কক্সবাজারে ঘুষের টাকাসহ সার্ভেয়ার আটক

30

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ (এলএ) শাখার সার্ভেয়ার ওয়াসিমকে ঘুষের ৬ লাখ টাকাসহ আটক করেছে র‌্যাব। গতকাল বুধবার বিকেল ৫টার দিকে শহরের বাহারছড়া এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের বেশকিছু চেক ও নথিপত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। একই দিন সার্ভেয়ার ফরিদ ও ফেরদৌসের বাসায় অভিযান চালানো হয়। র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যান। র‌্যাব-১৫ কক্সবাজার ক্যাম্পের সিও মেজর মেহেদী হাসানের নেতৃত্বে কক্সবাজার শহরে পৃথকভাবে এই অভিযান চালানো হয়।
মেজর মেহেদী হাসান জানান, কক্সবাজার শহরের তারাবনিয়ারছড়া এলাকার একটি থেকে নগদ ৬ লাখ টাকাসহ জেলা প্রশাসনের ভ‚মি অধিগ্রহণ শাখার সার্ভেয়ার মোহাম্মদ ওয়াসিমকে আটক করা হয়। এছাড়া বাহারছড়া বাজার এলাকায় লালু সওদাগরের বিল্ডিংয়ে সার্ভেয়ার মোহাম্মদ ফরিদের বাসা থেকে নগদ ৬০ লাখ টাকার বেশি এবং মোহাম্মদ ফেরদৌসের বাসা থেকে ৬ লাখ টাকার বেশি উদ্ধার করা সম্ভব হলেও র‌্যাবের উপস্থিতির টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়।
ভুক্তভোগীদের মতে, এলএ অফিসের সিংহভাগ সার্ভেয়ার, কর্মকর্তা-কর্মচারি ও অফিসাররা নানা কায়দায় জিম্মি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। যার একটি অংশ এলআর ফান্ডেও যায় বলে জেলার শীর্ষ কর্মকর্তাগণের কাছেও কোন প্রতিকার মিলে না। বাধ্য হয়ে দালাল ও সার্ভেয়ারের দারস্থ হতে হয় ভ‚মি মালিকদের। ফলে ২০ শতাংশ থেকে ক্ষেত্রবিশেষে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমিশন ছেড়েই দিতে হয় জমির নিরীহ মালিকদের। অনেক ক্ষেত্রে দালালদের সাথে চিহ্নিত কয়েকজন ‘সাংবাদিক’ও এসব কমিশন বাণিজ্যে সক্রিয় ভ‚মিকা রাখেন।
মেগা-প্রকল্প চালুর পর ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ প্রমাণ হয়ে সাবেক ডিসি রুহুল আমিন, এডিসি জাফর আলমসহ বেশ কয়েকজন সার্ভেয়ার কারাভোগ করেছেন। নিকট অতীতেও বর্তমান জেলা প্রশাসকসহ বেশ কয়েকজনের নামে দুর্নীতির অভিযোগে আদালতে মামলা ফাইল করেছিলেন মহেশখালীর জনৈক ব্যক্তি। অবশ্য সন্ধ্যার দিকে আদালত তা আবার খারিজও করেছিলেন। এর
অল্পদিন না যেতেই বুধবার র‌্যাবের অভিযানে ঘুষের নগদ প্রায় কোটি টাকাসহ সার্ভেয়ার আটকের ঘটনা ঘটলো।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, শুনেছি আমার
অফিসের এক সার্ভেয়ার বেশ কিছু টাকাসহ গ্রেপ্তার হয়েছে। এটা তার ব্যক্তিগত অপরাধ। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। প্রশাসনিকভাবে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এলআর ফান্ড ও তাদের নিত্য অপরাধ সম্পর্কে অভিযোগগুলো সত্য নয় দাবি করে ডিসি আরো বলেন, চেকগুলো কনফারেন্স রুমে উপকারভোগীদের ডেকে হস্তান্তর করা হয়। সে সময় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় কোথাও হয়রানির শিকার হয় কি না। কিন্তু কেউ অভিযোগ না করলে ব্যবস্থা নেয়া যায় না এবং অপকর্মগুলোও আড়াল থাকে। কারো এমন অপরাধ সামনে আসলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পিছপা হবো না।