাড়াও বাঁশ বোঝাই ট্রাক কক্সবাজার টেকনাফ সড়ককে লন্ডভন্ড করে ফেলেছে। বিশেষ করে আইএনজিও, এনজিও এর হাজারো গাড়ি চলাচল করায় সড়কটি অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল করিম জনান, হাজার হাজার যানবাহন মাত্রাতিরিক্ত চলাচলের কারণে কক্সবাজার টেকনাফ সড়কটি মারাত্মক ঝুকিপূর্ণ হয়েছে। নিরাপদে কোথাও যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। বড় বড় খানা খন্দকের কারণে ঘটছে দুর্ঘটনা বাড়ছে। গত বৃহস্পতিবার কোটবাজার স্টেশনে সড়ক দুর্ঘটনায় পতিত হয়ে মারা গেছে চকরিয়া উপজেলার নুরুল ইসলামের ছেলে মাহামুদুর রহমানের নামে এক মটর সাইকেল আরোহী। এসময় আরো একজন গুরুতর আহত হয়েছে।
এছাড়াও প্রতিদিন এই সড়কে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়ী খাদের পড়ে অসংখ্য লোকজন আহত হয়ে বর্তমানে পঙ্গুত্ব অবস্থায় দিন যাপন করছে। সচেতন নাগরিক সমাজের অভিমত, রোহিঙ্গা ইস্যু ও মিয়ানমারের বাস্তচ্যুত জনগোষ্ঠী আশ্রয় নেওয়া কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হলেও সড়ক ও জনপদ বিভাগ দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে। এ সড়কে শত শত খানা খন্দকে ভরপুর লন্ডভন্ড হয়ে গেলেও সওজ বিভাগ সংস্কারের কোনো গরজ মনে করছে না।
বর্তমানে বলতে গেলে টেকনাফ সড়কটি মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী জানান, কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কটি সংস্কারের জন্য সরকার ইতিমধ্যে কাজ আরম্ভ করেছে। সড়কটি সংস্কার কাজ হয়ে গেলে আর কোন যানজট বা ঝুঁকি থাকবেনা। এরপরও সড়কে বর্তমানে যে সমস্ত সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে এতে তিনি যানবাহন চলাচলে সতর্কতা অবলম্বের পরামর্শ দেন।