কক্সবাজারে ‘স্ট্যাচু অব লিবার্টির আদলে’ হবে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য

54

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবর্ষ উদ্যাপনে যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যাচু অব লিবার্টির আদলে তার একটি ভাস্কর্য তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। মুজিববর্ষ উদ্যাপনে গত বৃহস্পতিবার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে এক সভায় মন্ত্রী এ তথ্য দেন বলে মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। মন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপনে বছরব্যাপী বর্ণাঢ্য কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে। এ লক্ষ্যে সকল মন্ত্রণালয়, সংস্থা এবং দেশের স্বাধীনতার স্বপক্ষের সকল শক্তি ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা নিয়ে মুজিববর্ষ উদ্যাপন করবে। সরকার এ উপলক্ষে স্ট্যাচু অব লিবার্টির আদলে জাতির পিতার প্রতিকৃতি তৈরি করবে’।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, বঙ্গবন্ধুর ওই প্রতিকৃতি তৈরির জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র ডাকা হবে। কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভের পাশে বঙ্গবন্ধুর বিশালাকার ওই প্রতিকৃতি স্থাপনের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান তারা।
মন্ত্রী মোজাম্মেল বলেন, মুজিববর্ষ উদ্যাপনের অংশ হিসেবে মিত্র বাহিনী সদস্যদের ৫০০ সন্তানের জন্য বৃত্তির ব্যবস্থা করা হবে। তাদের বাছাই করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভারতীয় হাই কমিশনকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। পাকিস্তানি শাসক ও শোষকগোষ্ঠীর কবল থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে জাতির পিতার ঋণ আমরা কোনো দিন শোধ করতে পারব না। জাতির পিতার জন্ম শতবর্ষ উদ্যাপন হবে জাতীয় জীবনের এক অনন্য সুন্দর উপলক্ষ’।
এর অংশ হিসেবে এযাবৎকালের ‘সবচেয়ে বড়’ মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশের আয়োজন করা হবে জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘বছরব্যাপী মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক জাতীয় দিবসগুলো উদ্যাপনে জাতির পিতার বর্ণাঢ্য জীবন ও কর্মকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হবে। দেশের বিভিন্ন স্থানে মুজিব মেলার আয়োজন করা হবে’।
মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব এস এম আরিফুর রহমান ছাড়াও মন্ত্রণালয়ের অন্য কর্মকর্তারা সভায় বক্তব্য দেন। খবর বিডিনিউজের
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদ্যাপনে গত ১৪ ফেব্রæয়ারি প্রধানমন্ত্রীকে সভাপতি করে ১০২ সদস্যের একটি জাতীয় কমিটি এবং জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলামকে সভাপতি করে ৬১ সদস্যের একটি বাস্তবায়ন কমিটি করে সরকার। এছাড়া জাতির জনকের জন্মশতবর্ষ সুষ্ঠুভাবে উদ্যাপনে আটটি বিষয়ভিত্তিক উপ-কমিটিও করা হয়েছে।
১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম নেন শেখ মুজিবুর রহমান। কালক্রমে তার হাত ধরেই ১৯৭১ সালে বিশ্ব মানচিত্রে নতুন দেশ হিসেবে স্থান করে নেয় বাংলাদেশ। আসছে ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মের শত বছর পূর্ণ হবে। আর ঠিক পরের বছর ২৬ মার্চ বাংলাদেশ উদ্যাপন করবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপনে ২০২০ ও ২০২১ সালকে ‘মুজিব বর্ষ’ হিসেবে ঘোষণা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতবছর এক অনুষ্ঠানে বলেন, এ আয়োজনে সকল বয়স ও শ্রেণি-পেশার মানুষকে সম্পৃক্ত করা হবে। শিশু, তরুণ, যুবক- সকলের জন্য আলাদা কর্মসূচি থাকবে। আয়োজনের বিস্তৃতি থাকবে দেশের সকল ওয়ার্ড পর্যন্ত।
সেদিন তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা রক্ত দিয়ে ঋণ শোধ করে গেছেন। তার রক্তের ঋণ আমাদের শোধ করতে হবে’।