কক্সবাজারে আ. লীগ থেকে বহিষ্কার হচ্ছে ৭ বিদ্রোহী

50

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে আওয়ামী লীগ। দলের সিদ্ধান্ত অমান্যকারী কম পক্ষে দুইশ নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তালিকা প্রণয়নের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ২০ জুলাইয়ের পর ধাপে ধাপে এসব বিদ্রোহী প্রার্থী বরাবর সাময়িক বহিষ্কারাদেশের চিঠি প্রেরণ করবে দলটি। শাস্তির এ তালিকা থেকে বাদ যায়নি কক্সবাজার জেলাও। দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার অভিযোগে কক্সবাজার জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ৫ নেতাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। এ ধরনের একটি তালিকা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়েছে। ভাইরাল হওয়া এ তালিকা নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ৭ জন বিদ্রোহী প্রার্থী দলীয় প্রার্থীকে চ্যালেঞ্জ করলেও বহিষ্কারের তালিকায় নাম রয়েছে ৫ জনের। দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোট করে নির্বাচিত অপর দুই বিদ্রোহী প্রার্থী টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আলম ও পেকুয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের নাম বহিষ্কার তালিকায় না থাকায় এ তালিকার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ দলের নেতাকর্মীদের একটি অংশ। যদিও কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে,
যেসব বিদ্রোহী প্রার্থী মাদার সংগঠন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। যে দুইজনের ব্যাপারে কথা উঠেছে, এরা সহযোগী সংগঠনের নেতা। আগে পরে দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধাচরণকারী সবাইকে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে বলে জানান কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।
জানা যায়, দলের সিদ্ধান্ত অমান্যকারী কম পক্ষে দুইশ নেতার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। ২০ জুলাইয়ের পর ধাপে ধাপে এসব বিদ্রোহী প্রার্থী বরাবর সাময়িক বহিষ্কারাদেশের চিঠি পৌঁছে যাবে। একই সঙ্গে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবেনা তা জানতে চেয়ে পাঠানো হবে শোকজ নোটিশ। এছাড়া সহযোগী ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের যেসব নেতা উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন তাদেরও শাস্তির আওতায় আনা হবে। এদিকে গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার অভিযোগে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের ৫ জন দায়িত্বশীল নেতাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। বহিষ্কারের তালিকায় নাম রয়েছে সদর উপজেলায় আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী কায়সারুল হক জুয়েলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য নুরুল আবছার, টেকনাফে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও দলীয় প্রার্থী অধ্যাপক মুহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী বিদ্রোহী প্রার্থী, টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জাফর আলম, রামুতে দলীয় প্রার্থী রিয়াজুল আলমের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী বিদ্রোহী প্রার্থী, রামু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহেল সরওয়ার কাজল, মহেশখালীতে দলীয় প্রার্থী হোসাইন ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী বিদ্রোহী প্রার্থী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শরীফ বাদশা, চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ স¤পাদক ও দলীয় প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী বিদ্রোহী প্রার্থী, উপজেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি ফজলুল করিম সাঈদী। তবে বহিষ্কারের এ তালিকায় নাম নেই আওয়ামী লীগ মনোনীত দলীয় প্রার্থী ও পেকুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ স¤পাদক আবুল কাশেমের বিরুদ্ধ প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী বিজয়ী বিদ্রোহী প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম ও টেকনাফ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও দলের মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী বিজয়ী বিদ্রোহী প্রার্থী নুরুল আলমের। নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া এ দুই বিদ্রোহী প্রার্থীর নাম বহিষ্কারের তালিকায় না থাকায় নেতাকর্মীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের দাবী, তারা বিভিন্ন মাধ্যমে যে তালিকাটি পেয়েছেন তাতে নৌকা মার্কার প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচন করে বিজয়ী দুই বিদ্রোহী প্রার্থী টেকনাফ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নুরুল আলম ও পেকুয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের নাম নেই। তাদের নাম না থাকায় নেতাকর্মীদের মাঝে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। তাদের মতে, একসাথে সব বিদ্রোহী প্রার্থীদের বহিষ্কারাদেশ নিশ্চিত করলে সব ধরনের সংশয় ও বিভ্রান্তি কেটে যেত। কিন্তু এখন বহিষ্কার নিয়ে এক ধরনের ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা জানিয়েছেন, তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত দলের শৃংখলা ফেরাতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তিনি জানান, ধোঁয়াশার কোন কারণ নেই। দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধাচরণকারী সবাইকে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। সে হিসাবে আগে পরে ৭ বিদ্রোহী প্রার্থীই বহিষ্কার হবেন।