এ নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হোক

46

স্থানীয় সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। স্থানীয় সরকারের কার্যক্রমে উপজেলা পরিষদের গুরুত্ব অপরিসীম। একটি উপজেলার উন্নয়নে উপজেলা পরিষদ সার্বিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে থাকে। সামরিক শাসক হোসাইন মুহাম্মদ এরশাদের শাসনামলে উপজেলা পদ্ধতি চালু করা হয়। দেশে এ পর্যন্ত চারটি উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রশাসনের বিকেন্দ্রিকরণে হোসাইন মুহাম্মদ এরশাদের এ পদ্ধতি পরবর্তী কোন কোন সরকারের আমলে অকার্যকর হয়ে থাকলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার উপজেলার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এবার চতুর্থ উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। গত বছর থেকে দলীয়ভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন শেখ হাসিনা।
দেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরেই উপজেলা নির্বাচনের গুরুত্ব অত্যাধিক। উপজেলা নির্বাচনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করে থাকে। এতে যোগ্য প্রার্র্থীদের জনগণ বেচে নিয়ে থাকে। সৎ, যোগ্য প্রার্থী যে দলেরই হোক নির্বাচনে জনগণ তাদের সমর্থন করে। জনগণ সরাসরি সংসদ নির্বাচন, উপজেলা নির্বাচন এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পায়। জনগণ সবসময় চায় তাদের পছন্দনীয় প্রার্থীকে ভোট দিতে। এক্ষেত্রে অধিকাংশ ভোটাদের মতামতের প্রতিফলন ঘটে যে প্রার্থীর পক্ষে যে প্রার্থীই নির্বাচিত হয়। নির্বাচন কমিশন পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। পাঁচ ধাপে এবারের উপজেলা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ করা হবে বলে নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করেছে। প্রথমধাপে মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ সময় ১১ ফেব্রুয়ারি, বাছাই ১২ ফেব্রুয়ারি এবং প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৬ ফেব্রুয়ারি। দ্বিতীয় ধাপে ভোট ১৮ মার্চ, তৃতীয় ধাপে ২৪ মার্চ, চতুর্থ ধাপে ৩১ মার্চ এবং পঞ্চম ধাপে ১৮ জুন এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপে ৮৭টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে জনগণের মতের প্রতিফলন ঘটুক তা দেশের মানুষ আশা করে। নির্বাচন কমিশন ও সরকারের ভূমিকার উপর নির্ভর করে উপজেলা নির্বাচন কত টুকু নিরপেক্ষ, অবাধ ও সুষ্ঠু হয় তা।
আমরা মনে করি, উপজেলা নির্বাচনে যে দলের প্রার্থী নির্বাচিত হোক না কেন দেশের কেন্দ্রীয় শাসন ক্ষমতার পরিবর্তন হবে না। সুতরাং উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জনগণ তাদের পছন্দনীয় প্রার্থীকে নির্বাচিত করার ব্যবস্থা করা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। ইতোমধ্যে বিভিন্ন দল উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার কথা ঘোষনা করছে। নির্বাচন কমিশন সকল রাজনৈতিক দলের প্রার্থীকে নিয়ে এ নির্বাচন সম্পন্ন করতে পারলেই কমিশনের সফলতা ফুটে উঠবে। যেহেতু ধাপে ধাপে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, সেহেতু প্রথম এক দু’ধাপে বিভিন্ন দল অংশগ্রহণ না করলেও নির্বাচন কমিশন প্রথম দিকে সফল হলে পরবর্তী ধাপগুলোতে বিভিন্ন দল উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতেও পারে।
আশা করি, সরকার ও নির্বাচন কমিশন উপজেলা নির্বাচনে জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগে অবাধ সুযোগ সৃষ্টি করে দেশের গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠানিক রূপ দান করবে।