ওয়ান স্টপ সার্ভিস ও আন্তর্জাতিক মানের ট্রেডসেন্টার স্থাপনের দাবি

37

কক্সবাজার জেলার নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের সংবর্ধনা দিয়েছে কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি। ২৫ জানুয়ারি রাতে শহরের অভিজাত হোটেলের কনফারেন্স হলে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
‘আমাদের প্রত্যাশা দুর্নীতি ও মাদকমুক্ত কক্সবাজার’-এই প্রতিপাদ্যে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সংবর্ধিতদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) জাফর আলম এমএ, কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আশেক উল্লাহ রফিক এবং কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) সাইমুম সরওয়ার কমল।
সংবর্ধিত অতিথিরা অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছলে কক্সবাজার চেম্বারের পক্ষ থেকে তাদেরকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়। নবনির্বাচিত তিন সংসদ সদস্যকে দেয়া হয় সম্মাননা ক্রেস্ট। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চেম্বারের সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী।
তিনি উপস্থিত সাংসদদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, বহুমাত্রিক পর্যটন সেবা, নগরীর সার্বিক উন্নয়ন ও সর্বস্তরে সেবা নিশ্চিত করণসহ সরকার কর্তৃক গৃহিত উন্নয়ন প্রকল্প সমূহ বাস্তবায়ন ও উদ্যোক্তাদের সেবা প্রদানের লক্ষ্যে ‘ওয়ান স্টপ সেন্টার’ সার্ভিস চালু করা দরকার। এবিষয়ে জাতীয় সংসদে বক্তব্য উপস্থাপন করতে হবে।
চেম্বার সভাপতি উত্থাপিত দাবী বাস্তবায়নের জন্য কক্সবাজারে একটি ‘আন্তর্জাতিক মানের ট্রেডসেন্টার’ স্থাপনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, কক্সবাজারের উন্নয়নের জন্য দল মত নির্বিশেষে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। পর্যটন নগরী উন্নয়নকে আরও ত্বরান্বিত করতে হবে।
সংবর্ধিত অতিথি এমপি জাফর আলম এমএ তার বক্তব্যে বলেন, আমরা কক্সবাজারবাসী হতভাগা। বৃহত্তর সমুদ্র সৈকতের মতো সম্পদ পেয়েও কক্সবাজারের কাক্সিক্ষত উন্নয়ন করতে পারিনি। আওয়ামী লীগ ছাড়া বিগত সরকারগুলো কক্সবাজারের উন্নয়ন নিয়ে ভাবেনি। তেমন কোন দৃশ্যমান পরিকল্পনাও নেয়নি। সবাই মিলে কক্সবাজারকে গড়ে তুলতে চাই।
সংবর্ধিত অতিথি আশেক উল্লাহ রফিক এমপি বলেন, পুরো বাংলাদেশের অর্থনীতির নেতৃত্ব দিচ্ছে কক্সবাজার। কক্সবাজারকে নিয়ে সরকারের অনেক পরিকল্পনা রয়েছে। ইতিমধ্যে অনেক উন্নয়ন কাজ দৃশ্যমান হয়েছে। তিনি বলেন, কক্সবাজারের স্থানীয় লোকদের সম্পৃক্ত করে অবকাঠামোগত উন্নয়ন করতে হবে। কর্ম দিয়ে আমাদের পরিচয় আরো সমৃদ্ধ করতে চাই।
সংবর্ধনা সভার আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে এমপি সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, কক্সবাজার এখন আগের সেই কক্সবাজার নেই। এখানে সাড়ে চারশতাধিক আবাসিক হোটেল গড়ে ওঠেছে, যাতে একসঙ্গে প্রায় এক লাখ পর্যটক থাকতে পারে। কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাজ শেষের পথে। রেল লাইনের কাজ চলছে। কক্সবাজারকে শিক্ষা নগরী হিসেবে গড়ে তোলা হবে। সেজন্য ট্যুরিজম সেক্টরকে আরো উন্নত করতে হবে।
এমপি কমল দুঃখ করে বলেন, কক্সবাজারের আবাসিক হোটেলগুলোতে অধিকাংশ বহিরাগত কর্মকর্তা ও কর্মচারী। এখানে স্থানীয়দের চাকরি নগন্য। আগামী ৬ মাসের মধ্যে ৫০ শতাংশ চাকরি স্থানীয়দের দিতে হোটেল মালিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এমপি কমল। সংবর্ধিত তিন এমপিই কক্সবাজারের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্সকে শক্তিশালী করতে অনুরোধ করেন।
কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে এতে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন, কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের সিনিয়র পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান, রিহ্যাব চট্টগ্রাম অঞ্চলের সহসভাপতি আব্দুল করিম চৌধুরী, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এম রেজাউল করিম, টেকনাফ পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ ইসলাম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আব্দুর রহিম, এডভোকেট তাপস রক্ষিত, কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি মো. ফরিদ উদ্দিন খন্দকার, কক্স ন্যাশনাল হসপিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডাক্তার মো. বি আলমগীর, কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার প্রমুখ।
কবি জসিম উদ্দিন বকুল ও দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকার কক্সবাজারস্থ স্টাফ রিপোর্টার মোহাম্মদ আলী জিন্নাতের যৌথ সঞ্চালনায় এমপিদের সংবর্ধনায় উপস্থিত ছিলেন- কক্সবাজার চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ সাবেদ উর রহমান, পরিচালক আব্দুল খালেক, মোহাম্মদ ইমদাদুল হক, মোহাম্মদ শামসুল ইসলাম হেলাল (আজিম), মো. নুরুজ্জামান, এইচ এম নুরুল আলম, আবেদ আহসান সাগর, শিবলুল করিম, আজমল হুদা, হাসান মেহেদি রহমান, শামসুল আলম আজাদ, সুপ্ত ভ‚ষণ বড়–য়া, মো. আবু হানিফ, মেজবাহ উল্লাহ (ভুট্টু), মো. রেজাউল করিম রেজা, এআরএম শহিদুল ইসলাম চৌধুরী রাসেল।
এছাড়া চেম্বারের সদস্যসহ বিভিন্ন স্তরের ব্যবসায়ী, গণমাধ্যমকর্মী, সুশীল সমাজ ও প্রশাসনের ব্যক্তিরা সংবর্ধনায় উপস্থিত ছিলেন।