এ বছরই অভিন্ন নদীর চুক্তি হতে পারে : শ্রিংলা

52

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেছেন, অভিন্ন নদীগুলোর তথ্য হালনাগাদ করে তা সমন্বয়ের চেষ্টা চলছে। সম্ভবত এ বছরের মধ্যে অভিন্ন নদীগুলোর পানিবণ্টনের চুক্তি সই হবে।
গতকাল সোমবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন।
ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হিসেবে হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা এদিন সকালে প্রথমবারের মতো ঢাকায় আসেন।
গতকাল সোমবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে সাতটি আন্তঃসীমান্ত নদীর পানি প্রবাহের হালনাগাদ তথ্য আমরা বিনিময় করেছি। এই তথ্যগুলোর সমন্বয় ত্বরান্বিত করতে হবে, যাতে পানি বণ্টন চুক্তি যত দ্রুত সম্ভব চূড়ান্ত করা যায়; সম্ভব হলে এ বছরই।তবে সেজন্য পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের ঐকমত্যের প্রয়োজনীতার কথা তুলে ধরে শ্রিংলা বলেন, আমাদের রাষ্ট্র ব্যবস্থার মধ্যে কোনো চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে সবপক্ষের মতামত দরকার হয়। আপনাদের নিশ্চয়তা দিচ্ছি, যত দ্রুত সম্ভব এই বিষয়টির সমাপ্তি টানতে কাজ করছি আমরা। খবর বিডিনিউজের
তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির একটি দ্রুত ও ‘পারস্পরিক গ্রহণযোগ্য সমাধানে যেতে ভারত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা জানি, তিস্তা দুই পারের মানুষের কাছে আবেগের জায়গা। কিন্তু আমাদের সরকারের প্রতিশ্রুতির কমতি নেই।
তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি আটকে আছে ভারতে কংগ্রেসের মনোমোহন সিংয়ের আমল থেকে। ২০১৪ সালে বিজেপি ক্ষমতায় যাওয়ার পরও এর জট খুলতে পারেননি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
গত ছয় বছরে দুই দেশ ছিটমহল সমস্যার মত জটিলতার সুরাহা করতে পারলেও তিস্তা চুক্তি ঝুলে আছে মূলত পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তির কারণে। তার দাবি, তিস্তা চুক্তি হবে পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থের পরিপন্থি।
ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলে ’বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া : এ প্রমিজিং ফিউচার’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের পর এক প্রশ্নের উত্তরে শ্রিংলা বলেন, কেবল তিস্তার মধ্যে আটকে না থেকে অন্য অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনে কার্যকর উদ্যোগের দিকে যেতে চায় তার দেশ।
তিনি বলেন, ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানির পরিবেশবান্ধব, টেকসই এবং ন্যায্য বণ্টন নিশ্চিত করার মধ্যেই দুই দেশের বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থ নিহিত। আমাদের দুই পক্ষই স্বীকার করে যে, অভিন্ন নদী বিষয়ে আমাদের আরও উন্নতির সুযোগ আছে।
পানি বণ্টন নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে ২০১৯ সালের অগাস্ট থেকে নতুন করে সংলাপ শুরুর কথা তুলে ধরে শ্রিংলা বলেন, আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি, শুষ্ক মৌসুমে আমাদের পানি সঙ্কটের সমাধান খুঁজতে এবং আমাদের পানি ব্যবস্থাপনার মানোন্নয়নে আমরা বদ্ধপরিকর। আমরা চাই, এই নদীগুলো আগামী প্রজন্মের জন্যও জীবিকার উৎস হয়ে থাকুক।
বাংলাদেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নৌপথগুলোর নাব্যতা বৃদ্ধির বিষয়ে দুই দেশ একমত হয়েছে বলেও জানান শ্রিংলা।
তিনি বলেন, আমরা আশুগঞ্জ ও জকিগঞ্জের মধ্যবর্তী কুশিয়ারা এবং সিরাজগঞ্জ ও দাইখোয়ার মধ্যবর্তী যমুনা নদীর খনন কাজে একমত হয়েছি, যার এক তৃতীয়াংশ ব্যয় ভারত বহন করবে। সেই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ নৌ প্রটোকল সম্প্রসারণের পাশাপাশি আশুগঞ্জের মতো গুরুত্বপূর্ণ নদীবন্দরগুলোর উন্নয়নে যৌথভাবে কাজ করছি।