কক্সবাজারে ‘মাছের জাদুঘর’ দেখতে পর্যটকদের ভিড়

345

বঙ্গোপসাগরে থাকা বিভিন্ন প্রজাতির মাছ সংরক্ষণে কক্সবাজারে গড়ে তোলা হয়েছে রেডিয়েন্ট ফিশ ওয়ার্ল্ড অ্যাকুরিয়াম। এতে অচেনা ও বিলুপ্তপ্রায় অনেক মাছ রয়েছে। সাগরের বিভিন্ন প্রাণী ও বিলুপ্ত মাছ সংরক্ষণের পাশাপাশি বিনোদনের জন্য জাদুঘরের আদলে এটি তৈরি হয়েছে। এতে বিচরণ করছে প্রায় ১০০ প্রজাতির মাছ। বিরল প্রজাতির মাছসহ এখানে আছে হাঙ্গর, পিরানহা, শাপলাপাতা, পানপাতা, কাছিম, কাঁকড়া, সামুদ্রিক শৈল, পিতম্বরী, সাগর কুঁচিয়া, বোল, জেলিফিস, চেওয়া, পাঙ্গাস, আউসসহ আরও অনেক মাছ ও জলজ প্রাণী।
এখানে আসার পর যে কোন ব্যক্তির কাছে মনে হবে তিনি সাগরের তলদেশে আছেন। আর চারপাশে খেলা করছে বর্ণিল প্রজাতির নানা মাছ ও সামুদ্রিক প্রাণী। এর নান্দনিক সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ সবাই। কক্সবাজার শহরের অভ্যন্তরে চিত্ত-বিনোদনের এ আন্তর্জাতিক মানের ফিশ এ্যাকুরিয়াম কমপ্লেক্সটির অবস্থান। ইতিমধ্যে এটি পর্যটকদের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে। সমুদ্র সৈকত দেখতে আসা পর্যটকদের ভ্রমণ তালিকায় এখন যোগ হচ্ছে এ এ্যাকুরিয়াম। পর্যটন শিল্প বিকাশে এটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে মনে করছেন দেশি-বিদেশি পর্যটকরা।
রেডিয়েন্ট ফিশ সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা শফিকুর রহমান চৌধুরী জানান, প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রেডিয়েন্ট ফিশ সেন্টার। এতে আছে ৮টি জোন। এর মধ্যে রয়েছে থ্রি-নাইন ডি মুভি দেখার নান্দনিক স্পেস, দেশি-বিদেশি নানা প্রজাতির পাখি, ছবি তোলার আকষর্ণীয় ডিজিটাল কালার ল্যাব, শপিং স্পেস, লাইভ ফিশ রেস্টুরেন্ট, এবাদত খানা, শিশুদের জন্য খেলাধুলার ব্যবস্থা, বিয়ে বা পার্টির করার কনফারেন্স হল ও ছাদে প্রাকৃতিক পরিবেশ উপভোগ করার পাশাপাশি আয়োজন থাকবে বার-বি কিউর। এছাড়া রয়েছে সুপরিসর পার্কিং ও লাগেজ রাখার লকার। এখানে এসে কোন বিরক্তি ছাড়াই ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা কেটে যাবে। পুরো সেন্টারে আছে নিরাপত্তা বেষ্টনি ও সিসিটিভির মাধ্যমে সর্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা। ফিশ ওয়ার্ল্ডে প্রবেশ ফি ৩০০ টাকা। এছাড়া বাচ্চাদের জন্যে আছে সুলভ মূল্যের টিকেটের ব্যবস্থা। সময় ও উপলক্ষ অনুযায়ী টিকেট মূল্যের উপর ৫-১০% ডিসকাউন্ট থাকে।
রেডিয়েন্ট ফিশ সেন্টারের জেনারেল ম্যানেজার ও ইনচার্জ নাজিম উদ্দিন জানান, কক্সবাজারে সমুদ্র সৈকতের আশপাশে দেখার মতো উল্লেখযোগ্য তেমন কিছু নেই। যেসব পর্যটন স্পট রয়েছে, তা শহর থেকে দুরে। তাই পর্যটক ও স্থানীয়দের বিনোদনের জন্য এটি গড়ে তোলা হয়েছে। প্রতিদিনই এখানে মানুষের ভিড় বাড়ছে। এছাড়া অধিকাংশ শিশু-কিশোররা সামুদ্রিক ও মিঠা পানির মাছ সম্পর্কে অজ্ঞ। তাই তাদের বিলুপ্ত হওয়া বিভিন্ন মাছ সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়। এটি কক্সবাজারবাসীর জন্য গৌরবের।
চট্টগ্রাম থেকে আসা আবদুল করিম ও শায়লা দম্পত্তি জানান, নিজেদের চোখকে বিশ^াস করতে পারছি না। সবকিছু এতো পরিপাটি, যা কখনো ভোলার নয়। যেদিকে থাকাচ্ছি, চোখ জুড়ে যায়। বেশী ভালো লেগেছে ঝর্ণা। এছাড়া শিশুদের খেলাধুলার জন্য গড়ে তোলা মিনি সেন্টারটিও অসাধারণ।